মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের কাছে হারাটা একরকম প্র্যাকটিসে পরিণত করে ফেলেছে কেকেআর। ২০১৫ সালের পর আইপিএলে আর একটাও ম্যাচে মুম্বইকে হারাতে পারেনি কলকাতা। এবারও ওয়াংখেড়েতে হেরে এদিন ইডেনে কলকাতা মুখোমুখি হয়েছিল রোহিত শর্মার টিমের। টসও জিতেছিল। টস জিতে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেন কলকাতার অধিনায়ক দীনেশ কার্তিক।
প্রথম ১০ ওভার সব ঠিকঠাক ছিল। কিন্তু তারপর কী যেন একটা অজানা শক্তি কেকেআরের খেলা নষ্ট করে দিল। জঘন্য বোলিং করতে শুরু করল। এমনভাবে ফিল্ডিং সাজানো হল যাতে অনায়াসে বল গ্যাপে ফেলে চার, ছয় হাঁকাতে পারে মুম্বই ইন্ডিয়ান্স। যেন জেতার জন্য নয়, ম্যাচ হারার জন্য লড়াই চালানো শুরু করলেন শাহরুখের ছেলেরা। তা না হলে যে দলটা প্রথম ১০ ওভারের শেষে ৭০ রানে আটকে ছিল। তারাই পরের ১০ ওভারে ১৪০ রান তুলে নিল হেলায়!
ঈশান কিষাণ ২১ বলে করেন ৬২ রান! এছাড়া শুরু থেকে সূর্যকুমার (৩৬), লিউইস (১৮), রোহিত শর্মা (৩৬), হার্দিক পাণ্ডিয়া (১৯), কাটিং (২৪), মুম্বইয়ের সকলেই ভাল রান দলের খাতায় যোগ করেন।
এখানে যদি তর্কের খাতিরে ধরে নিতে হয় পিচ বোলার সহায়ক ছিলনা, তাহলে তার পরের অধ্যায়ে কেকেআরের এমন দশা হল কী করে সে প্রশ্ন কিন্তু ওঠে! ২০ ওভারে ২১০ রান করে শেষ করে মুম্বই।
২১১ রানের পাহাড় প্রমাণ টার্গেট। যা তাড়া করতে গেলে হুটোপাটি নয়, হিসেব কষে প্রথম বল থেকে খেলাটা ছিল জরুরি। কিন্তু এখানে কেমন যেন হারার তাড়া চোখে পড়েছে কেকেআরের। সুনীল নারিন দ্বিতীয় বলেই একটা দায়িত্বজ্ঞানহীন শটে ক্যাচ দিলেন।
যদি ধরে নেওয়া যায় নারিনকে পিঞ্চ হিটার হিসাবে নিয়ে এসেছিল কলকাতা। সেখানে তিনি আউট হতেই পারেন। তাহলে তাঁর পরে রবীন উত্থাপ্পা ও ক্রিস লিনের উচিত ছিল দায়িত্বের পরিচয় দেওয়া। অন্তত লড়াইটা দেওয়া। কিন্তু ফের কোনও এক অদৃশ্য শক্তি যেন কেকেআরকে লড়াই থেকেও দূরে রাখল। শুরু হল আয়ারাম গয়ারামের খেলা।
উইকেট ছুঁড়ে দেওয়ার খেলা। প্রায় কোনও উইকেটই মুম্বইকে এদিন লড়ে নিতে হয়নি। বরং কেকেআর হাতে তুলে দিয়ে এসেছে। এমনভাবে ক্যাচ তুলেছে যেন ক্যাচ লুফতেও খাটতে না হয়। চোখে আঙুল দিয়ে বারবার কেকেআর এদিন ইডেনের পিচে দেখিয়ে দিয়েছে তারা হারতেই মাঠে নেমেছে, জিততে নয়! কেবল নিয়মরক্ষা করতে ১০ উইকেট তাদের মাঠে নেমে হারাতে হবে। তাই মাঠে নামা!
কেকেআরের উইকেট উপহার দেওয়ার বহর থেকেই তা পরিস্কার। যখন হার নিশ্চিত হয়েছে তখন নাইটদের টেল এন্ডদের উইকেট পড়া বাকি। যাঁরা মূলত বোলার। ব্যাটসম্যান নন।
তাই হার নিশ্চিত করে এবার উইকেট আঁকড়ে পড়ে থাকার মরিয়া চেষ্টা করেন কুরান, কুলদীপ, পীযূষরা। কিন্তু তাঁরাও বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। ১৮ ওভার পর্যন্ত টিকে থেকে ১০৮ রানে শেষ হয় কলকাতার ইনিংস। মুম্বই জেতে ১০২ রানে।