Sports

হায়দরাবাদের কাছে লজ্জার হার কলকাতার

টানা ৫টি ম্যাচ হারল কলকাতা। এদিন হারল হায়দরাবাদের কাছে। তাও আবার লজ্জার হার। মাত্র ১৫ ওভারে কলকাতার করা রান ছুঁয়ে ফেলে হায়দরাবাদ। নতুন ৩ খেলোয়াড়কে খেলায় এদিন কলকাতা। এদিন ফের ব্যর্থ কলকাতার মিডল অর্ডার। গোটা দলটা একটাই লোকের মুখের দিকে চেয়ে থাকে। তিনি আন্দ্রে রাসেল। তিনি খেললেন তো একটা জয়ের সম্ভাবনা তৈরি হল। আর তিনি ব্যর্থ তো গোটা দল ব্যর্থ। সেই সঙ্গে জঘন্য অধিনায়কত্ব। ব্যাটিং ধস। সব মিলিয়ে জঘন্য ব্যাটিং এবং বোলিংয়ের খেসারত গুণে গুণে দিতে হল কলকাতাকে। শাহরুখের দল পৌঁছে গেল খাদের কিনারায়। যেখান থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে প্রথম ৪টি দলের মধ্যে থাকা রীতিমত চ্যালেঞ্জিং হয়ে গেল।

টস জিতে এদিন হায়দরাবাদের রাজীব গান্ধী আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে বিকেলের রোদে কলকাতাকে ব্যাট করতে পাঠান সানরাইজার্স অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন। ব্যাট করতে নেমে এদিন যে শুরু ক্রিস লিন ও সুনীল নারিন দেন তা যে কোনও দলের জন্য স্বপ্ন। আড়াই ওভারে কলকাতার স্কোর ছিল ৪২ রান। এই অবস্থায় দাঁড়িয়ে মনে হতেই পারে যে এখান থেকে পরিকল্পনা সঠিক থাকলে ২০০ বা তার কাছাকাছি পৌঁছনো কোনও সমস্যার নয়। আর যেখানে এমন ঝোড়ো সূত্রপাত কপালে জুটেছে। এখানেই খলিলের বলে বোল্ড হয়ে যান পিঞ্চহিটার নারিন। ৭ বলে ২৫ রান করে ফেরা নারিন কিন্তু তাঁর কাজটা করে দিয়ে যান। নামেন শুভমান গিল। আর সঙ্গে সঙ্গে রান রেট পড়ে যায়।


শুভমান গিল ও ক্রিস লিন হঠাৎ কেমন যেন গুটিয়ে যান। শুভমান ৩ রান করে ফেরেন। নামেন নীতীশ রাণা। গত ম্যাচের কেকেআর হিরোকে নিয়ে তখন আশায় বুক বাঁধছিলেন কলকাতার সমর্থকেরা। আর তখনই ফের ধাক্কা। ১১ রানে ফেরেন নীতীশ রাণা। নামেন কলকাতার অধিনায়ক দীনেশ কার্তিক। যাঁর এই পুরো আইপিএলে কলকাতার জন্য কোনও অবদান নেই। আইপিএলের ৮টি দলের মধ্যে সবচেয়ে দুর্বল অধিনায়ক। নিজে খেলা তো দূরে থাক অধিনায়কত্বের অ-আ-ক-খ তাঁর তেমন জানা নেই বলেই ক্রিকেট বোদ্ধাদের একাংশের বক্তব্য।

তাঁর যা অবস্থা, তাতে তাঁর সরে গিয়ে দলে অন্য কারও জায়গা করে দেওয়া উচিত। সেখানে এদিন গুরুত্বপূর্ণ অবস্থায় ব্যাট করতে নামেন তিনি। তখন দলের দরকার ছিল একটা ভাল যুগলবন্দি। যারা রানের গিয়ার বদলাতে পারে। কিন্তু দীনেশ নিজের ফর্ম ধরে রেখে এদিনও ব্যর্থ। অপ্রয়োজনীয় রান নিতে গিয়ে রান আউট হন তিনি। প্রবল চাপে পড়ে কেকেআর। নামেন এদিন দলে জায়গা পাওয়া রিঙ্কু সিং।


