এভাবেও ফিরে আসা যায়, অসম্ভবকে সম্ভব করে অমর অধ্যায় লিখলেন ৫ ছক্কার রিঙ্কু সিং
এসব সিনেমায় সম্ভব হয়। বাস্তবেও যে সম্ভব হতে পারে তা করে দেখালেন কলকাতার রিঙ্কু সিং। আইপিএল-এ এমন এক অধ্যায় লিখলেন যা কখনও মুছে ফেলা যাবেনা।
আইপিএল-এ প্রতিবছর অনেক খেলা হয়। বেশ কিছু খেলা টানটান পরিস্থিতিতেও পৌঁছয়। কিন্তু কেকেআর-এর রিঙ্কু সিং যা করলেন তা কেউ কোনও দিন মুছে ফেলতে পারবেননা। সিনেমার পর্দায় যা হিরোর হাতে সম্ভব তা যে বাস্তবেও সম্ভব হতে পারে তা করে দেখালেন রিঙ্কু সিং।
খেলা তখন গুজরাটের হাতের মুঠোয়। সবে কেকেআর-এর ৩ তারকাকে ৩ বলে ফেরত পাঠিয়ে খেলার মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছেন গুজরাট টাইটানস-এর রশিদ খান। কলকাতাকে জিততে গেলে ৮ বলে করতে হবে ৩৯ রান। যা বাস্তবে অসম্ভব। হাল ছেড়ে দিয়েছেন কলকাতার সমর্থকেরাও। এই সময় জোশুয়ার শেষ ২ বলে একটি ছক্কা ও একটি ৪ হাঁকান রিঙ্কু সিং। শেষ ওভারে করতে হবে ২৯ রান। এই অবস্থায় শেষ ওভারে বল করতে আসেন যশ দয়াল।
রিঙ্কুর বন্ধু যশ প্রথম বল করেন উমেশ যাদবকে। ১ রান হয়। ফলে ৫ বলে কলকাতাকে জিততে গেলে করতে হবে ২৮ রান। এমন পরিস্থিতি যে ৫ বলে ৫টা ছক্কা বা ৪টি ছক্কা ও ১টি চার মারতে হবে। এটা শুনতে ভাল। সিনেমার পর্দায় হিরোর হাতে ব্যাট থাকলে সম্ভব। কিন্তু বাস্তবে এমন প্রথমসারির ক্রিকেট মহারণে সম্ভব নয় বলেই মনে করতেন ক্রিকেট বিশেষজ্ঞেরা। কিন্তু এখান থেকেই মোড় ঘোরান রিঙ্কু সিং।
যশ দয়াল একটি করে বল করতে থাকেন আর রিঙ্কু একটি করে ছক্কা হাঁকাতে থাকেন। ৩ বলে ৩টি ছক্কার পর হঠাৎ সব যায় বদলে। মনে হতে থাকে ২ বলে ১০ রানটা করেও ফেলতে পারেন রিঙ্কু। শেষের আগের বলেও ছক্কা। এবার দরকার ১ বলে ৪ রান। শেষ বলটা করার পর রিঙ্কুর ব্যাট চলল। আর বল উড়ে গিয়ে পড়ল বাউন্ডারি পার করে।
৫ বলে ৫টা ছক্কা। ৫ বলে ২৮ রানের লক্ষ্য ছুঁয়ে ফেলল রিঙ্কুর ম্যাজিক ব্যাটিং। এরপরটা মাঠে শুধুই ইতিহাস। কেকেআর শিবিরের আনন্দ করা দেখে মনে হল ম্যাচ জেতেনি আইপিএল ট্রফি জিতে গেছে দলটা। কোচ রিঙ্কুকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে ফেললেন।
সতীর্থরা তাঁকে নিয়ে কি করবেন বুঝে উঠতে পারছেন না। অন্যদিকে তখনও মাঠে দাঁড়িয়ে গুজরাটের খেলোয়াড়েরা বিশ্বাস করতে পারছেন না শেষ ৫ বলে যা হল তা সত্যি না দুঃস্বপ্ন। সত্যিই যে তাঁরা হেরে গেছেন সেটাও বিশ্বাস করতে সময় লাগল তাঁদের। রিঙ্কু এদিন আইপিএল-এর ইতিহাসে এমন এক অধ্যায় রচনা করলেন যা কখনও মুছে ফেলা যাবেনা।