বৃহস্পতিবার সকালে বিকট শব্দে আচমকা কেঁপে ওঠে বীরভূমের মুরারই এলাকা। জোরালো বিস্ফোরণের আওয়াজে পিলে চমকে যাওয়ার জোগাড় হয় এলাকাবাসীর। কী হল, কী হল রব ওঠে এলাকার মানুষের মধ্যে। ভয়ানক শব্দের উৎস খুঁজতে তাঁরা উপস্থিত হন বাঁশলই ও রাজগ্রামের মাঝে রেলগেটে। দেখা যায়, একটি ট্র্যাক্টর রেললাইনের ওপর দুমড়ে মুচড়ে পড়ে রয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীদের কাছ থেকে কৌতূহলী জনতা জানতে পারেন, ট্রাক্টরটিতে মালগাড়ির ধাক্কা মারার ঘটনা।
এদিন সকালে বাঁশলই ও রাজগ্রামের মাঝখানে রেললাইনের ওপর আচমকা বিকল হয়ে যায় একটি বালিবোঝাই ট্রাক্টর। রেললাইন থেকে সরাতে না পারা ট্রাক্টরটিকে ওই অবস্থায় ফেলে চম্পট দেন চালক। কিছুক্ষণ পর ওই লাইন ধরে ছুটে আসতে দেখা যায় একটি মালগাড়িকে। অভিযোগ, দূর থেকে লাইনের উপর ট্রাক্টরটিকে দেখেও গতি কমাননি মালগাড়ির চালক। মালগাড়িটি সজোরে এসে ধাক্কা মারে বিকল ট্রাক্টরটিকে। ওই অবস্থায় সেটিকে বেশ কিছুদের টেনে হিঁচড়ে নিয়ে যায় মালগাড়িটি। তবে কারও প্রাণহানির ঘটনা না ঘটায় স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁদের অভিযোগ, দুর্ঘটনার পর ট্রাক্টরটিকে সরাতে তৎপরতা দেখায়নি রেল পুলিশ। ফলে বেশ কিছুক্ষণের জন্য আপ ও ডাউন লাইনে ব্যাহত হয় রেল পরিষেবা। বীরভূমের মুরারই এলাকার ওই রেললাইন উত্তরবঙ্গ ও দক্ষিণবঙ্গের মধ্যে যোগাযোগের অন্যতম একটি পথ। দুর্ঘটনার কবলে পড়া ট্রাক্টরটিকে না সরানোয় মাঝপথে দাঁড়িয়ে যায় বিভিন্ন দূরপাল্লার ট্রেন। চূড়ান্ত ভোগান্তির শিকার হতে হয় যাত্রীদের। ঘণ্টা দুয়েকের জন্য বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় উত্তরবঙ্গ ও দক্ষিণবঙ্গের মধ্যে রেল যোগাযোগ। ব্যস্ত সময়ে ভোগান্তির জেরে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন এলাকাবাসী। পরে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছন রেল পুলিশ ও রেলের অন্যান্য আধিকারিকরা। রেললাইন থেকে সরিয়ে ফেলা হয় প্রায় গুঁড়িয়ে যাওয়া ট্রাক্টরটিকে। ঘণ্টা দুই পরে স্বাভাবিক হয় রেল পরিষেবা। বিকল ট্রাক্টরটির পলাতক চালকের খোঁজ শুরু করেছে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হবে মালগাড়ির চালককেও।