রাজস্থানকে তাদের মাঠেই দাঁড়াতে দিল না কলকাতা নাইট রাইডার্স। টস থেকে খেলা সবেতেই জিতল কলকাতা। খেলার শুরু থেকে শেষ কোনও এমন সময় এল না যেখানে মনে হতে পারে রাজস্থান একটু লড়াইয়ে ফিরল। রবিবার অবশ্য রাজস্থান একটি ক্যাচ ফেলেছে। ধবল কুলকার্নির একটি গতির বল ক্রিস লিনকে পরাস্ত করে উইকেটে লাগে। তবু আউট হয়নি।
বল লেগ স্টাম্পে গিয়ে লাগে। বেল নড়ে যায়। বেলের আলোও জ্বলে ওঠে। কিন্তু বেল পড়েনি। আর ক্রিকেটের নিয়ম হল বেল মাটিতে পড়তে হবে। তবেই আউট। এদিন কিন্তু বেলটা একটু নড়েচড়ে ফের নিজের জায়গায় স্থির হয়ে যায়। নিশ্চিত আউটের হাত থেকে বেঁচে যান ক্রিস। সেই ক্রিস লিনই এদিন ৫০ রান করে ফেরেন।
এদিন বোধহয় কেকেআরের সবচেয়ে বড় পাওনা ইংল্যান্ডের বোলার হ্যারি গর্নির দুরন্ত স্পেল। ফার্গুসনের জায়গায় এদিন গর্নিকে দলে নেয় কেকেআর। গর্নি তাঁর ৪ ওভারে ২৫ রান দিয়ে ২ উইকেট তুলে নেন। ম্যাচের সেরাও হন তিনি। মনে রাখা ভাল যে গর্নির এদিনই ছিল আইপিএলে হাতেখড়ি। জীবনের প্রথম আইপিএল ম্যাচেই ম্যান অফ দ্যা ম্যাচ হলেন তিনি। কেকেআরের জন্য গর্নি একটা বড় বাজি। ফলে গর্নি আগামী ম্যাচগুলোয় কলকাতার বোলিং আক্রমণের অন্যতম ভরসা হতে পারে।
টস জিতে এদিন জয়পুরে রাজস্থান রয়্যালসকে ব্যাট করতে পাঠান দীনেশ কার্তিক। শুরুতেই রাজস্থান অধিনায়ক অজিঙ্কা রাহানেকে ফেরান প্রসিদ্ধ কৃষ্ণ। এরপর বাটলার ও স্মিথ খেলার হাল ধরেন। উইকেট পড়তে না দিলেও এঁদের রান তোলার গতি কিন্তু কম ছিল। প্রথম ১০ ওভারের শেষে রাজস্থানের স্কোর ছিল ৫৪ রান।
এত কম রান ওঠায় মনোবলের দিক থেকে এগিয়ে যায় কলকাতা। তারপর হাত খোলার চেষ্টা করেন ২ জনে। আর সেখানেই গর্নির স্লোয়ারের শিকার হন বাটলার। ৩৭ রানে ফেরেন তিনি। একইভাবে গর্নির শিকার হন রাহুল ত্রিপাঠী। এদিন যদি কেউ রাজস্থানকে টেনে থাকেন তবে স্টিভ স্মিথ। প্রাক্তন অজি অধিনায়ক যেভাবে একা দাঁড়িয়ে থেকে ৫৯ বলে ৭৩ রান করে অপরাজিত থাকেন তা রাজস্থানকে একটা মোটামুটি স্কোরে দাঁড় করিয়ে দেয়। রাজস্থান ২০ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে করে ১৩৯ রান।
১৪০ রান তোলা খুব কঠিন কাজ ছিলনা। ধরে খেলেও রানটা তুলে নেওয়া যেত। কিন্তু পাওয়ার প্লে-তে কোনও ধীরে খেলার রাস্তায় না গিয়ে হার্ড হিটের রাস্তায় হাঁটে কলকাতা। বড় রান তাড়া করতে যেভাবে শুরু থেকেই চালিয়ে খেলতে হয় তেমনই খেলতে থাকেন ক্রিস লিন ও সুনীল নারিন। পিঞ্চ হিটার হিসাবেই তাঁকে প্রথমে নামানো। আর সেই কাজ এদিন পুরো করে যান নারিন। ২৫ বলে ৪৭ রানের একটা দারুণ ইনিংস খেলে দেন তিনি। উল্টোদিকে ক্রিস লিনের ব্যাটও চলতে থাকে।
দলের ৯১ রানের মাথায় যখন সুনীল আউট হন ততক্ষণে খেলার ভবিষ্যৎ স্থির হয়ে গেছে। লিন ফেরেন ৫০ রান করে। শেষে উত্থাপ্পা ও শুভমান গিল প্রয়োজনীয় রান তুলে নেন। শুভমান এদিন কিছুটা আগেই নামেন। তবে তিনি শুধু একদিকে দাঁড়িয়ে উত্থাপ্পাকে সঙ্গ দিয়েছেন। চালিয়ে খেলেছেন উত্থাপ্পা। ১৬ বলে ২৬ রান করেন তিনি। শুভমান করেন ৬ রান। ১৩.৫ ওভারেই ১৪০ রান করে ফেলে কেকেআর। ৩৭ বল বাকি থাকতেই ম্যাচ জিতে যায় তারা। ম্যাচের সেরা হন গর্নি। এই জয়ের ফলে টেবিলের শীর্ষে ফের পৌঁছে গেল কেকেআর। আগামী মঙ্গলবার তারা চেন্নাইতে ধোনির হলুদ ব্রিগেডের মুখোমুখি হবে।