প্রথম ম্যাচে চেন্নাইয়ের কাছে হারের পর রবিবার বিকেলে ইডেনে ছিল ফিরতি ম্যাচ। ঘরের মাঠে চেন্নাইকে হারানোর একটা সুযোগ ছিল কলকাতার সামনে। টস জিতে এদিন প্রথমে কেকেআর-কে ব্যাট করতে পাঠান চেন্নাই অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনি। ব্যাট করতে নেমে এদিন ক্রিস লিন ও পিঞ্চহিটার বলে খ্যাত সুনীল নারিন যথেষ্ট গুছিয়ে খেলা শুরু করেন। দেখে মনে হচ্ছিল হোমওয়ার্কে কেকেআর বুঝেছে যে তাদের হাঁকপাঁক করে রান করার চেষ্টা অনেক ম্যাচ খাদের কিনারায় এনে ফেলছে।
এদিন কিন্তু শুরু থেকেই লিনকে ছন্দে মনে হয়েছে। বরং বড় হিট করতেই অভ্যস্ত সুনীল সেভাবে মারতে পারছিলেন না। ২ রান করে ফেরেন তিনি। লিনের সঙ্গে জুটি বাঁধেন নীতীশ রাণা। যদিও ওই পজিশনে রবীন উত্থাপ্পার নামার কথা। এদিন অর্ডার বদলায় কেকেআর। ক্রিস লিন এদিন মাঠে জ্বলে ওঠেন। শুরু থেকেই তিনি রানের গতি ধরে রাখছিলেন। চার, ছয় আসছিল তাঁর ব্যাট থেকে। সঙ্গে নীতীশও কিছু ভাল শট মারেন।
নীতীশ রাণাকে ২১ করে ফিরতে হয় ইমরান তাহিরের বলে। চেন্নাইয়ের অন্যতম ভরসা তাহির এদিন ওই ওভারেই তুলে নেন রবীন উত্থাপ্পাকে। চাপে পড়ে কেকেআর। এরপর লিন মারতে থাকেন আর অন্যদিকটা ধরে থাকেন অধিনায়ক দীনেশ কার্তিক। এদিন যখন লিন ভয়ংকর হয়ে উঠেছেন তখন তাঁকে ফেরাতে ফের তাহিরাস্ত্র প্রয়োগ করেন ধোনি। ফের আসে সাফল্য। ওই ওভারে লিন ফেরার পর আন্দ্রে রাসেল নামেন। এসেই তাহিরকে একটা চার ও একটা ছক্কা হাঁকান। কিন্তু তারপরেই ক্যাচ তুলে ফেলেন। ফের তাহিরের ঝুলিতে ১০ রানে রাসেলকে ফিরিয়ে আসে সাফল্য। ধোনি তাঁর তাহির নামক ব্রহ্মাস্ত্রটি দিয়ে কার্যত খেলার মোড় ঘুরিয়ে দেন।
রাসেল ফেরার পর কেকেআর কার্যত মুষড়ে পড়ে। দীনেশ অধিনায়ক হিসাবে এখনও একটাও ম্যাচে সফল নন। এদিনও তিনি ব্যর্থ। যদিও এদিন দীনেশ খেলতে পারলে কলকাতা আরও ভাল ভিতের ওপর দাঁড়াতে পারত। কার্তিক ফেরেন ১৮ রানে। এরপর শুভমান গিল ও পীযূষ চাওলা রান টানার চেষ্টা করেন। কিন্তু তেমন সফল হতে পারেননি। কোনও বড় শট নিতে পারেননি তাঁরা। যে শেষ ৪ ওভারে রানের মোড় ঘুরিয়ে দেয় দলগুলি। সেখানে শেষ ৪ ওভার থেকে কলকাতার ঝুলিতে আসে মাত্র ১৮ রান। কেকেআর শেষ করে ১৬১ রান করে।
মধ্যবিত্ত রানের টোটাল তাড়া করতে নেমে দ্রুত ওয়াটসনের উইকেট হারায় চেন্নাই। ৬ রান করে ফেরেন ওয়াটসন। এদিন পেসারদের চেয়ে অনেক বেশি সফল স্পিনাররা। বল ভাল ঘুরছিল। গার্নির মত মিডিয়াম পেসারও সফল। গার্নি তোলেন ওয়াটসনকে। সুনীল নারিন মেডেন উইকেট পান। ২৪ রান করা ডু প্লেসিকে বোল্ড করে ফেরান তিনি। স্পিন কাজ করছে। তাই এবার টানা স্পিনার দিয়ে বল করানো শুরু করেন দীনেশ কার্তিক। রানও আটকে যায়। নারিন, কুলদীপ, পীযূষকে দিয়ে বল করাতে থাকেন।
পীযূষ এসে প্রথম বলেই ফেরান রাইডুকে। রাইডু করেন ৫ রান। রায়নার সঙ্গে জুটি বাঁধতে নেমে কেদার যাদব শুরু থেকেই হাত খোলেন। পীযূষকে এসেই ২টো চার মারেন তিনি। ছক্কা হাঁকান কুলদীপকে। কিন্তু পীযূষের পরের ওভারেই এলবিডব্লিউ হয়ে ফেরেন প্যাভিলিয়নে। রায়নার সঙ্গে এবার জুটি ধোনির। এরপরই ম্যাচের গিয়ার বদলে যায়। কিন্তু সঠিক সময়ে ধোনিকে ফেরান সুনীল নারিন। এবার রায়নার সঙ্গে জুটি বাঁধেন জাদেজা। এঁদের জুটি খেলাকে জয়ের লক্ষ্যে টেনে নিয়ে যায়।
খেলার সব উত্তেজনায় অবশেষে জল ঢালেন জাদেজা। ১৯ তম ওভারে হ্যারি গার্নির বলে পরপর ৩টি চার মেরে খেলাকে নেহাতই হাতের মুঠোয় নিয়ে নেয় সিএসকে। শেষ ওভারে দরকার ছিল ৮ রান। ২ বল বাকি থাকতেই ৫ উইকেটে ম্যাচ জেতে চেন্নাই।