একদিকে যেমন ধোনির দল জিতে চলেছে হেলায়। তেমনই আবার অন্যদিকে কেকেআর জিতে চলেছে তাদের ব্যালান্সড টিমের শক্তিতে। তবে দলের মধ্যে একজনকে আলাদা করে গুরুত্ব দেওয়া জরুরি। তিনি আন্দ্রে রাসেল। যিনি প্রথম ২টি ম্যাচেই জয়ের কারিগর হয়ে গেলেন। ইডেনে বুধবার সন্ধেয় প্রতিযোগিতার দ্বিতীয় ম্যাচে দর্শকদের পয়সা উসুল করে জয়ী হল কেকেআর। তাও আবার দলের মালিকের সামনে। শাহরুখ খানের এদিন হাততালি কোনও সময় থামতে দেয়নি নাইটরা। শেষ পর্যন্ত নয়। ২৮ রানে ম্যাচে জেতে কেকেআর। বড় রান তাড়া করতে নেমে কিছুটা হলেও লড়াই দেয় কিংসরা।
ইডেনে এদিন টস জিতে নাইটদের ব্যাট করতে পাঠান কিংস ইলেভেন পঞ্জাবের অধিনায়ক রবিচন্দ্রন অশ্বিন। গত ম্যাচে যাঁর মানকড় আউট খেলার মোড় ঘুরিয়ে গোলাপি শহরেই গোলাপি বাহিনীকে পরাজিত করে। ব্যাট করতে নেমে শুরুই করেছিলেন সুনীল নারিন। টি-২০ ক্রিকেটের শুরুতে পাওয়ার প্লেতে যেমন পিঞ্চ হিটার লাগে, নারিন হলেন একেবারে সেই পিঞ্চ হিটার। কেকেআরের বড় প্রাপ্তি। তাঁর বিষাক্ত স্পিনের পাশাপাশি শুরুতে নেমে দুরন্ত কিছু শট মেরে রানের গতিটা প্রথমেই তুলে দেন তিনি। এদিনও তাই করলেন।
৩টে ছক্কা ও ১টি চার মেরে ২৪ রান করে কেকেআরকে একটা ঝোড়ো শুরু উপহার দিয়ে গেলেন নারিন। যদিও ক্রিস লিন এদিনও ব্যর্থ। ১০ রান করে ফেরেন তিনি। তারপর হাল ধরেন নীতীশ রাণা ও রবীন উত্থাপ্পা। এই ২ জনের হিসেব কষা খেলায় কেকেআরের রান উঠতে থাকে ছন্দে। ২ জনেই রান তুলতে থাকেন। তবে ঝুঁকি না নিয়ে। ২ জনকেই এদিন ফর্মে বলে মনে হয়েছে। দ্বাদশ ওভারের পর থেকে নীতীশ রাণা হঠাৎ যেন রুদ্র রূপ ধারণ করেন। ছক্কা আর চারের বন্যা বইতে শুরু করে মাঠে। ছন্দে এগোনো রানে যেন বান ডাকে। তরতর করে রানের মিটার চড়তে শুরু করে।
রাণা ৬৩ রান করে আউট হওয়ার পর আন্দ্রে রাসেল নামেন। প্রথমে ঠিক যেন এঁটে উঠছিলেননা। সামির বলে আউটও হন। তবে নো বল হওয়ায় বেঁচে যান। আর সেই রাসেলের সেই বেঁচে যাওয়া কার্যত কিংসদের জন্য মৃত্যুর কারণ হল। রাসেল ঝড় উঠল ইডেনে। অল্প সময়ের মধ্যে রান ২০০ পার করল। রাসেল এদিন মাত্র ১৭ বল খেলে করেন ৪৮ রান। যার মধ্যে ৫টি ছক্কা ও ৩টি চার রয়েছে। উত্থাপ্পা শেষ পর্যন্ত টিকে থাকেন। করেন ৬৭ রান। কেকেআর ২০ ওভার খেলে ৪ উইকেট হারিয়ে তোলে ২১৮ রান। চলতি আইপিএলে এখনও পর্যন্ত কোনও দলের সর্বোচ্চ রান।
২১৯ রান করলে জিতবে এই অবস্থায় ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই ক্যাচ তুলে ফেরেন কেএল রাহুল। কিংসদের অন্যতম ব্যাটিং স্তম্ভ। যদিও ক্রিস গেইল তখনও মাঠে। তিনি তাঁর স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে ২টো ছক্কা আর ২টো চার হাঁকান। কিন্তু তারপর রাসেলের বলে ক্যাচ তুলে ফেরেন প্যাভিলিয়নে। এই ২ প্রধান ব্যাটিং স্তম্ভ ফেরার পর কার্যত আরও কঠিন হয়ে যায় ২১৯ রান ছোঁয়া। ১৩ রান করে ফেরেন সরফরাজ খানও। তবে মায়াঙ্ক আগরওয়াল ও মিলার মিলে মাটি কামড়ে লড়াই চালিয়ে যান।
দারুণ ব্যাটিং করে ৩৪ বলে ৫৮ রান করে চাওলার বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন মায়াঙ্ক। এরপর ডেভিড মিলার ও মনদীপ সিং মিলে কিংসের জন্য শেষ পর্যন্ত লড়াই দেন। অপরাজিত থাকেন। মিলার ৫৯ রান করেন। মনদীপ ৩৩ রান করেন। লড়াইটা তারিফ করার মত ছিল। ২০ ওভারের শেষে কিংসরা শেষ করে ১৯০ রানে। কলকাতা জেতে ২৮ রানে। ম্যান অফ দ্যা ম্যাচ হন আন্দ্রে রাসেল। চলতি আইপিএলে ২টি ম্যাচ খেলে ২টিই জিতল কেকেআর।