রাজস্থানকে হারিয়ে প্লে অফের আশা জিইয়ে রাখল কলকাতা
রাজস্থান রয়্যালসকে কার্যত দাঁড়াতেই দিল না কলকাতা নাইট রাইডার্স। ব্যাটিংয়ে কামাল দেখালেন মর্গান। বোলিংয়ে কামিন্স দেখিয়ে দিলেন কেন তিনি সবচেয়ে দামি খেলোয়াড়।
দুবাই : রবিবারটা কলকাতার পক্ষেই রইল। এখন আইপিএল-এ প্লে অফে পৌঁছনোর দৌড় চলছে। সেখানে চেন্নাইয়ের কাছে পঞ্জাব এদিন হেরে যাওয়ায় তারা দৌড় থেকে ছিটকে যায় বিকেলে।
পরের খেলায় কলকাতাকে জিততেই হত প্লে অফে পৌঁছনোর আশা জিইয়ে রাখতে। সেই ম্যাচ এদিন রাজস্থানকে বড় ব্যবধানে হারিয়ে জিতে নেয় কলকাতা।
পুরো খেলা জুড়ে পরতে পরতে ছিল নাটকীয় মোড়। তবে কলকাতা এদিন জেতার একটা মরিয়া লড়াই দেয়। যা তাদের জয়কে নিশ্চিত করে। ৬০ রানে রাজস্থানকে হারায় তারা।
দুবাইয়ের মাঠ মানেই বিশাল মাঠ। সহজে এখানে ছক্কা বা চার মারা যায়না। টস জিতে এদিন প্রথমে কলকাতাকে ব্যাট করতে পাঠায় রাজস্থান। গত ২ বছরে রাজস্থান যখনই রান তাড়া করেছে তখনই জিতেছে। কেবল একটি ম্যাচ বাদ দিয়ে। ফলে তারা আশা করছিল এই ম্যাচও জিতবে।
এদিন ব্যাট করতে নেমে প্রথমেই নীতীশ রাণা আউট হন। শুভমান গিল ও রাহুল ত্রিপাঠী অবশ্য তাঁদের ব্যাট চালাতে থাকেন। শুভমান এদিন ফের চোখে পড়েছেন।
শুভমান আউট হয়ে ফেরার পর নারিন নামলেও আউট হয়ে ফেরেন। মর্গান নামেন ব্যাট করতে। রাহুল ত্রিপাঠীকে নিয়ে রানের চাকা ঘোরাতে থাকেন অধিনায়ক মর্গান। কিন্তু রাহুল বড় শট নিতে গিয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরেন।
দীনেশ কার্তিক প্রতিদিনের মত এদিনও ব্যর্থ। প্রথম বলেই ক্যাচ তুলে ফেরেন দীনেশ। দরকারি ম্যাচেও তাঁর ব্যাট থেকে রান আসেনি। ৫ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় কেকেআর। এই অবস্থায় আন্দ্রে রাসেল ব্যাট হাতে নামেন।
৯৯ রানে ৫ উইকেট হারানো কেকেআর-কে যদি বড় রানের চ্যালেঞ্জ দিতে হত তাহলে এদিন মর্গান ও রাসেল ২ জনের ব্যাটই চলার দরকার ছিল। আর ঠিক সেটাই হয়।
দীনেশকে ফেরানো পর্যন্ত যদি রাজস্থান দাপট বজায় রেখে থাকে তাহলে রাসেল নামার পর নাটকীয় মোড় নিয়ে খেলায় দাপট বাড়াতে থাকে কেকেআর।
রাসেল যে এদিন দীর্ঘ সময় টিকেছেন তা নয়, তবে তাঁর ৩টি ছক্কা ও একটি ৪-এর সঙ্গে ১১ বলে ২৫ রানের ইনিংস মর্গানকে অক্সিজেনটা দিয়ে যায়।
এরপর কামিন্স নেমেও ছক্কা হাঁকান। উল্টোদিকে মর্গান অধিনায়কোচিত খেলা দিয়ে ম্যাচটার একটা দিক ধরে রেখে রানের চাকা গতিতে ঘোরাতে থাকেন। শেষ পর্যন্ত টিকে থেকে কলকাতাকে পৌঁছে দেন ১৯১ রানের দারুণ স্কোরে। ৬টা ছক্কা হাঁকান মর্গান।
১৯২ রান তাড়া করতে নেমে শুরুতেই চালিয়ে খেলার প্রবণতা দেখা যায় রাজস্থানের। প্রথম বলে ছক্কাও মারেন উথাপ্পা। কিন্তু তারপরের বলে ক্যাচ তুলে প্যাভিলিয়নে ফেরেন।
প্রথম ওভারে এরপর আরও একটি ছক্কা ও একটি চারের সঙ্গে ১৯ রান দেন কামিন্স। এই প্রথম ওভারটিতেই রাজস্থান এদিনের পুরো ব্যাটিংয়ে দাপট দেখিয়েছে। তারপর থেকেই খেলার মোড় ঘুরে যায়।
কামিন্স নিজের দ্বিতীয় ওভার বল করতে এসে ২টি উইকেট তুলে কার্যত রাজস্থানকে প্রবল চাপে ফেলে দেন। আউট হন বেন স্টোকস ও অধিনায়ক স্মিথ।
চতুর্থ ওভারে ফর্মে থাকা সঞ্জু স্যামসনকে ফেরান শিবম মাভি। ৪ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে রাজস্থানের হাত থেকে ম্যাচ তখন প্রায় বার হতে বসেছে। আর ঠিক তখনই পঞ্চম ওভারে বল করতে এসে ফের উইকেট তোলেন কামিন্স।
এবার রিয়ান পরাগকে ফেরান। ৩৭ রানে ৫ উইকেট হারানো রাজস্থান এখানে ম্যাচও হারায়। এরপর কার্যত কলকাতার জয় নিশ্চিত ছিল।
৫ উইকেট হারানোর পর রাহুল তেওয়াটিয়া ও জোস বাটলার মিলে কিছুটা লড়াই দেন। কিন্তু দলের ৮০ রানের মাথায় বাটলারও ফেরেন। রাহুল কিছুটা লড়াই দেওয়া চেষ্টা করলেও ৩১ রান করে তাঁকেও ফিরতে হয়।
শ্রেয়স গোপাল এদিন কিন্তু ভাল খেলেন। শেষ পর্যন্ত থেকে ২৩ রান করেন। মাঝে অবশ্য জোফ্রা আর্চার ও ত্যাগী ফেরেন প্যাভিলিয়নে। ৬০ রানে ম্যাচ জিতে যায় কেকেআর। ম্যাচের সেরা হন প্যাট কামিন্স।
এখন যা পরিস্থিতি তাতে দিল্লি বা বেঙ্গালুরুর ম্যাচে একটা দলকে বড় ব্যবধানে হারতে হবে। অথবা মুম্বইয়ের কাছে হারতে হবে হায়দরাবাদকে। তাহলেই কলকাতা পৌঁছবে প্লে অফে। তাই সোম ও মঙ্গলবারে লিগের শেষ ২টি ম্যাচের দিকে তাকিয়ে থাকবে কলকাতা।