রিঙ্কু সিং এবং ক্রিস লিন রান টানতে থাকেন। কিন্তু অত্যন্ত ধীর গতিতে। যে গতি টি-২০-তে চলে না। তবে এদিন একটা গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস উপহার দেন রিঙ্কু। যখন মারতে গিয়ে আউট হন তখন তাঁর চালিয়ে খেলা ছাড়া উপায় ছিলনা। ২৫ বলে ৩০ রান করে যান তিনি। নামেন রাসেল। আর রাসেল নামার পর ক্রিস লিন ফেরেন ৫১ রান করে। রাসেল এদিন তেমন খুলে খেলতে পারছিলেন না। ভুবনেশ্বর কুমারের বলে ২ খানা ছক্কা হাঁকালেও পরে ক্যাচ দিয়ে ফেলেন। রাসেল করেন ১৫ রান।

সব ম্যাচে একটা রাসেলের দিকে ভরসা করে গোটা দল চেয়ে থাকবে এটা হতে পারেনা। রাসেল একদিন আউট হতেই পারেন। আর সেটা এদিন হয়। রাসেল ফেরার পর পীযূষ চাওলা ১টি চার মারেন। আর দলে জায়গা পাওয়া অপরিচিত মুখ কারিয়াপ্পা একটি ছক্কা হাঁকান। কেকেআর ২০ ওভারের শেষে করে ১৫৯ রান।

নিজেদের মাঠ। তার ওপর মাত্র ১৬০ রানের লক্ষ্য। ফলে তাড়া করতে নেমে কোনও তাড়াহুড়ো হায়দরাবাদের ছিলনা। পেশাদার খেলোয়াড় এবং দারুণ হোমওয়ার্ক করা দলটা ২ নির্ভরযোগ্য ব্যাটসম্যান ডেভিড ওয়ার্নার ও জনি বেয়ারস্টোর হাত ধরে রান তুলতে থাকে। যে বলে বড় স্ট্রোক নেওয়া যায় সে বলে স্ট্রোক নিচ্ছিলেন। অপেক্ষায় ছিলেন কলকাতার কোন বোলার এদিন দুর্বল প্রমাণিত হয় সেজন্য।

এদিন আবার কলকাতার দলে ২ নতুন বোলারকে দেখা গেছে। ফাস্ট বোলার পৃথ্বীরাজ ও স্পিনার কারিয়াপ্পা। শোনা যাচ্ছিল কারিয়াপ্পা নাকি এক রহস্যময় বোলার। কিন্তু তাঁর কোনও রহস্যই এদিন ওয়ার্নার ও বেয়ারস্টোকে রুখতে পারেনি। বরং কারিয়াপ্পাকে এদিন তুলোধোনা করেন ২ জনে। হায়দরাবাদের জয় নিশ্চিত করে নেন তাদের ২ ওপেনার। ৩৮ বলে ৬৭ রান করে পৃথ্বী রাজের বলে বোল্ড হন ওয়ার্নার। তখন হায়দরাবাদের জয়ের জন্য দরকার ২৯ রান। এরপর জয় ছিল সময়ের অপেক্ষা।

জয়ের জন্য প্রয়োজনীয় রান মাত্র ১৫ ওভারেই তুলে নেয় হায়দরাবাদ। বেয়ারস্টো ৪৩ বল খেলে করেন ৮০ রান। শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকেন তিনি। কেন উইলিয়ামসন ৮ রান করে অপরাজিত থাকেন। কলকাতা ৩০ বল বাকি থাকতেই হারে ৯ উইকেটে। এদিনের হারের পর কার্যত প্রথম ৪-এ থাকা কলকাতার জন্য কঠিন হয়ে পড়ল।

Show Full Article

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button