খেলার তখন মাত্র ৩ ওভার বাকি। তখনও নাইটদের বড় সমর্থকও ভাবেননি ম্যাচটা জিতবে তাঁদের দল। শুধু একটাই ক্ষীণ আসা ছিল যে মাঠে তখনও আন্দ্রে রাসেল রয়েছেন। যিনি যে কোনও পরিস্থিতিতে খেলার মোড় ঘুরিয়ে দেওয়ার ক্ষমতা রাখেন। আর সেটাই হল। খাদের কিনারা থেকে কেকেআরকে টেনে তুলে আনলেন তিনি। ৪টে ছক্কা ও ৪টে চার হাঁকিয়ে ম্যাচ কেকেআরের পক্ষে এনে দিনের নায়ক হয়ে গেলেন রাসেল। সঙ্গে তরুণ প্রতিভা শুভমান গিল ২ খানা ছক্কা হাঁকিয়ে জয়টা আরও সহজ করে দেন।
রবিবার বিকেলে ইডেনে ঘরের মাঠে এবারের আইপিএলের প্রথম ম্যাচ খেলতে নামে কেকেআর। টস জিতে প্রতিপক্ষ সানরাইজার্সকে ব্যাট করতে পাঠান অধিনায়ক দীনেশ কার্তিক। খেলার শুরু থেকেই দুরন্ত খেলতে শুরু করেন ওয়ার্নার ও বেয়ারস্টো। এই ২ জনেই ১১৮ রান তুলে দেন। ১১৮ রানের মাথায় প্রথম উইকেট পড়ে হায়দরাবাদের। বেয়ারস্টো (৩৯) ফিরলেও ক্রিজে ভয়ংকর ব্যাটিং করতে থাকেন ডেভিড ওয়ার্নার। সঙ্গে ছিলেন বিজয় শঙ্কর। ওয়ার্নার (৮৫) আউট হওয়ার পর মাত্র ৫ রান করে ফেরেন কেকেআরের পুরনো সঙ্গী ইউসুফ পাঠান। শেষ পর্যন্ত ক্রিজে থাকেন বিজয় ও পাণ্ডে। ২০ ওভারে ১৮১ রান করে হায়দরাবাদ।
১৮২ রান করলে জিতবে, এই অবস্থায় ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই ক্রিস লিনের উইকেট হারায় কেকেআর। হাল ধরেন নীতীশ রাণা ও রবীন উত্থাপ্পা। উত্থাপ্পা ৩৫ রান করে ফেরার পর অধিনায়ক দীনেশ কার্তিক দ্রুত ক্যাচ তুলে ফেরেন মাত্র ৫ রান করে। চাপে পড়ে যায় কেকেআর।
নীতীশ ও রাসেল মিলে খেলাটা সম্পূর্ণ হাতের বাইরে যেতে দেননি। যদিও প্রয়োজনীয় রান রেট বাড়তে বাড়তে একসময়ে ওভার পিছু ১৩ রানেরও ওপর চলে যায়। হাতেও তখন ৪-৫ ওভার। এই অবস্থায় নীতীশ আউট হওয়ার পর রাসেল ও শুভমান গিল কেকেআরের হয়ে লড়াই শুরু করেন। যদিও রান রেট উঠছিলনা।
রাসেলও প্রথম দিকে তেমন চালিয়ে খেলতে পারছিলেন না। কিন্তু ঠিক সময়ে পারলেন। আর যখন পারলেন তখন তাঁর বিধ্বংসী রূপটা দেখিয়ে দিলেন। গোটা ইডেন তখন আনন্দে আত্মহারা। শুধু উল্লাসের কোরাস। এক একটা ছক্কা হচ্ছে আর ইডেন ফেটে পড়ছে। অবশেষে ২ বল বাকি থাকতেই ম্যাচ জিতে নেয় কেকেআর। ম্যাচের সেরা হন আন্দ্রে রাসেল (৪৯ অপরাজিত)। যদিও রানের দিক থেকে তাঁর চেয়ে এগিয়ে ছিলেন ওয়ার্নার (৮৫) ও নীতীশ (৬৩)। কিন্তু কথায় বলে ওস্তাদের মার শেষ রাতে। আর সেটা দেখিয়েই ম্যাচের সেরা হলেন রাসেল।