ঘরের মাঠে লো স্কোরিং ম্যাচে অল্প রান তাড়া করতে নেমেও হারল হায়দরাবাদ। এ হার তাদের বহুদিন মনে থাকবে। খাদের কিনারা থেকে পোলার্ডের কাঁধে ভর করে ১৩৬ রান কোনওক্রমে করা মুম্বই এদিন যে জিতবে তা ক্রিকেট বিশেষজ্ঞরাও বুঝতে পারেননি। তবে কথায় বলে ক্রিকেট ইজ এ গেম অফ আনসার্টেনটি। শেষ বল পর্যন্ত বোঝা মুশকিল কী হবে! তাই শনিবার প্রমাণ হল। সামান্য রান তাড়া করতে নেমে একের পর এক উইকেট হারিয়ে অবশেষে হারের মুখ দেখল হায়দরাবাদ। ১৩৬ রানও করতে পারল না তারা। হারল ৪০ রানে।
ঘরের মাঠে এদিন টস জিতে প্রথমে মুম্বইকে ব্যাট করতে পাঠান সানরাইজার্স হায়দরাবাদের অধিনায়ক ভুবনেশ্বর কুমার। ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই নড়বড় করতে থাকে মুম্বইয়ের ব্যাটিং লাইনআপ। নিয়মিত উইকেট পড়তে থাকে তাদের। রোহিত শর্মাকে (১১) দিয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরা শুরু হয়। তারপর এক এক করে সূর্যকুমার যাদব (৭), ডি কক (১৯), ক্রুণাল পাণ্ডিয়া (৬), ঈশান কিষাণ (১৭), হার্দিক পাণ্ডিয়া (১৪) ও চাহর (১০) আউট হয়ে ফেরেন। তবে এদিন ৯৭ রানে ৭ উইকেট হারানো মুম্বইকে খেলায় বাঁচিয়ে রাখেন পোলার্ড। ২৬ বলে ৪৬ রানের একটা দুরন্ত ইনিংস খেলে দেন তিনি। যেখানে ৪টি ছক্কা হাঁকান এই ওয়েস্ট ইন্ডিজের খেলোয়াড়। মূলত তাঁর হাত ধরেই মুম্বই ২০ ওভারে করে ১৩৬ রান। তবু মন্দের ভাল। কঠিন পিচে লড়াই দেওয়ার জন্য যথেষ্ট।
১৩৭ রানের টার্গেট। বিশাল টার্গেট নয়। কিন্তু ব্যাট করতে নেমে ঘরের মাঠেই দ্রুত ফেরেন বেয়ারস্টো (১৬), ডেভিড ওয়ার্নার (১৫) ও বিজয় শঙ্কর (৫)। চাপে পড়ে যায় হায়দরাবাদ। অল্প রানের লক্ষ্য হলেও তখন তা বিশাল মনে হচ্ছিল হায়দরাবাদের সমর্থকদের। আর সেখানেই ফের উইকেট হারায় ঘরের দল। মণীশ পাণ্ডে ফেরেন ১৬ রানে ও ইউসুফ পাঠান ফেরেন ০ রানে। যদিও মণীশ পাণ্ডে আরও আগেই যেতেন। কিন্তু পোলার্ড সহজ ক্যাচ ফেলে তাঁকে জীবন ফিরিয়ে দেন। তবে তা বেশিক্ষণ কাজে লাগাতে পারেননি মণীশ। উইকেট পতন যে কতটা চাপ তৈরি করে তা এদিনের এই লো স্কোরিং ম্যাচ দেখলেই পরিস্কার হয়ে যায়। ক্রমশ বল ও রানের ফারাক চওড়া হতে থাকায় দীপক হুডা বাধ্য হয়েই জোসেফের বলে ছক্কা হাঁকানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু ছক্কার বদলে তাঁর উইকেট ভেঙে যায়। নামেন রশিদ খান। কিন্তু তিনিও জোসেফের শিকার হন। কোনও রান করতে পারেননি রশিদ। এরপর বুমরাহ-র শিকার হন মহম্মদ নবি। সেট ব্যাটসম্যান। ১১ রানে ফেরেন তিনি। এখানেই খেলার ফল ঠিক হয়ে যায় হায়দরাবাদের জন্য। অবশেষে ভুবনেশ্বর কুমার ২ রানে ও সিদ্ধার্থ কল ০ রানে আউট হন। হায়দরাবাদের ইনিংস শেষ হয় ১৭ ওভার ৪ বলে।
এদিন মুম্বইয়ের শুরু থেকে চাপে থাকা ম্যাচে কিছুটা ব্যাটিংয়ে প্রাণ ফিরিয়ে দিয়েছিলেন পোলার্ড। আর অল্প রানের টার্গেটেরও ধারেকাছে হায়দরাবাদকে পৌঁছতে দিলেন না মুম্বইয়ের একটি মাত্র বোলার। তিনি অ্যান্টিগুয়ার ক্রিকেটার আলজারি জোসেফ। যিনি খেলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে। ২২ বছর বয়স। কিন্তু বলে গতি থেকে বিভিন্নতা সবই রয়েছে পুরোদমে। এদিন ৩ ওভার ৪ বল করে জোসেফ ১টি মেডেন ওভার করে ১২ রান দিয়ে তুলে নেন ৬ উইকেট। কার্যত এদিন হায়দরাবাদের জন্য যমদূতের কাজটি করে দেন তিনি। এমন এক বিধ্বংসী বোলারই এদিন মুম্বইয়ের জয়ের নায়ক। ফলে খেলা শেষে তাঁকে ঘিরে উচ্ছ্বাসের অন্ত ছিলনা মুম্বইয়ের। খুব স্বাভাবিকভাবেই ম্যাচের সেরা হন জোসেফ। তাঁর অসাধারণ বোলিংয়ের জন্য। এদিনের জয়ের জেরে টেবিলের ৪ নম্বরে উঠে এল মুম্বই।