বায়ুসেনা প্রধান বীরেন্দর সিং ধানোয়া এই বছরের শেষেই নিজের পদ থেকে অবসর নেবেন। প্রায় ৪০ বছর ভারতীয় বায়ুসেনায় কাজ করেছেন তিনি। নিজেও মিগ উড়িয়েছেন। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কার্গিলে লড়াই করেছেন। সেই এয়ার চিফ মার্শাল বি এস ধানোয়া তাঁর কর্মজীবনে সোমবার সকালেই শেষবার ভারতীয় যুদ্ধবিমানে আকাশে উড়লেন। আর তাঁকে নিয়ে আকাশে ডানা মেললেন ভারতের রিয়েল লাইফ হিরো উইং কমান্ডার অভিনন্দন বর্তমান। যিনি ফের মিগ নিয়ে আকাশে উড়লেন ৬ মাস পর।
পাঠানকোট বায়ুসেনা ঘাঁটি থেকে সোমবার ২ আসন বিশিষ্ট মিগ-২১ যুদ্ধবিমানে উঠে বসেন অভিনন্দন ও ধানোয়া। পাশে এয়ার চিফ মার্শাল বসে আছেন। তাঁকে নিয়ে আকাশে ওড়ার সুযোগ। তার ওপর ফের যুদ্ধবিমান নিয়ে আকাশে ওড়া, সব মিলিয়ে অভিনন্দন বর্তমানের জন্য অবশ্যই দিনটা ছিল স্পেশাল। এদিন প্রায় ৩০ মিনিট আকাশে ওড়েন দুজনে।
বায়ুসেনা প্রধান ধানোয়া জানান, তিনি অভিনন্দনের সঙ্গে উড়তে পেরে সত্যিই আনন্দিত। তাছাড়া তিনি আরও বলেন, অভিনন্দনের সঙ্গে তাঁর অনেক মিল রয়েছে। অভিনন্দন বিমান থেকে বেরিয়ে এসে আঘাত পান। তারপর চিকিৎসা চলে। ৬ মাস পর ফের তিনি বায়ুসেনার বিমান ওড়ানোর সুযোগ পেলেন। তাঁর জীবনেও এমনই হয়েছিল ১৯৮৮ সালে। তিনিও আঘাত পান। ফলে ৯ মাস যুদ্ধবিমান চালাতে পারেননি। তাছাড়া ধানোয়া মনে করিয়ে দেন এক সময়ে অভিনন্দনের বাবাকে পাশে বসিয়ে তিনি যুদ্ধবিমান উড়িয়েছেন। আর এখন অভিনন্দনের পাশে বসে নিজে উড়লেন আকাশে। এটা তাঁর কাছে সম্মানের।
পাকিস্তানের বালাকোটে ভারতের সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের পর গত ২৭ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানের এফ-১৬ যুদ্ধবিমানকে তাড়া করে সেটিকে মিগ-২১ বাইসন বিমান দিয়ে ধ্বংস করেন অভিনন্দন। তবে এই তাড়া করে পাক বিমান ধ্বংস করতে গিয়ে অভিনন্দন পাকিস্তানের আকাশে ঢুকে পড়েন। পাক ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে মিগটিও ধ্বংস হয়। অভিনন্দন বিমান ধ্বংসের আগেই বেরিয়ে আসেন। এসে পড়েন পাকিস্তানের মাটিতে। সেখানে তাঁকে পাকড়াও করা হয়।
বিমান থেকে বার হওয়ার পর পাকিস্তানের মাটিতে আছড়ে পড়ার ফলে অভিনন্দন বর্তমান আঘাত পান। ২ দিন পর যখন তাঁকে পাকিস্তান সরকার ভারতের হাতে তুলে দেয় তখন তাঁর দেহে চোট ছিল। ফলে ভারতীয় বায়ুসেনার তরফে জানিয়ে দেওয়া হয় যুদ্ধবিমান তিনি তখন চালাতে পারবেন না। ফিট সার্টিফিকেট পেলে তারপরই ফের আকাশে ওড়ার ছাড়পত্র পাবেন তিনি। সেই ফিট সার্টিফিকেট তিনি পান গত মাসে। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা