হিসেব কষা ম্যাচে ছক্কা হাঁকিয়ে জিতল কলকাতা
জয়পুরে রাজস্থানের ঘরের মাঠ সোওয়াই মানসিং স্টেডিয়ামে রাজস্থান রয়্যালসকে হিসেব কষে হারিয়ে দিল কলকাতা।
জয়পুরে রাজস্থানের ঘরের মাঠ সোওয়াই মানসিং স্টেডিয়ামে রাজস্থান রয়্যালসকে হিসেব কষে হারিয়ে দিল কলকাতা। ম্যাচের শুরুর ৬ ওভার বাদ দিলে সব বিভাগেই এদিন কলকাতার কাছে কিস্তিমাত হয়েছে রাহানের রাজস্থান।
এদিন টস জিতে প্রথমে অজিঙ্কা রাহানের দলকে ব্যাট করতে পাঠান কলকাতার অধিনায়ক দীনেশ কার্তিক। ব্যাট করতে নেমে দুরন্ত শুরু করে রাজস্থান। অজিঙ্কা রাহানে ও শর্টের ওপেনিং জুটির দুর্দান্ত ব্যাটিং পাওয়ার প্লের সুবিধা চেটেপুটে ঘরে তুলতে থাকে। দলগত ৫৪ রানের মাথায় ১৯ বলে ৩৬ রান করে ফেরেন রাহানে। সঞ্জু স্যামসন ব্যাট করতে নামলেও রানের মিটার কিছুটা শ্লথ হয়ে যায়। মাত্র ৭ রান করে ফিরতে হয় স্যামসনকে। এটা রাজস্থানের জন্য বড় ধাক্কা ছিল। ৪৩ বলে ৪৪ রান করে আউট হন শর্ট। এরপর রাজস্থানের রানের গতি যেমন কমতে থাকে তেমনই পড়তে থাকে উইকেট। ত্রিপাঠী ও স্টোকসও যখন প্যাভিলিয়নে ফেরেন তখন রাজস্থানের স্কোর ১২২।
বাটলার কিছুটা হাল ফেরানোর চেষ্টা করেন। রানের গতিও কিছুটা বাড়ান। কিন্তু অন্যদিক থেকে গোথম, গোপাল, ধবল কুলকর্ণি এক এক করে প্যাভিলিয়নে ফিরতে থাকেন। ২০ ওভারের শেষে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৬০ রান করে রাজস্থান। এদিন কলকাতার বোলিং দুরন্ত হলেও দলের সবচেয়ে শক্তিশালী বোলার সুনীল নারিন মার খেয়েছেন। ৪ ওভার বল করে ৪৮ রান দিয়েছেন সুনীল। যা কার্যত কলকাতার ভাবনার অতীত।
১৬১ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই ক্রিস লিনের গুরুত্বপূর্ণ উইকেট হারায় কলকাতা। প্রথম ওভারের তৃতীয় বলেই তাঁকে বোল্ড করে ফেরত পাঠান স্পিনার কৃষ্ণাণ গোথম। এরপর উত্থাপ্পা নামলেও রান উঠছিল না। প্রথম ৩ ওভারে নারিন বা উত্থাপ্পা, কাউকেই হাত খুলতে দেননি রাজস্থানের বোলাররা। তবে চতুর্থ ওভার থেকে হাত খুলতে শুরু করেন কলকাতার ২ ব্যাটসম্যান। এবার শুরু হয় চার, ছয়।
প্রথম ৩ ওভারের খরা সম্পূর্ণ উসুল করে দেন নারিন, উত্থাপ্পা। দলের ৭০ রানের মাথায় ব্যক্তিগত ৩৫ রান করে প্যাভিলিয়নে ফেরেন নারিন। আসেন নীতীশ রাণা। ৪৮ রান করে উত্থাপ্পাও প্যাভিলিয়নে ফেরার পর কিন্তু ম্যাচে কলকাতার পাল্লা ভারী ছিল। এবার ম্যাচের হাল ধরে রাণা-কার্তিক জুটি। হিসেব কষেই দুজনে ১-২ রানের ওপর জোর দেন। ২৪ বলে ৩৫ রান দরকার। এই অবস্থায় ১৭ তম ওভারে বল করতে আসেন এই আইপিএলের সবচেয়ে দামী খেলোয়াড় জয়দেব উনাদকাট। আর তাঁর ওভারেই কার্তিক ও রাণা ১টি করে ছক্কা হাঁকিয়ে খেলার যাবতীয় চাপ কমিয়ে দেন। খেলায় কলকাতার জয় সময়ের অপেক্ষা হয়ে দাঁড়ায়।
সেই সময়ের অপেক্ষাকে দীর্ঘায়িত হতে দিলেন না অধিনায়ক দীনেশ কার্তিক। ১৯ তম ওভারে ছক্কা হাঁকিয়ে একটি স্টাইলিশ জয় উপহার দিলেন তিনি। রাজস্থান হারল ৭ উইকেটে। ৭ বল বাকি থাকতেই ৩ উইকেট হারিয়ে জয়ের জন্য প্রয়োজনীয় রান তুলে নেয় কলকাতা। ম্যাচের সেরা নির্বাচন এদিন বিশেষ কঠিন কাজ ছিলনা। কারণ বোলিং করতে গিয়ে অজিঙ্কা রাহানে ও শর্টের মত রাজস্থানের ২ রান মেশিনকে এদিন প্যাভিলিয়নমুখো করেন নীতীশ রাণা। আর ব্যাট হাতে শেষ পর্যন্ত দাঁড়িয়ে থেকে ২৭ বলে ৩৫ রানের দুরন্ত ইনিংস খেলেন।
যে জোড়া ফলায় এদিন কার্যত রাজস্থান বধের চিত্রনাট্য লেখা হয়ে যায়। ফলে নীতীশ রাণাই এদিন প্লেয়ার অফ দ্যা ম্যাচ হওয়ার একমাত্র দাবিদার ছিলেন। হয়েছেনও তাই। এদিনের জয়ের পর ৫ ম্যাচ সম্পূর্ণ করল কেকেআর। চলতি আইপিএলে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলার পাশাপাশি তালিকার মাথায় চলে গেল তারা।