Sports

দিল্লির স্বপ্নভঙ্গ করে পঞ্চম বারের জন্য আইপিএল জিতল মুম্বই

দরজায় পৌঁছেও আইপিএল জেতাটা অধরাই থেকে গেল দিল্লির। দিল্লি ক্যাপিটালসকে আইপিএল ফাইনালে দাঁড়াতেই দিলনা মুম্বই ইন্ডিয়ান্স। পঞ্চম বারের জন্য আইপিএল জিতল মুম্বই।

দুবাই : আইপিএল জেতাটা রীতিমত অভ্যাস করে ফেলেছে রোহিত শর্মার মুম্বই ইন্ডিয়ান্স। এবার তাই কোনও অবাক ফলাফল এল না। আইপিএল শুরুর পর থেকেই মুম্বই বুঝিয়ে দিয়েছিল তারাই এবার সবচেয়ে ভারসাম্য থাকা দল। সব খেলোয়াড় ফর্মে থাকা দল। ফলে তারাই কাপের সবচেয়ে বড় দাবিদার।

লিগ স্তরে তারা বুঝিয়ে দিয়েছিল অন্যদের মত লড়াই করে প্লে অফে জায়গা তাদের করতে হয়না। অনেক আগেই তারা সেই জায়গা পাকা করে নেয়। অন্যদিকে দিল্লি এবার ফাইনালে উঠে আইপিএল জেতার দরজায় পৌঁছে গিয়েছিল। ১৩ বার আইপিএল-এ তাদের কাপটা শিকেয় ছেঁড়েনি। এবার হয়তো তারা জিতবে। কিন্তু বাস্তবে ফাইনালে তারা দাঁড়াতেই পারল না মুম্বইয়ের সামনে। ব্যাটিং, বোলিং ও ফিল্ডিং, ৩ বিভাগেই তারা উড়ে গেল মুম্বইয়ের সামনে। দিল্লিকে হারিয়ে পঞ্চমবারের জন্য আইপিএল জিতল মুম্বই ইন্ডিয়ান্স।


টস জিতে এদিন ফাইনালে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয় দিল্লি ক্যাপিটালস। বড় হাতছানি ছিল তাদের সামনে। কখনও আইপিএল জেতেনি দিল্লি। এবার সেই সুযোগ ছিল তাদের সামনে। তাই টস জেতার সুযোগটা কাজে লাগিয়ে প্রথমে ব্যাট করে একটা বড় রানের ইনিংস করে মুম্বইকে চাপে ফেলার কৌশলটা হয়তো ভুল ছিলনা। কারণ দিল্লির বোলিং আক্রমণ নেহাত মন্দ নয়। রাবাডা, নোরটিয়ে, স্টোইনিজরা সকলেই ম্যাচ জেতানো বল করতে সক্ষম। আবার ব্যাটিং লাইনআপও বিশাল দিল্লির। ফলে তারা বড় রান করতেই প্রথমে ব্যাট করতে নামে।

ব্যাট করতে নেমে আইপিএল ফাইনালের প্রথম বলেই উইকেট হারায় দিল্লি। স্টোইনিজকে ফিরতে হয় প্যাভিলিয়নে। যা দিল্লির জন্য শুরুতেই চাপ তৈরি করে ফেলে। তারপরেও বড় ব্যাটিং লাইনআপ নিয়ে কিছু রান তুলতে শুরু করলেই হয়তো তারা খেলায় ফিরত। কিন্তু তারপরও শিখর ধাওয়ান ও অজিঙ্কা রাহানের উইকেট পতন হয়। ২৩ রানে ৩ উইকেট হারানো দিল্লির স্কোর বোর্ড যেন তখনই পরিস্কার করে দেয় ফাইনালের ভবিষ্যৎ। সে লিখন যে ভুল ছিলনা তা তো প্রমাণিত।


শ্রেয়স আইয়ার ও ঋষভ পন্থ এরপর মাঠে নেমে খেলার মোড় ঘোরানোর সবরকম চেষ্টা চালান। রানে গতিও কিছুটা আসে। উইকেট পতন আটকায়। কিন্তু তা যথেষ্ট ছিলনা। মুম্বইয়ের মত শক্তিশালী দলের বিরুদ্ধে দিল্লির এদিন শুধু ২ জন ব্যাটিং করতে পেরেছেন। বাকিরা সম্পূর্ণ ব্যর্থ।

কার্যত শ্রেয়স আইয়ারের ৬৫ রান এবং ঋষভ পন্থের ৫৬ রানের কাঁধে ভর করে দিল্লি ২০ ওভারে তোলে ১৫৬ রান। যা মুম্বইয়ের মত শক্তিশালী দলের বিরুদ্ধে যথেষ্ট ছিলনা।

১৫৭ রান তাড়া করতে নেমে এদিন কিন্তু মু্ম্বই শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে দিকে ঝোঁকে। পাওয়ার প্লে-কে পুরোদস্তুর কাজে লাগাতে তারা শুরু থেকেই চালিয়ে খেলার রাস্তায় যায়। যাতে তারা সফলও হয়।

পাওয়ার প্লে-র প্রথম ৬ ওভারে ডি কক-এর উইকেট হারিয়ে মুম্বই ৬১ রান তুলে নেয়। ১০-এর ওপর রান রেট। রোহিত, ডি কক, সূর্যকুমার সকলের ব্যাটই চলতে শুরু করে। রাবাডা, আনরিখ নোরটিয়ের মত দিল্লির স্ট্রাইক বোলারও এদিন মুম্বইয়ের ব্যাটিংয়ের সামনে নস্যাৎ হয়ে যান। তুলনায় অক্ষর প্যাটেল এদিন নজরকাড়া বোলিং করেন।

সূর্যকুমার যাদব ও রোহিত শর্মার জুটি ভাল ব্যাটিং করলেও রোহিতকে রান আউট থেকে বাঁচাতে নিজের উইকেট দান করেন সূর্যকুমার। এরপর ম্যাচকে কার্যত জয়ের দরজায় পৌঁছে দেন রোহিত ও ঈশান কিষাণ। শেষের দিকে ম্যাচ যখন হাতের মুঠোয় তখন রোহিত শর্মা, পোলার্ড ও হার্দিক পাণ্ডিয়া আউট হন। কিন্তু তাতে দিল্লি ম্যাচ বাঁচাতে পারেনি। ৮ বল বাকি থাকতেই ম্যাচ জিতে যায় মুম্বই। রোহিত করেন ৬৮ রান। ম্যাচের সেরা হন ট্রেন্ট বোল্ট।

২০১৩ সালে প্রথমবার আইপিএল ট্রফিতে হাত দিতে পেরেছিল মুম্বই। তারপর ২০১৫, ২০১৭, ২০১৯-এ ট্রফি জেতে তারা। এক বছর অন্তর আসছিল ট্রফি। এবার জিতে কিন্তু পরপর ২ বছর ট্রফি ঘরে তুলল মুম্বই। জয়ের পর দুবাইয়ের মাঠে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের খেলোয়াড়েরা আনন্দে মেতে ওঠেন। মধ্যমণি ছিলেন রোহিত শর্মা। যিনি জীবনে ৬ বার আইপিএল জয়ী দলে রইলেন। মুম্বইয়ের হয়ে ৫ বার এবং ডেকান চার্জার্স-এর হয়ে ১ বার ট্রফিতে হাত ছুঁইয়েছেন রোহিত।

Show Full Article

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button