Sports

ফার্গুসন ম্যাজিকে সুপার ওভারে কলকাতার রুদ্ধশ্বাস জয়

হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে কার্যত ফ্যান্টমের ভূমিকা নিলেন ফার্গুসন। গত ৮টা ম্যাচে ফার্গুসনকে দলে নেয়নি কেকেআর। নবম ম্যাচে সুযোগ পেয়েই সুপারম্যান ফার্গুসন।

আবুধাবি : লকি ফার্গুসনকে গত ৮টা ম্যাচে ডাগ আউটে বসিয়ে রেখেছিল কলকাতা নাইট রাইডার্স। এদিন দলে তাঁকে জায়গা দেন মর্গান। এদিন কুলদীপ যাদবকেও দলে ফেরানো হয়।

এদিন সেই ফার্গুসন দেখিয়ে দিলেন তিনি কী পারেন! কার্যত এদিন একাই কলকাতাকে ম্যাচটা জিতিয়ে দেন তিনি। কারণ বাকিদের পারফরমেন্স কখনই জেতার মত ছিলনা। সুপার ওভারে গড়ানো ম্যাচেও অসামান্য ফার্গুসন। ম্যাচের সেরাও হন তিনি।


টস জিতে এদিন কলকাতাকে ব্যাট করতে পাঠান হায়দরাবাদের অধিনায়ক ডেভিড ওয়ার্নার। এদিন বড় রানের সুযোগ ছিল কলকাতার সামনে। কিন্তু শুরু থেকেই সেভাবে রান করতে পারেননি শুভমান গিল, রাহুল ত্রিপাঠীরা। চেষ্টা কিছুটা করেছেন। কিন্তু রান আসেনি।

এই রানের খরাটা কিন্তু পুরো ম্যাচ জুড়েই থেকে যায়। মাঝে পরপর উইকেট পতন আরও সমস্যায় ফেলে দেয় কলকাতাকে। এদিন কলকাতা ১৬৩ রান যে করে তা মূলত অধিনায়ক মর্গান ও পূর্ব অধিনায়ক দীনেশ কার্তিকের ব্যাটে ভরসা করে।


এদিনও ব্যর্থ রাসেল। শেষের দিকে মর্গান ও দীনেশের ব্যাট কিছুটা আক্রমণাত্মক হয়ে খেলার মোড় ঘোরায়। একটা চ্যালেঞ্জিং স্কোর তৈরি করে।

জিততে গেলে ১৬৪ রান করতে হবে। এই অবস্থায় ব্যাট করতে নেমে প্রথম থেকে চালিয়ে খেলা শুরু করেন বেয়ারস্টো ও উইলিয়ামসন। এদিন বেয়ারস্টোর সঙ্গে ওয়ার্নারের বদলে নামেন উইলিয়ামসন।

উইলিয়ামসন ও বেয়ারস্টোর ব্যাটে ভরসা করে পাওয়ার প্লে-তে প্রায় ৬০-এর কাছে রান তোলে সানরাইজার্স হায়দরাবাদ। এই অবস্থায় বল করতে আসেন এই সিজনে কলকাতার দলে প্রথম খেলতে নামা ফার্গুসন।

প্রথম বলেই উইলিয়ামসনকে ফিরিয়ে ফার্গুসন বুঝিয়ে দেন তিনি এদিন সহজে কাউকে ব্যাট ঘোরাতে দেবেন না। উইলিয়ামসন ফেরার পর নামেন প্রিয়ম গর্গ। যাঁর হাতে এদিন সেরা ২টি ক্যাচ জমা পরেছিল কলকাতার। সেই গর্গকে তাঁর দ্বিতীয় ওভারেই বল করতে এসে বোল্ড করেন ফার্গুসন।

এরপর মণীশ পাণ্ডের উইকেট তুলে নিয়ে কার্যত ফার্গুসন হায়দরাবাদের ব্যাটিংয়ে ফাটল ধরিয়ে দেন। ৪ ওভার বল করে মাত্র ১৫ রান দিয়ে ফার্গুসন তুলে নেন ৩ উইকেট। দুরন্ত স্পেলে বল করার পরও অন্য বোলারদের দুর্বলতাকে কাজে লাগিয়ে হায়দরাবাদ ফের জয়ের দরজায় পৌঁছে যায়।

শেষের আগের ওভারের শেষ বলে সামাদের জোড়াল শট প্রায় ছক্কা হয় এমন অবস্থায় বলটা একদম বাউন্ডারি লাইনের কাছে ধরে নেন ফার্গুসন। কিন্তু বুঝতে পারেন টাল সামলানো মুশকিল। তাই বল ছুঁড়ে দেন। বল ধরেন পাশে দাঁড়ানো শুভমান গিল। ফার্গুসন তখন বাউন্ডারির মধ্যে ঢুকে গেছেন।

এমন এক অসামান্য ক্যাচ ফের ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে কেকেআর-এর সামনে জয়ের সুযোগ খুলে দেয়। কিন্তু শেষে ওভারে ৩টি চার মেরে খেলা ফের নিজেদের দিকে নিয়ে আসেন ডেভিড ওয়ার্নার।

শেষ বলে জয়ের জন্য দরকার ছিল ২ রানের। কিন্তু সেই ২ রান করতে পারেনি হায়দরাবাদ। ১ রান পায় দল। খেলা টাই হয়। অর্থাৎ সুপার ওভারে গড়ায় ম্যাচ।

সুপার ওভারে হায়দরাবাদের হয়ে ব্যাট করতে নামেন ওয়ার্নার ও বেয়ারস্টো। কলকাতা তাদের এদিনের একমাত্র পরিত্রাতা ফার্গুসনের হাতে প্রায় চোখ বন্ধ করে বল তুলে দেয়।

প্রথম বলেই বড় রানের শট মারতে যান বেয়ারস্টো। কিন্তু আবার ভেল্কি দেখায় ফার্গুসনের বল। উইকেট ভেঙে ফিরিয়ে দেয় বেয়ারস্টোকে। রুদ্ধশ্বাস ম্যাচ তো চলছিলই। আরও রুদ্ধশ্বাস হতে থাকে ম্যাচ।

পরের বলে আসে ২ রান। কিন্তু তৃতীয় বলে সামাদ ফার্গুসনকে বড় শট মারতে যান। আর ওই বল ভেঙে দেয় তাঁর উইকেট। মাত্র ২ রান করতে পারে হায়দরাবাদ।

৩ রান করতে হবে ৬ বলে। এই অবস্থায় ব্যাট হাতে নামেন মর্গান ও দীনেশ। বল হাতে ছিলেন রশিদ খান। রশিদের প্রথম বলে রান আসেনি। কিন্তু দ্বিতীয় বলে ১ রান করেন মর্গান।

তৃতীয় বলে রান পাননি দীনেশ। তবে চতুর্থ বলে দরকারি ২ রান আসে দীনেশের পায়ে লেগে। লেগ বাই থেকে আসা ২ রানে ম্যাচ জিতে নেয় কলকাতা। এদিনের রুদ্ধশ্বাস জয়ের নায়ক হয়ে রইলেন লকি ফার্গুসন।

Show Full Article

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button