উরির পর এত বড় মাপের জঙ্গি হামলা হয়েছে কিনা সন্দেহ। বৃহস্পতিবার জম্মু শ্রীনগর হাইওয়ের ওপর সিআরপিএফ কনভয়ে যে হামলা জঙ্গিরা ঘটাল তা কার্যতই ভয়ংকর। জম্মু কাশ্মীর পুলিশের সূত্র ধরে সংবাদ সংস্থা আইএএনএস জানাচ্ছে, এদিন ২ হাজার ৫৪৭ জন সিআরপিএফ জওয়ানকে নিয়ে ৭৮টি বাসের একটি কনভয় জম্মু শ্রীনগর হাইওয়ে ধরে শ্রীনগরের দিকে আসছিল। শ্রীনগর থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরে লেথপোরা শহরের কাছে হাইওয়েতে আচমকাই কনভয়ে ঢুকে পড়ে একটি গাড়ি। বিস্ফোরক বোঝাই সেই গাড়িটি একটি বাসে এসে ধাক্কা মারে। সেখানেই বিস্ফোরণ হয়। বাসটি প্রায় পুরোটাই ধ্বংস হয়ে যায়। সঙ্গে সঙ্গে উড়ে যায় বিস্ফোরক বোঝাই গাড়িটি। ফলে একে আত্মঘাতী হামলা বলেই ব্যাখ্যা করা হচ্ছে। বিস্ফোরণের জেরে দ্বিতীয় একটি বাসেরও আংশিক ক্ষতি হয়।
এই বিস্ফোরণ ঘটানোর পর সিআরপিএফ জওয়ানদের কিংকর্তব্যবিমূঢ় পরিস্থিতি থেকে বার হওয়ার আগেই শুরু হয় জঙ্গিদের গুলিবর্ষণ। সিআরপিএফ কনভয় লক্ষ্য করে লাগাতার গুলি বর্ষণের পর সেখান থেকে চলে যায় তারা। এমনকি গ্রেনেড হামলা হয় বলেও খবর। এভাবে সিআরপিএফ-কে কার্যত অসহায় করে এমন পরিকল্পনামাফিক হামলায় রীতিমত হতবাক সিআরপিএফ আধিকারিকরা। এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ৩০ জন সিআরপিএফ জওয়ান শহিদ হয়েছেন বলে খবর। ২৫ জন আহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ১০ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। ফলে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
ঘটনাটি ঘটে বৃহস্পতিবার বিকেল সওয়া ৩টেয়। দ্রুত সেখানে হাজির হন সেনা আধিকারিকরা। সিআরপিএফ-এর আইজি হাজির হন। গোটা এলাকা ঘিরে শুরু হয় উদ্ধারকাজ। রক্তে ভেসে যাওয়া এলাকা থেকে আহত জওয়ানদের হাসপাতালে পাঠানো হয়। রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়।
এমনিতেই প্রতিকূল আবহাওয়া। এই হাইওয়েও বরফের কারণে বন্ধ থাকার পর বুধবার থেকে ফের চালু হয়েছে। রাস্তার পাশে এখনও বরফ পড়ে। রাস্তা ভিজে। ঝাপসা চারধার। আকাশ মেঘলা। দৃশ্যমানতাও তলানিতে। তারওপর হাড় কাঁপানো ঠান্ডা। এমন প্রতিকূল পরিস্থিতিতে এমন হামলায় রীতিমত নাড়িয়ে দিয়েছে গোটা দেশকে।
ঘটনার পরই সন্ত্রাসবাদী সংগঠন জইশ-ই-মহম্মদ এই ঘটনার দায় স্বীকার করে। একে আত্মঘাতী হামলা বলে দাবি করে তারা। এদিকে সিআরপিএফের তরফে এও পরিস্কার করে কিছু জানানো হয়নি। পুরো ঘটনার তদন্তের পরই বিষয়টি তাঁরা জানাতে পারবেন বলে এদিন জানান সিআরপিএফ-এর আইজি। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা