চলতি আইপিএলে সবচেয়ে টানটান ম্যাচের উত্তেজনা তারিয়ে উপভোগ করলেন ভারতবাসী। খেলাটা মুম্বই ও গুজরাট লায়ন্সের মধ্যে হলেও অনেক ক্রিকেটপ্রেমীই রুদ্ধশ্বাসে টিভির সামনে বসে থেকেছেন। খেলাকে যে কতটা উত্তেজক অবস্থায় নিয়ে যাওয়া যায় তা দেখিয়ে দিল এই ২ দল। এদিন প্রথমে ব্যাট করে গুজরাট তোলে ১৫৩ রান। ঘরের মাঠে গুজরাটের এমন অল্প রানের ইনিংসের পর অনেক গুজরাট সমর্থকই ধরে নিয়েছিলেন যে দল হারছে। কারণ সামনের দলটা মুম্বই। মুম্বই ব্যাট করতে নেমে ওপেনার পার্থিবের দুরন্ত ব্যাটিংয়ে সেই সম্ভাবনাকে সত্যিও করে তুলেছিল। কিন্তু তারপর থেকেই শুরু হল গুজরাটের ফিরে আসা। ৭০ রান করে পার্থিব প্যাভিলিয়নে ফেরার পর এক এক করে পরতে থাকে মুম্বইয়ের উইকেট। অন্যদিকে প্রায় হারের মুখ থেকে খেলায় ফেরা গুজরাট দলটা যেন নতুন উৎসাহে লড়াই শুরু করে। ১২ বলে ১৫ রান দরকার। এই অবস্থায় যে কোনও দলের কাছেই জয়টা শক্ত কাজ নয়। কিন্তু গুজরাটের তুখোড় ও নিখুঁত ফিল্ডিংয়ের সামনে একের পর এক উইকেট হারাতে থাকে মুম্বই। দাঁড়ায় প্রায় হারের দোরগোড়ায়। পাল্টে যায় ম্যাচের রং। কিন্তু এই অবস্থায় কুণাল পাণ্ডিয়ার একটা ছক্কা ফের মুম্বইকে খেলায় ফিরিয়ে আনে। অবশেষে ১ বলে ১ রান করলে জিতবে মুম্বই। হাতে আর এক উইকেট। এমন এক রুদ্ধশ্বাস মুহুর্তে ফিল্ডিংয়ে শেষ চমকটা দেখান জাদেজা। রান আউট হওয়ায় ম্যাচ টাই হয়ে যায়। আইপিএলে ম্যাচ টাই হয়না। এখানে হয় সুপার ওভার। ফের টানটান উত্তেজনা। ২ দল ১ ওভার করে সুযোগ পাবে। ৩ জন ব্যাটসম্যান মাঠে নামতে পারবে ২ দলের। ২ টো উইকেট পরা মানে তাদের খেলা শেষ। মুম্বই প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ফকনারের প্রথম বলে ১, দ্বিতীয় বলে পোলার্ডের ৪ ও তৃতীয় বলে পোলার্ডের ৬-য়ের হাত ধরে পৌঁছে যায় ১১ রানে। হাতে তখনও ৩ বল। এই অবস্থায় পোলার্ড ক্যাচ তুলে আউট। ব্যাট করতে এসে পঞ্চম বলে ফের ক্যাচ তোলেন বাটলার। ফের দুর্ধর্ষ ফিল্ডিং। চোখ জুড়নো ক্যাচ। ৫ বলে শেষ মুম্বইয়ের ইনিংস। ফলে গুজরাটকে করতে হবে ৬ বলে ১২ রান। এই অবস্থায় ব্যাট হাতে নামেন ২ মারমুখী ব্যাটসম্যান ফিঞ্চ ও ম্যাককালাম। মারকুটে ব্যাটসম্যান হিসাবে ক্রিকেট মহলে সুনাম আছে দুজনের। বল হাতে বুমরাহ। প্রথম বল নো। ফলে ৬ বলে দরকার ১১ রান। সঙ্গে ফ্রি হিটের সুযোগ। এই অবস্থায় ফ্রি হিটে মাত্র ১ রান তোলেন ফিঞ্চ। এরপর বুমরাহ-র একের পর এক স্লোয়ার। সঙ্গে দুরন্ত লেন্থ। ফলে সব চেষ্টা করেও ব্যাটে বলে করতে হিমসিম খেতে হয় ম্যাককালাম বা ফিঞ্চকে। আরও একটা ওয়াইড বল দিয়েও বুমরাহ এদিনের হিরো হয়ে যান মুহুর্তে। জিতে যায় মুম্বই। সব করেও শেষে গুজরাটের ব্যাট হাতে ব্যর্থতা জয়ের জ্বলে ওঠা আসাটা এদিন রাত ১২টায় ভিড়ে ঠাসা স্টেডিয়ামে দুপ করে নিভিয়ে দিলেন বুমরাহর দুরন্ত ফর্ম।