রাত তখন ১০টা। ওড়িশার তিতলাগড় স্টেশনে তখন ইতস্তত বিক্ষিপ্ত কিছু যাত্রীর ভিড়। হঠাৎই তাঁরা অবাক চোখে দেখেন একটা ট্রেন ইঞ্জিন ছাড়াই ছুটে আসছে লাইন ধরে। প্ল্যাটফর্ম পার করতে থাকে ট্রেনটি। যাত্রী বোঝাই ট্রেন। আমেদাবাদ-পুরী এক্সপ্রেস। কিন্তু এ কি করে সম্ভব? একটা ট্রেন কীভাবে ইঞ্জিন ছাড়া ছুটে চলেছে? আপাত বিস্ময় কাটিয়ে প্ল্যাটফর্মে দাঁড়ানো মানুষজন বুঝতে পারেন একটা অঘটন কিছু হয়েছে। তাঁরা চলন্ত ট্রেনটির যাত্রীদের লক্ষ্য করে ইশারায় চেন টেনে ট্রেন থামানোর পরামর্শ দিতে থাকেন। কিন্তু যাত্রীরা কেউ বুঝে উঠতে পারেননি কেন বাইরে দাঁড়ানো মানুষজন অমন করছেন! ট্রেন তো দিব্যি চলছে! তাই বিশেষ গুরুত্বও দেননি কেউ।
ইঞ্জিন ছাড়া ছুটতে থাকা ট্রেনের খবর ততক্ষণে পৌঁছে গেছে রেল আধিকারিকদের কাছে। তাঁরা বেশ বুঝতে পারেন কী ভয়ংকর দুর্ঘটনার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। যে কোনও সময়ে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। প্রাণহানি হতে পারে যাত্রীদের। খবর যায় সামনের কেসিঙ্গা জংশনে। অবশেষে সেখানে লাইনের ওপর পাথর ফেলে ইঞ্জিনবিহীন ট্রেনটিকে থামাতে সমর্থ হন রেলকর্মীরা। যদিও ততক্ষণে ১০ কিলোমিটার পথ বিনা ইঞ্জিনেই ছুটে ফেলেছে আস্ত যাত্রী বোঝাই ট্রেনটি। কোনও সমস্যা ছাড়াই ট্রেন থামাতে পারায় এ যাত্রায় অল্পের জন্য রক্ষা পান যাত্রীরা। রেল সূত্রের খবর, তিতলাগড় স্টেশন থেকে লাইনটি ঢালু জমিতে পাতা আছে। এদিকে ট্রেনের ইঞ্জিন সান্টিং করতে গিয়ে রেলকর্মীরা লক্ষ্য করেননি স্কিড ব্রেক মারা নেই। ফলে ইঞ্জিন সরানোর পর ট্রেনটি ঢালুতে নিজের মত গড়াতে থাকে। একটা গতিতে আপন খেয়ালে ছুটতে থাকে চাকা। ইতিমধ্যেই গাফিলতির অভিযোগে ৭ রেলকর্মীকে সাসপেন্ড করেছে রেল দফতর। কীভাবে এমন কাণ্ড ঘটল তার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত শুরু হয়েছে।