রাহুলের মন্তব্যে রেগে আগুন গুলাম, বিস্ফোরক ট্যুইট ফিরিয়ে নিলেন কপিল
রাজস্থান ঝড় সামলে উঠতে না উঠতেই ফের নতুন ঝড়ের মুখে কংগ্রেস। এবার ঝড় উঠল একদম কংগ্রেসের অন্দরমহলে। পরতে পরতে ঘটে গেল নাটক।
নয়াদিল্লি : গত ৭ অগাস্ট কংগ্রেসের ২৩ নেতা একটি চিঠি দেন কংগ্রেস নেতৃত্বের কাছে। সহজ কথায় কংগ্রেসের অন্তর্বর্তী কার্যনির্বাহী সভাপতি সনিয়া গান্ধীকে। চিঠিতে কংগ্রেসের খোলনলচে বদলানোর দরকার বলে সোচ্চার হওয়া মন্তব্য উঠে আসে। দাবি ওঠে নেতৃত্ব পরিবর্তনের। একজন সক্রিয় এবং স্থায়ী সভাপতির দাবি ওঠে চিঠিতে। এই চিঠি যাঁরা লেখেন তাঁদের অনেকেই কংগ্রেসের পোড় খাওয়া সদস্য। যার মধ্যে ছিলেন গুলাম নবি আজাদ, কপিল সিব্বল, শশী থারুর, আনন্দ শর্মা, মণীশ তিওয়ারি, ভূপিন্দর সিং হুডা-র মত নেতারাও। এরপরই এই চিঠি ঘিরে কংগ্রেসে শোরগোল পড়ে গিয়েছিল। সোমবার কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে তা প্রকট হল।
সোমবার সকালে বৈঠক শুরুর পরই সনিয়া গান্ধী কংগ্রেসের অন্তর্বর্তী কার্যনির্বাহী সভাপতির পদ থেকে অব্যাহতি চান। ইস্তফা দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। এজন্য তিনি অবশ্য তাঁর স্বাস্থ্যের কথা তুলে ধরেন। এই পর্যন্ত সব ঠিক ছিল, কিন্তু তারপরই রাহু গান্ধী সরাসরি ওই চিঠি লেখা ২৩ জন কংগ্রেস নেতাকে আক্রমণ করে বসেন। তিনি বলেন, কংগ্রেস এখন দুর্বল অবস্থায় রয়েছে। তাই এটা এমন ধরনের চিঠি দেওয়ার সঠিক সময় নয়। যাঁরা চিঠি লিখেছেন তাঁদের অনেকে বিজেপির সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন বলেও সুর চড়ান তিনি।
রাহুলের এই বিজেপি যোগ প্রসঙ্গই কংগ্রেসের অন্দরমহলে এদিন আগুন লাগিয়ে দিয়েছে। কারণ যে ২৩ জন নেতা ওই চিঠি দেন তাঁদের অনেকেই কংগ্রেসের প্রথমসারির নেতা হিসাবে নিজেদের চুল পাকিয়ে ফেলেছেন। তাঁরা এই এত বছর পর নিজেদের সঙ্গে বিজেপি যোগের অভিযোগ মেনে নিতে পারছেন না। গুলাম নবি আজাদ তো স্পষ্ট জানিয়েই দিয়েছেন যদি তাঁর সঙ্গে বিজেপির যোগসাজশ আছে বলে প্রমাণ হয় তাহলে তিনি রাজনীতিই ছেড়ে দেবেন। অন্যদিকে কপিল সিব্বল কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য না হওয়ায় তিনি সেখানে উপস্থিত ছিলেননা। তিনি এই কথা শোনার পর ট্যুইটে এর জবাব দেন।
ট্যুইটে কপিল লেখেন ৩০ বছর ধরে কংগ্রেস করছেন। আর এখন রাহুল গান্ধী বলছেন তাঁরা বিজেপির সঙ্গে যোগ রাখছেন! রাজস্থান হাইকোর্টে কংগ্রেসকে জিতিয়ে এনেছেন, মণিপুরে বিজেপিকে আটকে দিয়ে কংগ্রেসকে ক্ষমতায় এনেছেন। গত ৩০ বছরে বিজেপির পক্ষ নিয়ে একটাও বিবৃতি তিনি দেননি। আর তাঁরা বিজেপির সঙ্গে যোগ রাখছেন! কপিল ও গুলামের বক্তব্যের পর অবশ্য কংগ্রেসে তোলপাড় সামাল দিতে কংগ্রেস মুখপাত্র রণদীপ সূরজেওয়ালা বলেন, এমন কিছুই রাহুল বলেননি। এর কিছুক্ষণ পর কপিল সিব্বল উঁচিয়ে খেলেও নিজেকে সামলে নেন। বিস্ফোরক ট্যুইটটি তিনি ফিরিয়ে নেন। জানান তিনি সূত্র মারফত খবরের ভিত্তিতে একথা লিখেছিলেন।
এদিন পরিকল্পিতভাবেই হোক বা বেফাঁস মন্তব্য হিসাবে রাহুল যা বললেন তাতে কিন্তু কংগ্রেসের স্তম্ভ ধরেই নাড়িয়ে দিয়েছেন তিনি। এতে কংগ্রেসের আদৌ ভাল হবে তো? এই আগুনে জল ঢালা সত্যিই সম্ভব হবে তো? সে প্রশ্ন কিন্তু তুলছেন বিশেষজ্ঞেরা। নাকি রাহুল পরিকল্পিতভাবেই কংগ্রেসের মাথায় এবার তারুণ্যের জয়জয়কার চাইছেন? ফলে এটা পরিকল্পিত বয়ান! — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা