গোটা আইপিএল-এ তাঁকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। মাত্র ১টা ম্যাচে রান পেয়েছিলেন কলকাতার অধিনায়ক দীনেশ কার্তিক। সেই দীনেশ কার্তিক বৃহস্পতিবার কলকাতার ত্রাতা হয়ে দাঁড়ালেন। কিন্তু দীনেশের সেই ৯৭ রানের ইনিংসও কাজে এলনা। এর কারণ কলকাতার জঘন্য বোলিং এবং দীনেশ কার্তিকের অধিনায়কত্বে ত্রুটি। খাদের কিনারায় এনে ফেলা রাজস্থানকে ম্যাচ ঘোরানোর সুযোগ করে দিল কলকাতার বোলাররা।
শেষ ওভারে তবু একটা লড়াই দেওয়ার সুযোগ ছিল। কিন্তু প্রসিদ্ধ কৃষ্ণর মত বোলারকে বল দিয়ে সেই সম্ভাবনাতেও জল ঢেলে দিলেন দীনেশ। একেবারেই ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলা একজন সাধারণ বোলারের হাতে এত বড় দায়িত্ব দেওয়ার আগে হয়ত কার্লোস ব্রেথওয়েটের কথা ভাবতে পারতেন তিনি।
ইডেন গার্ডেনে টস জিতে এদিন প্রথমে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেন রাজস্থানের অধিনায়ক স্টিভ স্মিথ। শুরুতেই ০ রানে ফেরেন ক্রিস লিন। দ্রুত ফেরেন শুভমান গিলও। ১৪ রান করে। তারপর নীতীশ রাণাও ২১ রান করে প্যাভিলিয়নমুখো হন। চাপে পড়া কেকেআর রান তুলতেই পারছিলনা। ১০ ওভারে কেকেআর তোলে মাত্র ৪৯ রান। এখানেই ম্যাচটা প্রায় হেরে গিয়েছিল তারা। কিন্তু সেখান থেকে ঘুরতে শুরু করে খেলা। শ্রেয়স গোপালের একটা ওভারে আসে ২৫ রান। কিছুটা খেলায় ফেরে কেকেআর।
ব্যাটিং করছিলেন দীনেশ কার্তিক ও নারিন। কিন্তু তারপরেই দীনেশের ভুলে আউট হন সুনীল নারিন। নামেন রাসেল। গোটা ইডেন শিরদাঁড়া সোজা করে বসে পড়ে। এবার শুরু হবে মারকাটারি ব্যাটিং। কিন্তু কব্জির সমস্যায় জর্জরিত রাসেল এদিন ব্যাট করতেই পারছিলেন না। মাত্র ১৪ রান করে ফেরেন তিনি। খেলাকে শেষ পর্যন্ত একার কাঁধেই টানেন দীনেশ। ৯৭ রান করেন তিনি। কলকাতা ২০ ওভারে করে ১৭৫ রান।
রান তাড়া করতে নেমে ফাস্ট বোলারদের ভাল খেললেও স্পিনারদের সামনে কার্যত অসহায় হয়ে পড়ে রাজস্থান। সুনীল নারিন ও পীযূষ চাওলা ভয়ংকর হয়ে ওঠেন। ফলে ৩৪ রান করে দলকে সুন্দর একটা শুরু দিয়ে অজিঙ্কা রাহানে আউট হওয়ার পর থেকেই রাজস্থান ব্যাটসম্যানেরা ফিরতে থাকেন। সঞ্জু স্যামসন ২২ রান করে, স্মিথ ২ রান করে, স্টোকস ১১ রান করে, বিনি ১১ রান করে ফেরার পর কার্যত হাতছাড়া হতে থাকা ম্যাচকে ঘোরাতে থাকেন পরাগ ও শ্রেয়স গোপাল।
পরাগের একটা ক্যাচ অবশ্য সুনীল নারিন হাতছাড়া করেন। তখন হয়ত বোঝেননি ক্যাচ ফস্কে আসলে ম্যাচ ফস্কাল কেকেআর। কারণ এই পরাগই এদিন রাজস্থানের জয়ের নায়ক হয়ে রইলেন। মাত্র ১৭ বছরের একটা ছেলে কেকেআরের বোলিং নিয়ে ছেলেখেলা করলেন। নিজের দলকে জয়ের দিকে টেনে নিয়ে গেলেন। আর নির্ভয়ে বড় শট মারলেন।
৪৭ রান করে পরাগ ফেরার পর আর্চার ম্যাচটা শেষ করেন। এদিন শুরু থেকেই মারমুখী আর্চার শেষ ওভারে দুর্বল প্রসিদ্ধ কৃষ্ণকে সামনে পান। ফলে প্রথম বলে ৪ ও দ্বিতীয় বলে ছক্কা হাঁকিয়ে ম্যাচ জিতে নেন। ৪ ওভার বল করে ১টা মেডেন নিয়ে ২০ রান দিয়ে ২ উইকেট তুলে ম্যাচের সেরা হন রাজস্থানের বরুণ অ্যারন। এদিনের হারের পর কার্যত প্রথম ৪-এ কলকাতার থাকার সম্ভাবনা ক্ষীণ হয়ে গেল।