
চলন্ত ট্রেনে এক ব্যক্তি শ্লীলতাহানি করছে এক মহিলা যাত্রীর। কামরায় সেইসময় অন্য যাত্রীদের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন এক পুলিশকর্মীও। অভিযোগ, মহিলাকে বাঁচাতে কোনওরকম তৎপরতা দেখা যায়নি পুলিশকর্মীর মধ্যেও। কামরায় উপস্থিত ছিলেন বেশ কয়েকজন যাত্রীও। অথচ হাতপা গুটিয়ে মহিলার শ্লীলতাহানির দৃশ্য চুপচাপ দেখছিলেন তাঁরাও। কেউ আবার মহিলার শ্লীলতাহানির দৃশ্য বন্দি করছিলেন ফোনের ক্যামেরায়। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি মুম্বইয়ের। দিল্লি বা বেঙ্গালুরুতে প্রকাশ্যে মহিলাদের শ্লীলতাহানির ঘটনা এই ক’বছরে গা সওয়া হয়ে গেছে দেশবাসীর। এবার সেই তালিকায় ঢুকে পড়ল দেশের বাণিজ্য নগরীর নাম।
গত বৃহস্পতিবার রাতের ঘটনা। রাত ১১টা নাগাদ মুম্বইয়ের বুক চিরে ঝমঝমিয়ে ছুটে যাচ্ছিল দাদর-কল্যাণ লাইনের লোকাল ট্রেন। ট্রেনে প্রতিবন্ধীদের জন্য সংরক্ষিত কামরায় উঠেছিলেন এক মহিলা। কামরায় উপস্থিত ছিলেন হাতে গোনা কয়েকজন সহযাত্রী এবং একজন পুলিশকর্মী। কামরায় উপস্থিত ছিল আরও এক ব্যক্তি। যে আদতে প্রতিবন্ধী নয়। অভিযোগ, ওই ব্যক্তি উল্টোদিকের আসনে বসা মহিলার সঙ্গে কথা বলতে বলতে আচমকা মহিলার হাত ধরে টানাটানি শুরু করে। তার খপ্পর থেকে রেহাই পেতে আপ্রাণ চেষ্টা করতে থাকেন মহিলা। রেহাই যদিও মেলেনি। উল্টে মহিলাকে মারধর করার পাশাপাশি তাঁকে ঠেলতে ঠেলতে একেবারে ট্রেনের দরজার দিকে নিয়ে যায় লোকটি। আর একটু হলেই ছুটন্ত ট্রেন থেকে ওই মহিলা পড়ে গিয়ে ঘটে যেতে পারত মারাত্মক দুর্ঘটনা। কিন্তু ভাগ্যক্রমে তা শেষ অবধি হয়নি। মহিলাকে টানতে টানতে ফের কামরার ভিতরের দিকে নিয়ে আসে ওই ব্যক্তি। শুরু হয় মহিলার শ্লীলতাহানির চেষ্টা।
চলন্ত ট্রেনে মহিলার শ্লীলতাহানির ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় আপলোড হতেই মুহুর্তে তা ভাইরাল হয়ে যায়। মুম্বইয়ে মেয়েদের নিরাপত্তা নিয়ে সমালোচনায় সরব হন নেটিজেনরা। ভিডিওটি নজরে আসতেই নড়েচড়ে বসে স্থানীয় প্রশাসন। ঘটনার তদন্তে নেমে চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসে পুলিশের হাতে। জানা যায়, অভিযুক্ত ব্যক্তির নাম রফিক শেখ। সে শ্লীলতাহানির শিকার ওই মহিলার কাছ থেকে অনেক টাকা পেত। সেই টাকা চেয়ে বৃহস্পতিবার চলন্ত ট্রেনে মহিলার উপর চড়াও হয় রফিক। এই নিয়ে দুপক্ষের মধ্যে বচসা শুরু হয়। তারপরেই রফিক মহিলাকে মারধরের পাশাপাশি শ্লীলতাহানি করার চেষ্টা করে বলে জানতে পারে পুলিশ। রফিককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।