হারিয়ে যেতে বসা মধুবনী চিত্রকলার চাদরে মুড়ে গেল বিহারের মধুবনী স্টেশন। পাটনার কাছে অবস্থিত এই স্টেশনকে আকর্ষণীয় করে তোলার জন্য মধুবনী অঙ্কন শৈলীতে স্টেশন চত্বর ভরিয়ে ফেলার উদ্যোগ নিয়েছে পূর্ব-মধ্য রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। কাজ শুরু হয়েছে গত ৮ অক্টোবর থেকে। এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য শুধুমাত্র সৌন্দর্যায়ন বা পরিচ্ছন্নতা নয়, বরং শহরের শিল্পীদের শিল্পশৈলী ও দক্ষতা সর্বসমক্ষে তুলে ধরাও এর উদ্দেশ্য। আপাতত সারাদিন পরিশ্রম করে মধুবনী অঙ্কন দিয়ে বিশাল স্টেশন চত্বরের দেওয়ার পূরণের কাজ জোরকদমে চলছে। প্রচুর শিল্পী এই কর্মযজ্ঞে অংশ নিয়েছেন। রোদ মাথায় করে কাজও করছেন। কিন্তু কোনও পারিশ্রমিক নিচ্ছেন না। তাই কাজের শেষে তাঁদের বিশেষভাবে সম্মানিত করা হবে বলে জানিয়েছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।
ঐতিহ্যবাহী মধুবনী চিত্রকলার জন্মস্থান নেপাল। সেখানকার মানুষ তাঁদের পৌরাণিক কাহিনি ও লোকগাথা দেওয়ালে এঁকে বোঝাতেন। শ্রীরামচন্দ্রের ঘরণী সীতাদেবী মিথিলা রাজ্যে জন্মগ্রহণ করেন। তাই বেশিরভাগ ছবিতে রাম-সীতার বিবাহ, পরবর্তীকালে সীতার বিদায় সম্বন্ধিত চিত্রের প্রভাব বেশি। যদিও ছবিতে রামায়ণের অন্যান্য কাহিনি, ছট পূজা ও স্থানীয় নাচের নক্সাও দেখতে পাওয়া যায়।
মধুবনী চিত্রকলা খুবই মৌলিক প্রকৃতির। বিভিন্ন ভৌগলিক প্যাটার্ন ও মোটিফ-এর ব্যাবহার লক্ষণীয়। সঙ্গে থাকে রঙের প্রাচুর্য। দেখলে মন ভরে যায় সকলের। শিশুরাও তাদের পারিবারিক ধারা হিসাবে চলে আসা এই শিল্পের সঙ্গে যুক্ত। প্রাচীনকাল থেকেই বংশানুক্রমে এটি তাদের রোজগারের একমাত্র পথও।