দীনেশ কার্তিকের ভুলের খেসারত দিল কলকাতা
শারজার ছোট মাঠে জয়ের জন্য যা দরকার ছিল সেটা দীনেশ কার্তিকের পক্ষেই গিয়েছিল। কিন্তু তাঁর ভুল সিদ্ধান্তে ম্যাচ হারল কলকাতা।
শারজা : ছোট মাঠে রানের পাহাড় তৈরি করা যায়। সেই সুযোগ সবচেয়ে বেশি থাকে প্রথমেই ব্যাট করলে। টস জিতে সেই সুযোগটা হাতে পেয়ে গিয়েছিলেন কলকাতা নাইট রাইডার্সের অধিনায়ক দীনেশ কার্তিক। কিন্তু সেখানে প্রথমে ব্যাট না নিয়ে প্রথমে বল করার সিদ্ধান্ত নেন দীনেশ। যার ফল হয় মারাত্মক।
প্রথমে ব্যাট করতে নেমে শারজার ছোট মাঠে ঝোড়ো ইনিংস খেলতে থাকেন দিল্লি ক্যাপিটালসের খেলোয়াড়েরা। যা দিনের শেষে এক পাহাড় প্রমাণ স্কোর খাড়া করতে সাহায্য করে তাদের। সঙ্গে ছিল দিল্লির অধিনায়কের অধিনায়কোচিত ইনিংস। যা কলকাতার অধিনায়ক গত সিজন বা এ সিজনে দেখাতে পারেনি।
প্রথমে ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই চালিয়ে খেলা শুরু করেন দিল্লির শিখর ধাওয়ান ও পৃথ্বী শ। রান বাড়তে থাকে। ২৬ রান করে ফেরেন ধাওয়ান।
পৃথ্বী শ ৬৬ রান করেন মাত্র ৪১ বল খেলে। কিন্তু এদিন দিল্লির সবচেয়ে নজরকাড়া ব্যাটিং করেন শ্রেয়স আইয়ার। তাঁর ব্যাটিং তাণ্ডবে কলকাতার বোলিং আক্রমণ সম্পূর্ণ মুখ থুবড়ে পড়ে। মাত্র ৩৮ বল খেলে শ্রেয়স করেন ৮৮ রান। ঋষভ পন্থ ৩৮ রান করেন। ২২৮ রানে শেষ করে দিল্লি।
২২৯ রানের পাহাড় প্রমাণ টার্গেট তাড়া করতে নেমে চূড়ান্ত ব্যর্থ কলকাতার ব্যাটিং লাইন আপ। সুনীল নারিন না তো বোলিংয়ে নিজের সেই পুরনো মেজাজ দেখাতে পারছেন, না পারছেন প্রথমে নেমে সেই ঝোড়ো ব্যাটিং করতে। পরপর ম্যাচে ব্যর্থ নারিনকে সুযোগ দিয়েই চলেছে কলকাতা। আর নারিন ব্যর্থ হয়েই চলেছেন। এদিনও রান আসেনি তাঁর ব্যাট থেকে।
শুভমান গিল বা নীতীশ রাণা চেষ্টা করেন কিছুটা। তবে এদিন শুভমানের ব্যাট চলেনি। নারিন ৩ ও শুভমান ২৮ রান করে ফেরে। বিশাল রান তাড়া করে যদিও বা জেতার ক্ষীণ আশা জেগেছিল রাসেলের মুখের দিকে তাকিয়ে, কিন্তু তিনিও ব্যর্থ। ১৩ রান করে ফেরেন রাসেল।
এখানেই মোটামুটি খেলার ভবিষ্যৎ পরিস্কার হয়ে যায়। আরও পরিস্কার হয় কলকাতার হয়ে একমাত্র কিছুটা লড়াই দেওয়া নীতীশ রাণা ও দীনেশ কার্তিকের পরপর ২ বলে আউট হওয়ার পর। হর্ষল প্যাটেলের পরপর ২ বলে ২ উইকেট পড়ার পর খেলার আর কিছুই বাকি ছিলনা। আর ঠিক সেখান থেকে খেলা ঘোরাতে থাকেন মর্গান ও রাহুল ত্রিপাঠী।
২ জনের ব্যাটিং তাণ্ডবে ডাহা হারা ম্যাচে আচমকা জীবন ফিরে আসে। মুষড়ে পড়া কেকেআর ফ্যানেরা গা ঝাড়া দিয়ে উঠে বসেন। একটা সময় দাঁড়ায় যখন পরপর ছক্কা হাঁকানোর দৌলতে ১২ বলে করতে হত ৩১ রান। এই পরিস্থিতিতে দিল্লির ডাগআউটেও হাসি মুছে থমথমে ভাব নেমে আসে। কারণ শারজার মত ছোট মাঠে ১২ বলে ৩১ রান অসম্ভব নয়।
এখানেই আনরিখ নোরটিয়ে-র বল কাজ করে যায়। মর্গানকে ফেরান তিনি। রানের তুফান থেমে যায়। পরের ওভারে রাহুল ত্রিপাঠী ফেরার পর আর খেলায় কিছু ছিলনা। দিল্লি জেতে ১৮ রানে। ২১০ রান করে কলকাতা। যা তাদের রান রেটকে তলানিতে পাঠাবে না।
এদিনও দিল্লির অধিনায়ক যখন ম্যাচ উইনিং ব্যাটিং করে যাচ্ছেন, তখন একের পর এক ম্যাচে চূড়ান্ত ব্যর্থ দীনেশ কার্তিক। এদিন যখন তাঁর দায়িত্ব নিয়ে ব্যাটিং করার কথা, সেখানে মাত্র ৬ রান করে ফেরেন দীনেশ। এখানেই প্রশ্ন উঠছে দীনেশ কার্তিকের হাতেই কী অধিনায়কের দায়িত্ব থাকা উচিত?
এমনকি দীনেশ কার্তিকের মত চূড়ান্ত ব্যর্থ একজন খেলোয়াড়কে প্রতি ম্যাচে খেলিয়ে আদৌ কী কোনও লাভ হচ্ছে? ফর্মে না থাকা দীনেশ ও নারিনকে বাদ দিয়ে অন্য খেলোয়াড় খেলিয়ে মর্গানকে দিয়ে অধিনায়কত্ব কলকাতার ভবিষ্যৎ বদলাতে পারে বলেই মনে করছেন অনেক ক্রিকেট বিশেষজ্ঞ।