মুম্বইয়ের মাঠে, মুম্বইয়ের দর্শকে ঠাসা গ্যালারির সামনে, নিজের দলের দুই তারকা বেন স্টোকস ও ইমরান তাহিরকে ছাড়া ২০ রানে সহজ জয় পেল পুনে। তাও কাকে হারিয়ে! এই আইপিএলে সবচেয়ে ছন্দে থাকা দল মুম্বইকে হারিয়ে। যেখানে কদিন আগেও ১৪ তম ম্যাচে প্রথম চারে ঢোকার লড়াইয়ে নামতে হয়েছিল পুনেকে। সেই দল এদিন মাঠে ম্যাজিক দেখিয়ে দিল। এদিন টস জিতে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেয় মুম্বই। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই রাহুল ত্রিপাঠি ও অধিনায়ক স্টিভ স্মিথের উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় পুনে। রানের গতি মন্থর হয়ে যায়। যদিও রান ধীরে উঠলেও তাড়াহুড়ো করে রান তোলার কোনও চেষ্টাতেই যাননি অজিঙ্কা রাহানে ও মনোজ তিওয়ারি। এই দুজনের কাঁধে ভর করে রান ধীর গতিতে হলেও এগোতে থাকে। কারণ ১৫ ওভারের মধ্যে আরও উইকেট হারালে তারকা ও সফল খেলোয়াড় হীন পুনের পক্ষে ঘুরে দাঁড়ানো কঠিন ছিল। এরপর অজিঙ্কা রাহানে আউট হলেও রানের অঙ্ক বড় একটা বাড়ছিলনা। এভাবে ১৮ ওভার কেটে যাওয়ার পর আচমকাই খোলে ধোনির ব্যাট। আর ধোনি যেদিন ফর্মে থাকেন সেদিন কোনও বোলারই তাঁকে রোখার জন্য যথেষ্ট নন। ম্যাকলেনন ও যশপ্রীত বুমরাহ-র মত বোলারদের কার্যত দুরমুশ করে শেষ ২ ওভারে পুনে তাদের স্কোর বোর্ডে জমা করে ৪০ রানের ওপর। তাও শেষ ২ বল খেলতে পারেননি ধোনি। ১৬২ রানে পুনে ২০ ওভার শেষ করার পর জেতার জন্য ১৬৩ রান করতে হবে এই অবস্থায় খেলতে নামে মুম্বই। শুরুতেই পার্থিবের ব্যাট কামাল দেখাতে থাকে। চোখ জুড়নো ব্যাটিংয়ে খুব দ্রুত স্কোর বোর্ডে ৩৫ রান জুড়ে দেন পার্থিব, সিমেন্স জুটি। যদিও সিমেন্সের নড়বড়ে ব্যাট থেকে তেমন রান আসেনি। এই সিমেন্সের কপাল খারাপ থাকায় পার্থিবের স্ট্রেট ড্রাইভ বোলার শার্দূল ঠাকুরের আঙুল ছুঁয়ে বল গিয়ে লাগে নন-স্ট্রাইক এণ্ডের উইকেটে। এদিকে নন-স্ট্রাইক এণ্ডে দাঁড়িয়ে থাকা সিমেন্স ছোটেন রানের আশায়। ফলে রান আউট হয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরতে হয় তাঁকে। এরপর শুরু হয় পুনের ওয়াশিংটনের বিষাক্ত ঘূর্ণি। যে ঘূর্ণির কবলে পড়ে দ্রুত একে একে আউট হয়ে ফেরেন মুম্বই অধিনায়ক রোহিত শর্মা, রায়ুডু ও পোলার্ড। ৫২ রানের মধ্যে ৪ উইকেট হারিয়ে প্রবল চাপে পড়ে যাওয়া মুম্বই ফের কিছুটা আশার আলো দেখে হার্দিক পাণ্ডিয়ার শটে। কিন্তু তাও বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। হার্দিকও প্যাভিলিয়নে ফেরার পর কুণাল পাণ্ডিয়া আর পার্থিবের হাতে ছিল তরীপারের দায়িত্ব। যদিও ততক্ষণে ওয়াংখেড়ের গ্যালারিতে বিখ্যাত নীল সমুদ্রের ঢেউ তার লহরি তোলা বন্ধ করে দিয়েছে। খেলার ফলাফল সম্বন্ধে একটা আন্দাজ পেতে কোনও সমস্যা হচ্ছিল না মুম্বই সমর্থকদের। এরমধ্যেই ফের ধাক্কা। পরপর আউট হয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরেন কুণাল ও মুম্বইয়ের একমাত্র সেট ব্যাটসম্যান পার্থিব প্যাটেল। একমাত্র পার্থিবই এদিন ৫২ রান করে মুম্বইয়ের মুখ রেখেছেন। এরপর ছিল শুধু সময়ের অপেক্ষা। আর মুম্বইয়ের হার জেনেও ২০ ওভার পর্যন্ত মাটি কামড়ে ক্রিজে থাকা। সেটা হয়েছে। তবে ৯ উইকেট হারিয়ে। অবশেষে ২০ রানে ঘরের মাঠে ডার্বি হারতে হয় তাদের। বুধবার কলকাতা-হায়দরাবাদের মধ্যে যে দল জিতবে তাদের সঙ্গে খেলতে হবে মুম্বইকে। সেখানেই ঠিক হবে ফাইনালে পুনের মুখোমুখি হবে কোন দল।