Sports

ইঞ্চির জন্য জিতল কলকাতা

কলকাতা নাইট রাইডার্সের বিরুদ্ধে জেতা ম্যাচ হারল কিংস ইলেভেন পঞ্জাব। ইঞ্চির ফারাকে ম্যাচ জিতে নিল কলকাতা। দুর্ভাগ্যের হার হারল পঞ্জাব।

আবুধাবি : ম্যাচ যে পঞ্জাব হারতে পারে তা কলকাতার কট্টর অনুরাগীও ৯ বল বাকি থাকতে বলবেন না। কারণ ম্যাচের ৯ বল বাকি থাকা অবস্থাতেও ম্যাচটা পঞ্জাবের জয়ের অপেক্ষায় ছিল।

এই ম্যাচ যে কলকাতা জিততে পারে তা হয়তো কলকাতার ডাগ আউট থেকে মাঠের খেলোয়াড়রা, কেউ ভাবেননি। কিন্তু কথায় বলে ক্রিকেটে শেষ বল পর্যন্তও যে কোনও কিছু ঘটতে পারে। আর ঠিক সেটাই ঘটল এদিন মাঠে।


কলকাতা এদিন ম্যাচে জয়ের গন্ধ পেয়েছে কার্যত শেষ ওভার করা বাকি থাকতে। কিন্তু তাও ঘুরিয়ে দিয়েছিলেন ম্যাক্সওয়েল। শেষ বলে জয়ের জন্য দরকার ছিল ৭ রানের। যা ঠিক বল করলে অসম্ভব। কিন্তু টাই তো হতে পারত। ছক্কা হাঁকালেই হত।

সেটা করেও ফেলেছিলেন ম্যাক্সওয়েল। কিন্তু হয়তো ভাগ্য সহায় ছিলনা। বল গিয়ে পড়ল বাউন্ডারি লাইনের মাত্র ইঞ্চির ফারাকে মাঠের মধ্যে। ইঞ্চি নাকি সেন্টিমিটার তা নিয়েও তর্ক চলছে।


আম্পায়ার পর্যন্ত থার্ড আম্পায়ারকে দিয়ে নিশ্চিত হয়ে নেন যে বল বাউন্ডারি লাইনের বাইরে পড়েছে নাকি ভিতরে। চোখে দেখে বোঝার উপায় ছিলনা ওটা ছক্কা না চার। কিন্তু ওই ইঞ্চির ফারাকে হল চার। ম্যাচ ২ রানে জিতে নিল কলকাতা।

আবুধাবির মাঠে টস জিতে এদিন প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয় কলকাতা। কিন্তু শুরুতেই পরপর ২টো উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায়।

প্রথম ৬ ওভারে মাত্র ২৫ রানই তুলতে পারে কলকাতা। তাও ২ উইকেট হারিয়ে। এই অবস্থায় খেলার হাল ধরেন মর্গান ও শুভমান গিল। তাতে উইকেট পড়া আটকায় ঠিকই কিন্তু রানও আটকে যায়।

এদিন ইয়ন মর্গান ফেরার পর মাঠে নামেন অধিনায়ক দীনেশ কার্তিক। যাঁর ব্যাট থেকে এতদিন কোনও রান আসেনি। তবে এদিন দীনেশের ব্যাট কথা বলতে শুরু করে। কলকাতার ম্যাচে প্রাণ ফিরে আসে দীনেশ কার্তিকের ধুন্ধুমার ব্যাটিংয়ে।

শুভমান গিল ও দীনেশ কার্তিক মিলেই এদিন কলকাতাকে একটা লড়াই দেওয়ার মত জায়গায় নিয়ে যান। ১০ ওভারের পর ৬৩ রানে থাকা কলকাতা এদিন একটা সময় ১৮০ রান তোলার কথাও ভাবছিল।

কিন্তু শুভমান ফেরার পর আন্দ্রে রাসেল ফের ব্যর্থ হন। শেষ ২ ওভারে বোলিংও ভাল করে পঞ্জাব। ফলে ২০ ওভারে ১৬৪ রানেই শেষ হয় কলকাতার ইনিংস।

১৬৫ রান তাড়া করতে নেমে এদিন দ্বিতীয় ওভারেই চাপে পড়ে যেতে পারত পঞ্জাব। পঞ্জাবের সবচেয়ে বড় ব্যাটিং ভরসা কেএল রাহুল বল তুলে দেন। যে বল হাতে পেয়েও ফস্কান রাসেল।

নিশ্চিত উইকেট হাতছাড়া হয় কলকাতার। এরপর পুরো ম্যাচটাই চলেছে এক তরফা। রাহুল আর মায়াঙ্কই ম্যাচ জেতার পুরো পরিস্থিতি তৈরি করে দেন।

১৫ তম ওভারে মায়াঙ্ক যখন ফেরেন তখন পঞ্জাবের স্কোর বোর্ডে ১১৫ রান। বাকি ছিল ৫০ রান তোলা। তাও মাত্র ৩৪ বলে।

রাহুলের সঙ্গে নিকোলাস পুরান নেমেও চালিয়ে খেলছিলেন। রান উঠছিল দ্রুত। ১৪৪ রানে পুরান ফেরেন। নামেন প্রভসিমরন সিং। তখন ১৬ বলে তুলতে হবে ২১ রান।

মাঠে রয়েছেন রাহুল। নামা বাকি ম্যাক্সওয়েলের। ৯ বলে ১৬ রান করতে হবে। এই অবস্থায় ক্যাচ তুলে ফেরেন সিং। নামেন ম্যাক্সওয়েল।

ওই ওভারের শেষ বলে ৭৪ রান করে বোল্ড হন কেএল রাহুল। সেট ব্যাটসম্যান এবং ডেঞ্জার ম্যান রাহুল ফিরতেই কলকাতার শিবির যেন কোথাও একটা জয়ের গন্ধ পেতে শুরু করে। যা তারা ১ বল আগেও পাচ্ছিল না।

শেষ ওভারে ১৪ রান করতে হবে। এই অবস্থায় ম্যাক্সওয়েল ও মনদীপ সিং ব্যাটে লড়াই শুরু করেন। বল হাতে ছিল সুনীল নারিনের।

এখান থেকে ম্যাক্সওয়েল একটা চার ও বাকিটা সিঙ্গেলস নেওয়ায় ম্যাচ দাঁড়ায় ২ বলে করতে হবে ৭ রান। এখানে মনদীপ ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে ক্যাচ তুলে ফেরেন। ফলে শেষ ১ বলে ৭ রান করতে হবে জিততে গেলে। এই অবস্থায় ম্যাচ গিয়ে দাঁড়ায়। আর সেখানেই শেষ বলে প্রায় ছক্কা হাঁকিয়ে দিয়ে ম্যাচ টাই করে দিয়েছিলেন ম্যাক্সওয়েল। যা ইঞ্চির ফারাকে মাঠের মধ্যে ড্রপ খায়। বাউন্ডারি পান ম্যাক্সওয়েল।

রূপকথার মত ম্যাচ জিতে যায় কলকাতা। ম্যান অফ দ্যা ম্যাচ হন দীনেশ কার্তিক। দুর্ভাগ্যের হার হেরে পঞ্জাব লিগ টেবিলে ৭ ম্যাচ খেলে ৬টা হেরে তলাতেই রয়ে গেল। কলকাতা পৌঁছে গেল লিগ টেবিলের ৩ নম্বরে।

Show Full Article

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button