শক্তিশালী দিল্লিকে দাঁড়াতেই দিল না কলকাতা
শক্তিশালী দিল্লি ক্যাপিটালসকে শনিবার বিকেলে আবুধাবির মাঠে কার্যত দাঁড়াতেই দিল না কলকাতা নাইট রাইডার্স। ৫৯ রানে দিল্লিকে হারিয়ে দেয় কেকেআর।
আবুধাবি : প্রথমে ব্যাটের তাণ্ডব। তারপর বোলিংয়ের ম্যাজিক। সঙ্গে দারুণ ফিল্ডিং। সব মিলিয়ে এদিন দিল্লিকে দাঁড়াতেই দিল না কেকেআর।
খেলার শুরুতে নড়বড় করতে থাকা কেকেআর-এর পরিত্রাতার ভূমিকা নেন নীতীশ রাণা ও সুনীল নারিন। বোলিং অ্যাকশন ঠিক করে ফেরা সুনীল নারিন এদিন ব্যাট হাতে ছিলেন বিধ্বংসী। ৫৯ রানে দিল্লিকে হারিয়ে দেয় কেকেআর। ম্যাচের সেরা হন বরুণ চক্রবর্তী।
আবুধাবিতে এদিন টস জিতে প্রথমে কলকাতাকে ব্যাট করতে পাঠান দিল্লির অধিনায়ক শ্রেয়স আইয়ার। ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই শুভমান গিলের উইকেট হারায় কেকেআর।
সেইসঙ্গে এই আইপিএল-এ পাওয়ার প্লে-তে সবচেয়ে কম রান রেটে রান তোলা কেকেআর এদিনও খুব কম রানই তুলতে পারছিল শুরুতে।
এরপর দ্রুত ফেরেন রাহুল ত্রিপাঠী ও দীনেশ কার্তিক। ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় কলকাতা। নীতীশ রাণাকে সঙ্গত দিতে নামেন সুনীল নারিন।
৯ ওভারে কলকাতার রান ছিল ৫৭। সকলেই মনে করছিলেন এভাবে ১৫০ করতে পারলেও অনেক। কিন্তু এখান থেকে খেলার মোড় ঘুরতে থাকে।
সুনীল নারিনের ব্যাট শুরু করে তার ঝোড়ো ইনিংস। আর সুনীলকে মারতে দেখে যেন অন্য প্রান্তে রাণাও অন্য উদ্যম পেয়ে যান।
২ দিক থেকে দিল্লির বোলারদের প্রহার চলতে থাকে। প্রতি ওভারে ১২, ১৩ ১৫ রান করে আসতে থাকে। রানের মিটার বনবন করে ঘুরতে থাকে। সেইসঙ্গে ঘুরতে থাকে কেকেআর-এর ভাগ্যের চাকা।
সুনীল নারিন এদিন করেন ৬৪ রান। রাণা করেন ৮১। এঁদের দুজনের কাঁধে ভর করে কলকাতা পৌঁছে যায় ১৯৪ রানে। ২০০ রানের ওপর হতেই পারত যদি না শেষ ২ বলে ২টি উইকেট হারাত কেকেআর।
ব্যাট করতে নেমে প্রথম বলেই উইকেট হারায় দিল্লি। প্যাট কামিন্সের প্রথম বলে অজিঙ্কা রাহানে প্যাভিলিয়নে ফেরেন। প্রথম বলেই উইকেট হারালেও দিল্লির ফর্মে থাকা শিখর ধাওয়ানের ব্যাট চলতে শুরু করে। আর ঠিক তখনই ছন্দ পতন ঘটান প্যাট কামিন্স। বোল্ড করে ফেরান শিখরকে।
এখান থেকে ঋষভ পন্থ ও শ্রেয়স আইয়ার খেলা টানতে থাকেন। কিন্তু রানের গতি তেমন ছিলনা। তবু ক্রিজে তাঁদের থাকার জেরে রান ওঠার একটা সম্ভাবনা থেকে যাচ্ছিল। কিন্তু এই পর্যায়েই শুরু হয় বরুণ ম্যাজিক।
বরুণ চক্রবর্তীর ঘূর্ণি এদিন আতঙ্ক হয়ে দেখা দেয় দিল্লির সামনে। ঋষভ পন্থকে ফিরিয়ে শুরু করেন বরুণ। তারপর নিজের বলেই একটা ক্যাচ ধরতে ব্যর্থ হন। কিন্তু তার ঠিক পরের বলেই শিমরন হেটমায়ারকে ফেরান। সেই ক্যাচেই আউট।
তার পরের বলেই শ্রেয়স আইয়ারকে ফেরান। সেও সেই ক্যাচেই। এখনেই থামেননি বরুণ। এরপর ফেরান স্টোইনিসকে। সেও সেই ক্যাচেই।
অক্ষর প্যাটেলকে বোল্ড করে ফিরিয়ে নিজের ৪ ওভারের স্পেলে ৫ উইকেট তুলে নেন বরুণ। আর দিল্লির মিডল অর্ডার কার্যত কয়েক ওভারের ব্যবধানে ধসিয়ে দেন। আর এখানেই শেষ হয়ে যায় দিল্লির সব আশা।
বরুণের ৫ উইকেটের স্বপ্নের বোলিংয়ের পর জয়ের আশা প্রায় শেষ হয়ে গিয়েছিল দিল্লির। বরুণ চক্রবর্তীর বোলিংয়ে প্যাট কামিন্সের বোলিং এদিন কিন্তু ঢাকা পড়ে যায়। প্যাটও কিন্তু ৩ উইকেট তুলেছেন এদিন।
ম্যাচ ৫৯ রানের বড় ব্যবধানে হারে দিল্লি। ফলে পয়েন্ট টেবিলে তারা ১৪ পয়েন্টেই রয়ে গেল। কলকাতা উঠে এল ১২ পয়েন্টে। এদিন প্রথম কলকাতা দারুণ কোনও জয় ছিনিয়ে আনল।