টানা ৬ ম্যাচ হারার পর প্লে অফে যাওয়ার জন্য কেকেআরের জন্য বাকি ৩ ম্যাচই ডেথ ম্যাচ হয়ে দাঁড়ায়। তার প্রথম ২টি জিতে নিয়েছে তারা। আর বাকি ১টি ম্যাচ। মুম্বইয়ের সঙ্গে। সেই ম্যাচে মুম্বইকে হারাতে পারলেই প্লে অফে পৌঁছনোর রাস্তা অনেকটা পাকা কেকেআরের। ফলে মোহালিতে শুক্রবার সন্ধেয় তাদের ম্যাচ জিততেই হত। অন্যদিকে ঠিক একই অবস্থায় দাঁড়িয়েছিল পঞ্জাবও। তাদের জন্যেও এই ম্যাচ ছিল ডেথ ম্যাচ। সেই ম্যাচে অবশেষে তারা ৭ উইকেটে হারল। ২ ওভার বাকি থাকতেই ম্যাচ জিতে নিল কলকাতা।
মোহালিতে শুক্রবার সন্ধেয় টস জিতে প্রথমে কিংস ইলেভেন পঞ্জাবকে ব্যাট করতে পাঠান কেকেআর অধিনায়ক দীনেশ কার্তিক। ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই কেএল রাহুলের মত নির্ভরযোগ্য ব্যাটসম্যানের উইকেট হারায় পঞ্জাব। রাহুল ২ রানে ফেরার পর কিছুটা লড়েন ক্রিস গেইল। কিন্তু তিনিও ১৪ রান করে প্যাভিলিয়নমুখো হন।
পঞ্জাবের ২ মহারথীকে দ্রুত ফিরিয়ে কেকেআর যখন কিছুটা স্বস্তিতে ঠিক তখনই পুরান ও মায়াঙ্ক আগরওয়ালের ব্যাট কথা বলতে শুরু করে। বিশেষত পুরানের ব্যাট থেকে পরপর বড় শট আসতে থাকে। যা পঞ্জাবের রানের মিটার তরতরিয়ে তুলে নিয়ে যেতে থাকে। ২৭ বলে ৪৮ রান করে ফেরেন পুরান।
পুরান ফেরার পর মনদীপকে নিয়ে কিছুটা লড়াই দেওয়ার পর ফেরেন সেট ব্যাটসম্যান মায়াঙ্কও। মায়াঙ্ক করেন ৩৬ রান। মনদীপ সিংও চেনা মাঠে দারুণ খেলে করেন ২৫ রান। কিন্তু এদিন পঞ্জাবকে যদি কেউ খেলায় ফিরিয়ে আনেন তাহলে তিনি হলেন ইংল্যান্ডের অলরাউন্ডার কুরান। স্যাম কুরান শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থেকে করেন ৫৫ রান। তাও মাত্র ২৪ বলে। ২০ তম ওভারে গর্নির বলে একাই ২২ রান তোলেন তিনি। ১৮৩ রান করে কেকেআরের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেয় পঞ্জাব।
ব্যাট করতে নেমে এদিন বড় রান তাড়া করার কথা মাথায় রেখে শুরুটা ধীরে করে কেকেআর। শুভমান গিল ও ক্রিস লিন চোখ সেট করেই শুরু করেন মার। শুভমান ধরে খেললেও ক্রিস লিনের ব্যাট বিধ্বংসী মেজাজে চলতে থাকে। লিন এদিন মাত্র ২২ বলে ৪৬ রান করেন। যার মধ্যে ৩টি ছক্কা ও ৫টি ৪ হাঁকান তিনি। এরপর ব্যাট করতে নেমে শুভমানের সঙ্গে জুটি বাঁধেন উত্থাপ্পা।
উত্থাপ্পা এদিন শুরু থেকেই চালিয়ে খেলার মেজাজে ছিলেন। ১৪ বলে ২২ রান করে আউট হন তিনি। কিন্তু শুভমান গিল দায়িত্ব নিয়ে এক দিক ধরে রাখেন। উত্থাপ্পা ফেরার পর শুভমানের সঙ্গে জুটি বাঁধেন আন্দ্রে রাসেল। রাসেলও তাঁর সেই মূর্তি ধারণ করেন। ২টি ছক্কা ও ২টি চার হাঁকান। কিন্তু তারপর ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে মোহালির বিশাল মাঠে ধরা পড়ে যান। তাঁর ক্যাচ একবার মায়াঙ্ক আগরওয়াল হাতছাড়া করলেও এবার অ্যান্ড্রু টাই করেননি।
যদিও রাসেল যখন ফেরেন তখন ম্যাচ কেকেআরের হাতের মুঠোয়। কিন্তু শুভমান তখনও নিজের কাজ করে যাচ্ছেন। কেকেআরকে ম্যাচে ধরে রেখেছেন। চালাচ্ছেন ব্যাট। ছক্কা, চার হাঁকাচ্ছেন। কিন্তু হঠকারী শট থেকে নিজেকে দূরে রাখছেন। শুভমানের সঙ্গে শেষে জুটি বেঁধে ২ ওভার বাকি থাকতেই ১৮৪ রানে লক্ষ্য পুরো করে ফেলেন কার্তিক। শুভমান ৬৫ রান করে অপরাজিত থাকেন। ২টি ছক্কা ও ৫টি চার মারেন তিনি।
কার্তিক ৯ বলে ২১ রান করেন। শুভমান গিল ম্যান অফ দ্যা ম্যাচ হন। আইপিএলে এই প্রথম শুভমান কোনও ম্যাচে ম্যান অফ দ্যা ম্যাচ হলেন। কলকাতার পরের খেলা মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে ওয়াংখেড়েতে। আগামী রবিবার সন্ধেয়। ওই ম্যাচই হবে চলতি আইপিএলের লিগ পর্যায়ের শেষ ম্যাচ।