ছক্কা মেরে জিত। এরমধ্যে বেশ একটা রাজকীয় চাল আছে। খেলার শেষপাতে সেই স্বাদ থেকেও কাণায় কাণায় ভর্তি ইডেনকে বঞ্চিত রাখলনা কলকাতা নাইট রাইডার্স। মণীশ পাণ্ডের নিখুঁত শট বাউন্ডারি পার করতেই জয়ের আনন্দে লাফিয়ে উঠল ডাগ আউট। উল্লাসে ফেটে পড়ল গোটা ইডেন। সাড়ে ৩ ওভার বাকি থাকতেই ৮ উইকেটে দাপটের সঙ্গে ম্যাচ জিতে পুরো পয়েন্ট খাতায় তুলে নিল কেকেআর। ম্যাচের নায়ক অবশ্যই গৌতম গম্ভীর। শুরু থেকে একা একদিকে দাঁড়িয়ে থেকে ৪৯ বলে ৭২ রানের অধিনায়কোচিত ইনিংস খেলেন তিনি।
এদিন টস জিতে প্রথমে বল করার সিদ্ধান্ত নেন কেকেআর অধিনায়ক। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে কেকেআরের দুর্বল ফিল্ডিংয়ের সুযোগকে কাজে লাগিয়ে পাওয়ার প্লেতে ভাল রান তুলে নেয় পঞ্জাব। তারপর যদিও কিছুটা ছন্দপতন হয়। বোলিংয়ে এদিন কামাল দেখিয়েছেন সুনীল নারিন। কিন্তু গ্রান্ডহোম বাদে অন্য বোলাররা ভাল মার খেয়েছেন। অবশ্য রান আরও ভাল হতে পারত যদি কিংস ইলেভেন পঞ্জাবের ঋদ্ধিমান সাহা আর মিলার আর কিছুক্ষণ মাঠে থাকতে পারতেন। কিন্তু এই দুই মারকুটে ব্যাটসম্যানকে পরপর ২ বলে প্যাভিলিয়নে পাঠান উমেশ যাদব। আর সেটাই টার্নিং পয়েন্ট হয়ে যায়। ওই ওভারেই অক্ষর প্যাটেলের উইকেটও তুলে নিয়ে কার্যতই স্লগওভারে পঞ্জাবের হাত খুলে বল পেটানোর সব আশায় জল ঢেলে দেয় কেকেআর। ১৭০ রানেই থমকে যায় পঞ্জাবের ইনিংস।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে প্রথমেই চমক। চোটের জন্য ক্রিস লিন বাইরে থাকায় সুনীল নারিনকে সঙ্গে নিয়ে ওপেন করতে নামেন গৌতম গম্ভীর। অঙ্কটা কী তা বুঝতে হিমসিম খান ক্রিকেট বোদ্ধারাও। কিন্তু সব আশাআশঙ্কা কেটে যায় দু-এক ওভার বল হতেই। সুনীলের দাপুটে ব্যাটিংয়ে রানের চাকা ক্রমশ গতি বাড়াতে থাকে। সুনীলের চার-ছয়ের বন্যা আর গৌতম গম্ভীরের ছবির মত শটের যাদুতে দুরন্ত শুরু পায় কেকেআর। ৮ ওভারের শেষেই পৌঁছে যায় ১০০-র কোটায়। সুনীলের ১৮ বলে ৩৪ রানের ইনিংস ম্যাচটা কার্যত কেকেআরের ঝুলিতে এনে ফেলে। এরপর ব্যাট করতে নেমে ভালই খেলছিলেন রবীন উত্থাপ্পা। কিন্তু ছেলেমানুষি শট মারতে গিয়ে ১৬ বলে ২৬ রানের ছোট ইনিংস খেলে বিদায় নেন তিনি। নামেন মণীশ পাণ্ডে। এরপরটা শুধুই উল্লাস। গৌতম-মণীশের যুগলবন্দিতে ম্যাচ সহজেই পকেটে পুরে ফেলে কেকেআর। এই নিয়ে ইডেনে ঘরের মাঠে কেকেআর টানা ১০টা ম্যাচ জিতল। আর বুঝিয়ে দিল ওয়াংখেড়েতে মুম্বইকে হারানোর শাপমোচন এবারও না হলেও ওটা ইতিহাস। কেকেআর আসছে। এদিনের জয়ের ফলে ৩ ম্যাচ খেলে একটা হেরে রান রেটের নিরিখে কলকাতাই এখন আইপিএলের ক্রমতালিকার শীর্ষে অবস্থান করছে।