পঞ্জাবের ঘরের মাঠ এখন ইন্দোর। সেই ইন্দোরে শনিবারের বিকেলে ডু অর ডাই ম্যাচে কলকাতা মুখোমুখি হয়েছিল তালিকায় ওপরে থাকা পঞ্জাবের। টস জিতে পঞ্জাব এদিন ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেয়। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে কলকাতার ক্রিস লিন ও সুনীল নারিন জুটি সাবধানী হয়ে ইনিংস শুরু করে। বোঝাই যাচ্ছিল প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার লড়াইয়ে কোনও ভুল করতে রাজি নয় কলকাতা। হাত, চোখ সেট করে তবেই মারতে যাওয়ার চেষ্টা করা উচিত। যেন এই মন্ত্র আওড়েই মাঠে নেমেছে কেকেআর। হয়ও তাই। প্রথম ৩ ওভার সাবধানী খেলে তারপর যে সাইক্লোন নাইটরা শুরু করে তার ধাক্কা সামলাতে হিমসিম খেতে থাকেন অশ্বিনের ছেলেরা। খোদ অশ্বিনকেই বল করতে এসে নারিনের তোপে পড়তে হয়। লিন ১৭ বলে ২৭ করলেও এদিন যেন পঞ্জাবের জন্য সাক্ষাৎ যমদূতের চেহারা নিয়েছিলেন সুনীল নারিন। মাত্র ৩৬ বলে ৭৫ রানের বিধ্বংসী ইনিংস খেলেন তিনি। অন্যদিকে উত্থাপ্পা ১৭ বলে ২৪, রাসেল ১৪ বলে ৩১, রাণা ৪ বলে ১১ রান করে মারমুখী মেজাজ ২ প্রান্ত থেকেই ধরে রাখেন। এদিন কলকাতার সকলেই তুফানি মেজাজে থাকলেও নারিনের পর যদি কারও নাম ভয়ংকর হিসাবে সামনে আনতে হয় তবে তিনি অধিনায়ক কার্তিক। যাঁর ব্যাট থেকে এদিন মাত্র ২৩ বলে ৫০ রান এসেছে। শেষ ওভারে শুভমান গিলও ২টি চার মারেন। মাত্র ১ বল খেলে জ্যাভোন সার্লস একটি ছক্কা হাঁকান। ২০ ওভার খেলে কলকাতা নাইট রাইডার্স তোলে ৬ উইকেট হারিয়ে ২৪৫ রান। যা এদিন ২টি রেকর্ড গড়েছে। এক, এটাই কেকেআরের সব আইপিএল মিলিয়ে সর্বোচ্চ স্কোর। দুই, চলতি আইপিএলে এখনও পর্যন্ত এটাই কোনও দলের সর্বোচ্চ স্কোর।
২৪৬ রান করতে হবে ২০ ওভারে। এ রান প্রথমে ব্যাট করে করা গেলেও তা তাড়া করা কার্যত অসম্ভব। কিন্তু ইন্দোরের সহজ পিচে সেই লক্ষ্যের পিছু ধাওয়াটা মন্দ করল না পঞ্জাব। মাত্র ৩১ রানে হেরেছে তারা। যদি পঞ্জাবের আরও ১ জনও মারকাটারি খেলে দিতে পারতেন তবে ম্যাচ ঘুরেও যেতে পারত। যা হয়তো চক্ষু ছানাবড়া করা রেকর্ড হয়ে থাকত বহুদিন। ব্যাট করতে নেমে লোকেশ রাহুল ও ক্রিস গেইল ভয়ংকর শুরু করেন। রানের পাহাড় তাড়া করতে গেলে যেভাবে প্রথম থেকে রান তোলা দরকার প্রায় সেভাবেই চলতে থাকে দুজনের ব্যাট। কিন্তু গেইল ও মায়াঙ্ক আগরওয়ালকে পরপর ২ বলে ফেরান রাসেল। যা বড় ধাক্কা হয়ে দাঁড়ায় পঞ্জাবের কাছে। যদিও রাহুলের বিধ্বংসী ব্যাট চলতেই থাকে। ২৯ বলে ৬৬ রান করেন রাহুল। এরপর ২০ বলে ৩৪ রান করে ফিঞ্চ ম্যাচ বাঁচানোর লড়াই চালান। করুণ নায়ার ৩ রান করে ফিরলেও অক্ষর প্যাটেল ১১ বলে ১৯ রান করেন। শেষের দিকে ম্যাচ ঘোরানোর আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে অশ্বিন ২২ বলে ৪৫ রান করেন। সব মিলিয়ে ২০ ওভারের শেষে ৮ উইকেট হারিয়ে ২১৪ রান করে পঞ্জাব।
২৪৫ রান দেখে যে কোনও দল জেতার আশা ছেড়ে খেলত। সেখানে যে লড়াই পঞ্জাব এদিন দিল তা তারিফযোগ্য। ম্যাচের সেরা হন সুনীল নারিন। আর এদিন ইন্দোরের দর্শকদের পাওনা হল ৪০ ওভারের খেলা দেখে ৪৫৯ রানের মারকাটারি ইনিংসের মজা তারিয়ে উপভোগ করা।