মুম্বই জিতলেই প্লে অফে। আর হায়দরাবাদের জন্য প্লে অফে যেতে এই ম্যাচটা জিতে রাখা জরুরি ছিল। এমন অবস্থায় ওয়াংখেড়ের পিচে ২টো দলই দাঁত কামড়ে লড়াই করতে নামে। ২টো দলই যে জিততে তাদের সবটুকু উজাড় করেছে তা বোঝা গেল খেলার রুদ্ধশ্বাস পরিস্থিতি দেখে। খেলা টাই হল। তারপর সুপার ওভার। এবারের আইপিএলে দ্বিতীয় সুপার ওভার।
প্রথমটা হয়েছিল দিল্লি ও কলকাতার মধ্যে। যাতে হারে কলকাতা। বৃহস্পতিবার সুপার ওভারে অবশ্য বাজিমাত করে মুম্বই। ম্যাচ জিতে তৃতীয় দল হিসাবে আইপিএলের প্লে অফের টিকিট এক ম্যাচ বাকি থাকতেই পাকা করে নিল তারা। ইতিমধ্যেই প্লে অফে উঠে বসে আছে দিল্লি ও চেন্নাই। চতুর্থ দল কে হবে তার জন্য এখন লড়বে হায়দরাবাদ, পঞ্জাব ও কলকাতা।
বৃহস্পতিবার টস জিতে ঘরের মাঠে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয় মুম্বই। রোহিত শর্মা ২৪ রান করে ফেরেন। এরপর ডি কক ও সূর্যকুমার যাদব ভাল ব্যাট করে রান অনেকটা এগিয়ে দেন। যাদব ২৩ রান করে ফেরেন। এরপর মাত্র ১ রান করে আউট হন লিউইস। ডি কক তখনও পিচে একদিক ধরে রেখেছেন। হার্দিক পাণ্ডিয়া ১৮ রান করে আউট হওয়ার পর ডি ককের সঙ্গে জুটি বাঁধেন পোলার্ড। তবে পোলার্ড ফেরেন ১০ রান করে। ক্রুণাল পাণ্ডিয়াকে সঙ্গে করে ম্যাচের শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থেকে ডি কক করেন ৬৯ রান। মু্ম্বই তোলে ১৬২ রান।
১৬৩ করলে জিতবে এই অবস্থায় ব্যাট করতে নামে হায়দরাবাদ। দলের ব্যাটিংয়ের ২ প্রধান স্তম্ভ ডেভিড ওয়ার্নার ও বেয়ারস্টো, ২ জনেই বিশ্বকাপের জন্য দেশে ফিরেছেন। এই অবস্থায় ব্যাটিং লাইনআপে কিছুটা দুর্বলতা তো ছিলই। ওপেন করতে নামে ঋদ্ধিমান সাহা ও গুপতিল। ঋদ্ধি ২৫ রান করে আউট হন। গুপতিল ফেরেন ১৫ রান করে। উইলিয়ামসন ৩ ও বিজয় শঙ্কর ১২ রান করে আউট হন। ক্রমশ চাপ বাড়তে থাকে হায়দরাবাদের ওপর। উইকেট হারাতে থাকলে যে এই ম্যাচ হাতের বাইরে চলে যাবে তা পরিস্কার হয়ে যায়।
২ রান করে অভিষেক শর্মা যখন ফেরেন তখন অনেকেই মনে করেছিলেন আর ম্যাচটার কিছু নেই। কিন্তু ক্রিকেট অনেক ম্যাজিক দেখায়। এখান থেকে খেলা ঘোরান মহম্মদ নবি ও ফর্মে থাকা মণীশ পাণ্ডের ব্যাট। নবি যখন ফেরেন তখন ম্যাচ রুদ্ধশ্বাস পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে। হায়দরাবাদের জয়ের জন্য দরকার ৯ রান। হাতে ২ বল।
হার্দিকের একটি বল চার মারার চেষ্টা করলেও তা মাঠেই আটকে দেন রোহিত। হায়দরাবাদ ২ রান করে। এবার দাঁড়ায় ১ বলে ৭ রান করলে জিতবে। এই অবস্থায় বল সঠিক হলে সর্বোচ্চ ম্যাচ টাই করা যায়। শেষ বলে ছক্কা হাঁকিয়ে সকলকে অবাক করে সেটাই করে দেখান মণীশ পাণ্ডে।
ম্যাচ টাই হওয়ায় খেলা গড়ায় সুপার ওভারে। সুপার ওভারের নিয়ম হল ১ ওভার করে ২ দল খেলবে। যারা পরে ব্যাট করছে তারা প্রথমে ব্যাট করবে। তাই হয়। কিন্তু ব্যাট করতে নেমে বুমরাহর প্রথম বলেই মণীশ ২ রান নিতে গিয়ে রান আউট হন। গুপতিল নেমে ১ রান নেন। এরপর নবি একটি ছক্কা হাঁকান তৃতীয় বলে। কিন্তু তার পরের বলে বোল্ড হয়ে যান।
৪ বল খেলে হায়দরাবাদ করে ৮ রান। ৯ রান করলে জিতবে এই অবস্থায় ব্যাট করতে নেমে হার্দিক পাণ্ডিয়া রশিদ খানের প্রথম বলেই ছক্কা হাঁকান। পরের বলে নেন ১ রান। ৪ বলে ২ রান দরকার। এই অবস্থায় পোলার্ড তৃতীয় বলেই ২ রান নিয়ে ম্যাচ জিতে যান। ম্যাচের সেরা হন যশপ্রীত বুমরাহ।