Sports

শেষ মুহুর্তের গোলে জিতল কলকাতা

লিগ টেবিলের তলানিতে থাকা গোয়াকে হারিয়ে টেবিলের ২ নম্বরে উঠে আসার সুযোগ কী কাজে লাগাতে পারবে কলকাতা? প্রশ্নটা ঘুরপাক খাচ্ছিল আইএসএল ২০১৬-র সবচেয়ে বেশি ড্র করা দলের সামনে। এদিনের সুবর্ণ সুযোগকে কাজে লাগানো জরুরি। তাই শুরু থেকেই আক্রমণে জোর দেন মলিনা। হিউম, দ্যুতিকে সাইডলাইনে বসিয়ে পস্টিগা, রুইদাস, বেলেনকোসোদের সামনে রেখে আক্রমণের ছক কষেন তিনি। খেলার শুরু থেকেই সেই ছক কাজে লাগতে শুরু করে। জিকোর ছেলেদের পায়ে বলই যেতে দেওয়ার সুযোগ দিচ্ছিল না কলকাতা। একের পর এক আক্রমণ ক্রমশ চাপে ফেলে দেয় গোয়াকে। ডিফেন্স সামলাতে দলটা এতটাই ব্যস্ত হয়ে পড়ে যে কাউন্টার আক্রমণের কথা প্রায় ভুলেই গিয়েছিল। খেলা যত এগিয়েছে ততই চাপ বাড়িয়েছে কলকাতা। আর তাতেই আসে সাফল্য। ২৮ মিনিটের মাথায় রুইদাসের মাপা ক্রসে হেড দিয়ে গোয়ার জালে বল জড়িয়ে দেন বেলেনকোসো। প্রথমার্ধের শেষের দিকে একটা দুরন্ত হেড ক্রসবারে লেগে না ফিরলে কলকাতা ২ গোলে এগিয়ে থাকত। যদিও প্রথমার্ধে পস্টিগার হলুদ কার্ড দেখার মধ্যে তাঁর ফর্মে খেলতে না পারার গ্লানি ফুটে উঠেছে। কয়েকটি কাউন্টার আক্রমণ করলেও তাতে গোল করতে পারেনি গোয়া।

দ্বিতীয়ার্ধে কিন্তু নিজেদের চাপ কাটিয়ে আক্রমণের তেজ বাড়ায় গোয়া। পরপর আক্রমণ আছড়ে পড়তে থাকে কলকাতার বক্সে। তৈরি হতে থাকে গোলের সম্ভাবনা। ৫০ মিনিটের মাথায় বল ক্লিয়ার করতে গিয়ে নিজের গোলেই সপাটে শট করেন রবার্ট। কারও কিছু করার ছিল না। কিন্তু কপাল জোড়ে সেমসাইড আটকে যায় বলটা পোস্টে লেগে ফেরায়। এর ৩ মিনিট পর রবার্ট হলুদ কার্ড দেখেন। ভয়ংকর জায়গা থেকে ফ্রি কিক পায় গোয়া। কিন্তু কাজে লাগাতে পারেনি। ৬৭ মিনিটে হলুদ কার্ড দেখেন গোয়ার জিওফ্রে। ৬৯ মিনিটে গোয়ার প্রায় নিশ্চিত গোল হাতছাড়া করেন রবীন সিং। ফাঁকা গোলে হেড করার সুযোগ পেয়েও তাঁর দুর্বল হেড সোজা গিয়ে পড়ে কলকাতার গোলকিপারের হাতে।


উল্টোদিকে কলকাতাকে দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই ছন্নছাড়া লেগেছে। যা অন্যান্য দিনেও চোখে পড়ছে। প্রথমার্ধে যে দাপটে কলকাতা খেলছে দ্বিতীয়ার্ধে সেই দাপট আর থাকছে। ফলে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এগিয়ে থেকেও শেষে প্রতিপক্ষের গোলে খেলা ড্র হয়ে যাচ্ছে। খেলার ৭৩ মিনিটে গোয়ার জিওফ্রের দিকে ঘুষি পাকিয়ে তেড়ে যেতে দেখা যায় কলকাতার গোলকিপার দেবজিতকে। যারজন্য তাঁকে হলুদ কার্ড দেখতে হয়। একের পর এক আক্রমণ হতে থাকলে যা হয় সেই সুফল অবশেষে গোয়ার হাতে আসে ৭৯ মিনিটের মাথায়। মান্দারাওয়ের মাপা শট কলকাতার জালে জড়াতেই উল্লাসে ফেটে পড়েন দর্শকেরা। খেলায় ফেরে সমতা। ৮৪ মিনিটের মাথায় হিউমকে নামিয়ে শেষ মুহুর্তে ম্যাজিক দেখাতে চেয়েছিলেন মলিনা। কিন্তু ঝিমিয়ে পড়া কলকাতাকে আর জাগানো যায়নি। ইনজুরি টাইমে একটা কাউন্টার আক্রমণে দ্যুতির দুরন্ত শট কলকাতাকে এগিয়ে দিতে পারত। কিন্তু সে বলও ফেরে ক্রস বারে লেগে। মোটামুটি যখন সবাই ধরেই নিয়েছে খেলা ড্র তখনই চমকে দিলেন কলকাতার পিয়েরসন। একটি ক্রসে আলতো পায়ের ছোঁয়ায় খেলা শেষ হতে ২ মিনিট বাকি থাকতে গোয়ার জালে বল জড়িয়ে দেন তিনি। ২-১-এ এগিয়ে যায় কলকাতা। যেখান থেকে ফের গোল শোধ করা প্রায় অসম্ভব ছিল গোয়ার কাছে। আর হয়ও তাই। গোয়াকে হারিয়ে লিগ টেবিলের ২ নম্বরে উঠে এল কলকাতা।


Show Full Article

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button