অভিনব কারণে রেলে কাজ পেলেন ২ ভাই
রেল স্টেশনে তাঁরা সারাদিন ঘুরবেন। মাঝে মধ্যেই লেঙ্গুড়ের ডাক ডাকবেন। এটাই তাঁদের কাজ। আর এই কাজের জন্য তাঁরা রেলের কাছ থেকে পারিশ্রমিকও পাচ্ছেন।
লখনউ : স্টেশনে পা রাখলেই তাদের খপ্পরে পড়তে হবে। কখনও হাতে থাকা খাবার তো কখনও অন্য কিছু। চোখে পড়লেই ছিনিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। ফলে যাত্রীদের অজস্র অভিযোগ জমা পড়ছিল। তাতে তো জেরবার অবস্থা ছিলই। তার ওপর শুধু যাত্রীরা বলেই নয়, তাঁরাও রেহাই পাচ্ছিলেন না। বাঁদরদের গ্যাং কার্যত গোটা স্টেশন চত্বরে যাত্রী থেকে রেলকর্মী, কাউকেই শান্তিতে থাকতে দিচ্ছিল না। ফলে বাঁদরদের হাত থেকে নিষ্কৃতি পাওয়ার উপায় ভাবছিলেন সকলে।
বাঁদররা ভয় পায় লেঙ্গুড়দের। একবার লেঙ্গুড় ডাক দিলেই যে যেদিকে পারবে পালাবে। একথা কানে যায় স্টেশনের কর্মীদের। তারপরই স্টেশনের আধিকারিকরা খোঁজ শুরু করেন লেঙ্গুড়ের ডাক নকল করতে পারেন এমন মানুষের। পাওয়াও যায়। লেঙ্গুড়ের গলা নকল করতে পারেন বলেই রেলে অস্থায়ী কাজের ডাক পেলেন লখনউয়ের বাসিন্দা ২ ভাই আসলাম আর রশিদ।
রেল কর্তৃপক্ষকে অনেকটা দায়ে পড়েই লখনউয়ের চারবাগ স্টেশনে আসলাম ও রশিদকে নিযুক্ত করতে হয়েছে। আর তাঁদের কাজটাও রেলের সাধারণ কাজকর্মের থেকে একদমই আলাদা।
২ ভাই সারা স্টেশন চত্বরে থাকা বাঁদরদের দেখলেই লেঙ্গুড়ের ডাক ডেকে ভয় দেখিয়ে তাড়ান। স্টেশন চত্বরে বাঁদরদের দৌরাত্ম্য বন্ধ করার জন্যই এমন অভিনব ভাবনা লখনউয়ের রেল কর্তৃপক্ষের।
লখনউ ডিভিশনের রেল আধিকারিক জগতোষ শুক্লা জানান, চারবাগ স্টেশনে ১০০-র বেশি বাঁদর দল বেঁধে ঘুরে বেড়ায়। আর তাদের দৌরাত্ম্যেই জেরবার স্টেশনের যাত্রী থেকে কর্মচারী প্রত্যেকেই।
বাঁদররা অনেক অনিষ্ট করে সারাদিন ধরে। যাত্রী ও হকারদের হাত থেকে খাবার ছিনিয়ে নেয়। রেলস্টেশনে লাগানো অনেকগুলি সিসিটিভি, বিদ্যুতের তার নষ্ট করে দিয়েছে তারা।
যাত্রীদের এই সমস্যা থেকে রক্ষা করতে ও রেলের সম্পত্তি ঠিক মত রক্ষণাবেক্ষণ করার জন্য রেল কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নেয় লেঙ্গুড়ের ডাক নকল করতে দক্ষ ব্যক্তিদের তারা স্টেশনে কাজে নিযুক্ত করবে।
আসলাম ও রশিদ কালন্দর সম্প্রদায়ের মানুষ। কালন্দর সম্প্রদায়ের মানুষরা প্রধানত বাঁদর ও ভাল্লুকদের প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকেন। তাই তাঁরা খুব ভালোভাবেই প্রাণিগুলির আচরণ সম্পর্কে জানেন। আর পারেন দক্ষতার সঙ্গে লেঙ্গুড়ের ডাক নকল করতে।
তাই আসলাম ও রশিদকে সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা অবধি চারবাগ স্টেশনে এই ‘স্পেশাল ডিউটি’ করতে দেখা যায়। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা