মোদ্দা কথাটা যদি এক লাইনে বলতে হয় তাহলে তা হল আইএসএলের ফাইনালে পৌঁছে গেল অ্যাটলেটিকো দে কলকাতা। কিন্তু সেই ফাইনালে পৌঁছনোর রাস্তায় দ্বিতীয় লেগে এদিন মুম্বইয়ের মাঠে যা যা ঘটল তা না বললে রিপোর্ট অসম্পূর্ণ থেকে যায়। লাল কার্ড, ম্যাচের সিংহভাগ সময় কলকাতার ১০ জনে খেলা, কলকাতার কোচ মলিনার বিতর্কিত চূড়ান্ত রক্ষণাত্মক নীতি, মার্কি পস্টিগা, হিউম, দ্যুতিহীন এক অদ্ভুত দল গঠন এবং শেষমেশ খেলার শেষ বাঁশি বাজার পর মাঠে মারামারি। সবমিলিয়ে ০-০ গোলে শেষ হওয়া ম্যাচে মশলার অভাব ছিলনা। সেমিফাইনালের প্রথম লিগে ধারে ভারে এগিয়ে থাকা মুম্বইকে ৩-২ গোলে হারিয়েছিল কলকাতা। ফলে দ্বিতীয় লিগে ড্র করলেই ফাইনালের টিকিট নিশ্চিত ছিল। অন্যদিকে ফোরলানহীন মুম্বইকে ফাইনালের টিকিট পেতে ২ গোলে জিততেই হত। এই অবস্থায় খেলতে নেমে এদিন শুরু থেকে তেড়েফুঁড়ে আক্রমণ শুরু করেন গোরিয়ান, সুনীল ছেত্রী, সনি নর্ডিরা। অন্যদিকে শুরু থেকে ৪ বিদেশি লম্বা লম্বা খেলোয়াড়কে রক্ষণে রেখে মলিনা বুঝিয়ে দেন গোল করা নয়, গোল বাঁচানোই তাঁর এদিনের অঙ্ক। ফলে কলকাতার গোলে চাপ বাড়তে থাকে। যদিও এর ফাঁকেই দু একটা সুবর্ণ সুযোগ এসে যায় কলকাতার সামনে। অবশ্যই সৌজন্যে হাবি লারা, রুইদাসরা। খেলা ভালই চলছিল। কিন্তু তাল কাটল খেলার ৪৩ মিনিটে কলকাতার রবার্টের পরপর দুটো হলুদ কার্ড। যার আদপ অর্থ লাল কার্ড দেখে মাঠের বাইরে যাওয়া। প্রথমার্ধেই শক্তিশালী মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে ১০ জন হয়ে যায় কলকাতা। ফলে একেই রক্ষণে জোর দেওয়া কলকাতার পুরো দলটাই রক্ষণে নেমে যায়। সমস্যা ছিল প্রথমার্ধের বাকি সময় ও পুরো দ্বিতীয়ার্ধ। কিন্তু চিনের প্রাচীরের মত কলকাতার রক্ষণ ভেঙে মুম্বই সুবিধে করে উঠতে পারছিল না দ্বিতীয়ার্ধেও। তারমধ্যে ফাঁক ফোকর গলে যে কটি সুযোগ মুম্বইয়ের সামনে তৈরি হয়েছে, সে সুযোগে জল ঢেলে দেয় দেবজিতের দুরন্ত গোলকিপিং। ফলে ১০ জনের বিরুদ্ধে ১১ জনে খেলেও অ্যাডেড টাইম মিলিয়ে দ্বিতীয়ার্ধে ৪৯ মিনিটেও কলকাতার গোলের মুখ খুলতে পারেনি মুম্বই। অজস্র কর্নার, সেট পিসে গোল করার মত জায়গা থেকে ফ্রি কিক সবই জুটেছিল কপালে। কিন্তু গোল করতে পারেননি সুনীল ছেত্রীরা। খেলা শেষের বাঁশি বাজার সঙ্গে সঙ্গে ফাইনালে যাওয়ার উল্লাসে ফেটে পড়ে কলকাতা। কিন্তু সেই সাফল্য তারিয়ে উপভোগ করার আগেই ফের নতুন ঝামেলা। দুই দলের খেলোয়াড়েরা হঠাৎই হাইভোল্টেজ ম্যাচের শেষে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন। মুম্বইয়ের হারের ক্ষোভ কী এভাবেই বেরিয়ে এল! প্রশ্ন উঠছে ফুটবল মহলে।