ব্যান্ডেল স্টেশনের ৫ নম্বর প্ল্যাটফর্মের কাছে লাইন পার করছিলেন দিলীপ রাম। রেলের কর্মী দিলীপবাবু অফিস যাচ্ছিলেন। তখন সকাল পৌনে ১০টা প্রায়। আচমকাই দিলীপবাবুর খুব কাছে চলে আসে কয়েকজন। তারপর তাঁর মাথায় খুব কাছ থেকে গুলি করে তারা। গুলি মাথায় লাগার পর রক্তাক্ত অবস্থায় লুটিয়ে পড়েন দিলীপবাবু। দ্রুত এলাকা ছেড়ে চম্পট দেয় দুষ্কৃতীরা। এদিকে ব্যান্ডেল স্টেশন চত্বর যথেষ্ট ব্যস্ত থাকে। তারওপর সকালে যথেষ্ট ভিড় ছিল সেখানে। অনেকের নজর কাড়ে বিষয়টি। স্টেশন চত্বরে চাঞ্চল্য ছড়ায়। অনেকে এমন ঘটনায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। দ্রুত দিলীপবাবুকে উদ্ধার করে চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে বেশ কিছুক্ষণ তাঁকে বাঁচানোর চেষ্টার পর অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে কলকাতায় রেফার করেন চিকিৎসকেরা। কিন্তু মাঝরাস্তায় মৃত্যু হয় দিলীপ রামের।
দিলীপ রাম এলাকার তৃণমূল নেতৃত্বের যথেষ্ট ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত। তাঁর স্ত্রী গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান। পুরো পরিবারই তৃণমূলের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। কারা দিলীপবাবুকে হত্যা করল? ঘটনার পরই হাসপাতালে ছুটে আসেন এলাকার তৃণমূল নেতা থেকে কর্মীরা। তাঁদের দাবি, এটা বিজেপির কাজ। বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীরা দিলীপবাবুকে গুলি করেছে। এলাকায় বেশ কিছুদিন ধরেই তারা তৎপর। এমনকি দিলীপবাবুকে খুনের হুমকিও দেওয়া হচ্ছিল বলে দাবি তৃণমূলের স্থানীয় নেতৃত্বের। এক্ষেত্রে পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ করেছেন স্থানীয় বিধায়ক। তাঁর দাবি পুলিশ আগে থেকে একটু তৎপর হলে এমনভাবে দিলীপ রামকে মরতে হতনা। ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় চাপা উত্তেজনা তৈরি হয়।
দিলীপ রামকে এভাবে প্রকাশ্য দিবালোকে হত্যার প্রতিবাদে রবিবার চুঁচুড়া বন্ধের ডাক দিয়েছে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। ২৪ ঘণ্টার বন্ধের ডাক দেওয়া হয়েছে। এদিকে বিজেপির দিকে অভিযোগের আঙুল উঠলেও বিজেপি নেতৃত্বের দাবি এ ঘটনায় তাদের কোনও হাত নেই। তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরেই এই ঘটনা ঘটেছে। গোটা ঘটনায় এলাকা জুড়ে উত্তেজনা রয়েছে। পুলিশ পিকেট বসানো হয়েছে। গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। এখনও কেউ গ্রেফতার হয়নি।