একটি অবুঝ ভুল শেষ করল ৫টি হরিণের জীবন, একটি ছিল সন্তানসম্ভবা
ভুল হল বটে, তবে বাস্তবে কার ভুল? এ প্রশ্ন রেখেই তাদের দিক থেকে একটি অবুঝ ভুলের খেসারত প্রাণ দিয়ে দিল ৫টি হরিণ।
রাঁচি : পালামৌ টাইগার রিজার্ভ-এর গহন অরণ্য। এই অরণ্যেই বাস অনেক বাঘের। আর বাঘের খাদ্য হরিণ। সেই হরিণও রয়েছে এই অরণ্যে। খাদ্য খাদকের প্রকৃতির বিধান মেনে হরিণরা বাঘের পেটেও যাচ্ছে আবার বহাল তবিয়তে বেঁচেও আছে ওই জঙ্গলে। ওই জঙ্গলের ওপর দিয়েই চলে গেছে রেলপথ। ভারতের অনেক প্রান্তেই এমনটা রয়েছে। জঙ্গলের মধ্যে দিয়েই রেলপথ নিয়ে যেতে হয়েছে। বন্যপ্রাণেরা জানেও যে ওখান দিয়ে কিছু একটা যায়। যেটা এড়িয়ে থাকা ভাল। হয়তো ওই জঙ্গলের ৫টি হরিণও সেকথা জানত। কিন্তু সময়মত যে সরতে হয় তা ঠাওর করে উঠতে পারেনি।
ঝাড়খণ্ডের পালামৌ টাইগার রিজার্ভ-এর গহন অরণ্যের মাঝেই কেচকি রেলওয়ে স্টেশনের কাছে সোমবার সকাল ১০টার সময় চড়া রোদের আলোয় ওই ৫টি হরিণ কিন্তু কার্যত বেঘোরে প্রাণ হারাল। এক দুরন্ত গতিতে থাকা মালগাড়ি তাদের পিষে দিয়ে গেল। ৫টির মধ্যে ১টি হরিণ আবার ছিল সন্তানসম্ভবা। হরিণরা ঠিক ওই সময়েই লাইনের ওপর এসে পড়ায় এই কাণ্ড ঘটে। ট্রেনের সঙ্গে ২টি হরিণ ৩ কিলোমিটার পর্যন্ত ঘষটাতে ঘষটাতে যায়।
৫টি হরিণের দেহ পরে উদ্ধার করা হয়। তাদের দেহ ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত কমিটিও গঠিত হয়েছে। রেলের সঙ্গে বৈঠকে বসতে চলেছেন পালামৌ টাইগার রিজার্ভ-এর কর্তারা। কীভাবে আগামী দিনে ট্রেনে জঙ্গলের প্রাণিদের কাটা পড়া রোখা সম্ভব হবে তার একটি রূপরেখা তৈরি করতে চাইছেন তাঁরা। এই ঘটনা নিয়ে রেল ও বন দফতরের মধ্যে একে অপরের দিকে আঙুল তোলাও শুরু হয়েছে। কিন্তু আদত কথা একটাই যে প্রাণ গেছে ৫টি হরিণের। যার মধ্যে ১টি সন্তানসম্ভবা। অর্থাৎ হিসাবমত ৬টি হরিণের প্রাণ কাড়ল দুরন্ত গতির মালগাড়ি।
এখানে ভুল কার? অবশ্যই সেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। জঙ্গলের অবুঝ প্রাণিদেরই রেললাইন এবং তাতে লুকিয়ে থাকা বিপদ বুঝতে হবে এটা হয়তো হাস্যকর যুক্তি। ফলে বুঝতে হবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকেই। তাদেরই সুস্পষ্ট নীতি নির্ধারণ করতে হবে। অসম বা উত্তরবঙ্গের জঙ্গলে হাতি কাটা পড়া কোনও নতুন ঘটনা নয়। তাও তা এখনও সম্পূর্ণ বন্ধ হচ্ছেনা। হাতি এখনও কাটা পড়ে। তাই সঠিক নীতি নির্ধারণ হয়তো এবার জরুরি। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা