শুক্রবার সন্ধেয় ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনার পর শনিবার সকালেও শোকের নিস্তব্ধতা অমৃতসরের ধোবি ঘাটে। গোটা এলাকা থমথম করছে। এখনও রেল লাইনের আশপাশে ছড়িয়ে আছে রাতের দুঃস্বপ্নের স্মারক। এদিকে ঘটনার পর এবার শুরু হয়েছে দোষারোপ পাল্টা দোষারোপের পালা। দোষ কার? ট্রেনের চালকের? রেল কর্তৃপক্ষের? নাকি যাঁরা লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলেন তাঁদের? স্থানীয়দের দাবি, এখানে রেল লাইনের ধার ঘেঁষে রাবণ দহন নতুন কিছু নয়। ফি বছরই এটা হয়ে থাকে। সেক্ষেত্রে প্রতিবারই এখানে ধীরে চলে ট্রেন। সতর্ক করা হয় মানুষকে। কিন্তু এবার কীভাবে এমন দ্রুত গতিতে এখান দিয়ে অমৃতসর মেল পাশ করল তা নিয়ে ধন্ধে তাঁরা। এক্ষেত্রে তাঁরা রেল কর্তৃপক্ষকেই কাঠগড়ায় চাপাচ্ছেন। অন্যদিকে রেল এই দায় নিতে নারাজ। তাদের বক্তব্য রেল লাইনের ওপর এভাবে জমায়েত করা কখনওই উচিত হয়নি।
ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। এদিকে মৃতের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। ইতিমধ্যেই মৃতের সংখ্যা ৬০ ছুঁয়েছে। এখনও ১৩ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। ফলে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এদিকে ট্রেনের চালককে আটক করা হয়েছে। তাঁর দাবি, তিনি সিগনাল ক্লিয়ার পেয়ে গাড়ি চালিয়েছেন। সামনে এভাবে লাইনের ওপর মানুষের জমায়েত রয়েছে তা তাঁর জানা ছিলনা।
পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী অমরিন্দর সিং তাঁর বিদেশ যাত্রা বাতিল করেছেন। এদিন তিনি গুরু নানক হাসপাতালে আহতদের দেখতে যান। মৃতদের পরিবার পিছু ৫ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ ও আহতদের বিনামূল্যে চিকিৎসা করানোর কথা ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
ধোবি ঘাটে যেখানে রাবণ দহন হচ্ছিল সেখানে উপস্থিত ছিলেন নভজ্যোৎ সিং সিধুর পত্নী নভজ্যোৎ কউর সিধু। যদিও ঘটনার পরই তিনি এলাকা ছেড়ে চলে যান বলে দাবি স্থানীয়দের। যদিও সেকথা অস্বীকার করে তিনি জানিয়েছেন ঘটনা ঘটার আগেই তিনি সেখান থেকে চলে গিয়েছিলেন।
ধোবি ঘাটের কাছে গত শুক্রবার সন্ধেয় দশেরা উপলক্ষে রাবণ দহন চলাকালীন বাজি পুড়তে শুরু করে। দাউদাউ করে জ্বলে ওঠে রাবণের বিশাল পুতুল। ফলে দর্শকদের অনেকেই বাজির আগুন থেকে বাঁচতে ও ভাল করে রাবণ দহন দেখতে পাশে রেল লাইনেও ওপর উঠে আসেন। প্রায় ৩০০ মানুষ রেল লাইনের ওপর যখন দাঁড়িয়ে ঠিক তখনই দ্রুত গতিতে সেখান দিয়ে পাশ করে অমৃতসর মেল। ট্রেনে কাটা পড়েন বহু মানুষ। ছিটকে পড়েন বহু দূরে দূরে।
(সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা)