ভারতে দূরপাল্লার ট্রেনে চড়বেন কেউ। আর তা দেরিতে গন্তব্যে পৌঁছবে না। তাই হয় নাকি! এটাই তো স্বাভাবিক। দেরির বহর অনেক সময় ১০-১২ ঘণ্টা বা তার চেয়েও বেশি হয়ে যায়। এই দেখতে দেখতে ব্যাপারটা গা সওয়া হয়ে গেছে ভারতীয়দের। যাত্রীরাও কিছু মনে করেন না। ট্রেন কর্তৃপক্ষও দেরি নিয়ে বিশেষ বিচলিত হয়না। বেশ চলছিল। কিন্তু সেসব হিসাব ভেঙে দিতে চলেছে তেজস এক্সপ্রেস। ভারতের প্রথম কর্পোরেট পরিচালিত ট্রেনটি চলছে দিল্লি ও লখনউ শহরের মধ্যে। সেই ট্রেন গত শনিবার দিল্লি থেকে লখনউ আসতে এবং লখনউ থেকে দিল্লি পৌঁছতে নির্ধারিত সময়ের চেয়ে ২ ঘণ্টা করে লেট করে ট্রেন। যে কারণে ২ দিকেই সফর করা যাত্রীরা পেতে চলেছেন ক্ষতিপূরণ।
তেজস এক্সপ্রেস পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছে আইআরসিটিসি। শনিবার ট্রেনটি ২ প্রান্তেই আসতে যেতে দেরি করার জন্য ক্ষতিপূরণ বাবদ যাত্রীরা মাথা পিছু ২৫০ টাকা করে ক্ষতিপূরণ পেতে চলেছেন। আইআরসিটিসি-র লখনউয়ের চিফ রিজিওনাল ম্যানেজার জানিয়েছেন, তাঁরা ইতিমধ্যেই যাত্রীদের মোবাইলে একটি লিঙ্ক পাঠিয়ে দিয়েছেন। সেই লিঙ্ক থেকে ক্ষতিপূরণ দাবি করলে যাত্রীরা সেই ক্ষতিপূরণ পাবেন। ক্ষতিপূরণের অঙ্ক মাথাপিছু ২৫০ টাকা। ভারতীয় রেলের ইতিহাসে এ ঘটনা এই প্রথম।
শুধু ক্ষতিপূরণ বলেই নয়। শনিবার দেরির জন্য ক্ষমা চেয়ে ২ দিকে যাত্রা করা মোট ৯৫১ জন যাত্রীকে বিনামূল্যে চা, লাঞ্চ ও কিছু রিফ্রেশমেন্ট দেয় আইআরসিটিসি। যার প্যাকেটের ওপর লেখা ছিল ‘সরি ফর দ্যা ডিলে’। এটি যেমন ভারতীয় রেলে এক নয়া অধ্যায়ের সূচনা করল তেমনই ভারতীয় রেলে সফররত যাত্রীদের মনে আশার আলো জাগাল। এখন ট্রেন দেরি করলে প্রশ্ন উঠতেই পারে দেরির জন্য ক্ষতিপূরণ মিলবে তো? তেজসের যাত্রীরা তো পেয়েছেন, তাহলে তাঁরা কী দোষ করলেন? নাকি কেবল কর্পোরেট ট্রেনে এমন সুযোগ মিলবে। এমন প্রচার করে আদপে দেশে কর্পোরেট ট্রেনরুটকে মানুষের কাছে জনপ্রিয় করার চেষ্টা হচ্ছে। সময়ই তার উত্তর দেবে। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা