ভূতের ভয়ে ৪২ বছর থেমে ছিল এই রেলস্টেশন
এই স্টেশনে ভূত আছে। একের পর এক কাহিনি সামনে আসতে থাকে। তারপরই ভয়ে কার্যত বন্ধ হয়ে যায় এই স্টেশন। ৪২ বছর বন্ধ অবস্থায় কাটিয়েছে স্টেশনটি।
স্টেশনটি তৈরি হয়েছিল ১৯৬০ সালে। তারপর থেকে পুরোদমেই আর পাঁচটা স্টেশনের মত ব্যস্ততা ছিল এখানে। যাত্রী ওঠানামা লেগেই থাকত। সমস্যা শুরু ১৯৬৭ সালে।
সেই সময় এখানে কর্মরত এক রেলকর্মী দাবি করেন তিনি রাতে ওই স্টেশনে এক সাদা শাড়ি পরা মহিলাকে দেখেছেন। যিনি স্টেশনে ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন। মাঝে মাঝে নাচছিলেনও।
ওই ব্যক্তি এটাও জানান যে ওই মহিলার মুখও তিনি দেখতে পেয়েছেন। যাঁকে দেখেছেন তিনি আগেই মারা গেছেন। ট্রেনে কাটা পড়েই তাঁর মৃত্যু হয়েছিল।
সেই মহিলা সাদা শাড়ি পরে স্টেশনে এলেন কীভাবে! ছড়িয়ে পড়ে আতঙ্ক। এরপর এক এক করে নানা ভৌতিক কাহিনি সামনে আসতে থাকে।
রাত নামলেই এখানে সাদা শাড়ি পরা মহিলাকে দেখা যায় বলে জানান একাধিক মানুষ। সেই মহিলা যে ভূত সে বিষয়েও তাঁরা নিশ্চিত বলে দাবি করেন।
এত দ্রুত এই স্টেশনে ভূতের আনাগোনার দাবি ছড়াতে থাকে যে স্থানীয় মানুষের মধ্যে তো বটেই এমনকি দূরের যাত্রীদের মনেও ভূতের ভয় পেয়ে বসে।
কেউই আর সন্ধে নামার পর এই স্টেশনে আসতেন না। এখানে ভূতের ভয় এমন পর্যায়ে পৌঁছয় যে স্টেশন সুনসান হয়ে যায়। কার্যত বন্ধ হয়ে যায় সব পরিষেবা।
পুরুলিয়ার বেগুনকোদর স্টেশনের এই ভৌতিক তকমা কিন্তু সহজে মোছেনি। ৪২ বছর এই স্টেশন কার্যত বন্ধ ছিল। এই স্টেশনের ধারেকাছেও সন্ধে নামার পর মানুষ ঘেঁষতেন না। কোনও ট্রেন এই স্টেশনে দাঁড়াত না।
২০০৯ সালে অবশ্য ছবিটা বদলায়। রেলের তরফে জানানো হয় ভূতের ভয় অমূলক। বেগুনকোদর গ্রামে কোনও ভূত নেই। ওই বছর থেকে রেল ফের বেগুনকোদর স্টেশনে স্বাভাবিক পরিষেবা চালু করে দেয়। ৪২ বছর বন্ধ থাকার পর অবশেষে স্টেশনে ফের দৈনিক ব্যস্ততা শুরু হয়।