ইস্টবেঙ্গলকে ২ গোলে হারিয়ে ডার্বি জিতল এটিকে মোহনবাগান
মরসুমের প্রথম ডার্বি জিতল এটিকে মোহনবাগান। ইস্টবেঙ্গলকে ২-০ গোলে হারিয়ে দুরন্ত জয় ছিনিয়ে নেয় সবুজ মেরুন। গোল করেন রয় কৃষ্ণা ও মানবীর সিং।
মারগাও : ডার্বি মানেই একটা টানটান উত্তেজনা। এবার ২টি নতুন বিষয় হল ডার্বিতে। প্রথমত মোহনবাগান এই প্রথম ইস্টবেঙ্গলের মুখোমুখি হল এটিকে মোহনবাগান হিসাবে। ২ নম্বর হল এই প্রথম কোনও ডার্বি হল দর্শক শূন্য স্টেডিয়ামে।
তবে তার জন্য ডার্বির টানটান উত্তেজনায় তেমন খামতি পারেনি। বাড়িতে হোক বা পাড়ায় ব্যবস্থা করা টিভিতে বা ক্লাবে, সমর্থকদের উত্তেজনার পারদ ছিল সমান চড়া।
গোয়ার তিলক স্টেডিয়ামে এদিন প্রথমার্ধে কিন্তু বল দখলের লড়াইয়ে এগিয়ে ছিল ইস্টবেঙ্গল। ইস্টবেঙ্গল কোচ রবি ফাওলার যেভাবে খেলার রণসজ্জা তৈরি করেন তাতে ইস্টবেঙ্গলকে বেশ সপ্রতিভ দেখাচ্ছিল। ছোট ছোট পাসে এগিয়ে যাওয়া। গোলের সম্ভাবনা তৈরি করা, সবই হচ্ছিল।
মোহনবাগানও যে বসে ছিল এমনটা নয়। বল পেলেই তারা উঠে আসছিল ইস্টবেঙ্গল গোলে। ২ দলই গোলের সম্ভাবনা তৈরি করলেও তা জালে জড়াতে পারছিলনা। এমন করেই কেটে যায় প্রথমার্ধ।
দ্বিতীয়ার্ধে ২ কোচই যে তাঁদের দলকে বিপক্ষের দুর্বলতার কথা জানাবেন তা অনুমেয় ছিল। দ্বিতীয়ার্ধে খেলতে নেমে হাবাসের মোহনবাগান কিন্তু আরও কিছুটা আক্রমণাত্মক ছিল। বরং ইস্টবেঙ্গলকে কিছুটা ক্লান্ত বলে মনে হচ্ছিল।
দ্বিতীয়ার্ধের খেলা শুরুর ৪ মিনিট পরেই ইস্টবেঙ্গলের গোল বক্সের বাইরে বল পান রয় কৃষ্ণা। আর তাঁর বাঁ পায়ের যাদুর কথা সকলের জানা। সেই যাদু ফের একবার দেখা গেল। জোরাল শট সোজা দেবজিৎ মজুমদারকে পৌঁছতেও না দিয়ে ঢুকে যায় গোলে। এক গোলে এগিয়ে যায় মোহনবাগান।
গোল খাওয়ার পর ইস্টবেঙ্গল আক্রমণের চেষ্টা করেছে। মোহন গোলের মুখেও পৌঁছেছে। কিন্তু কোথাও গিয়ে ফিনিশারের অভাব এদিন স্পষ্ট। পিলকিংটন চেষ্টা যে করেননি এমনটা নয়। কিন্তু কোথাও গিয়ে মোহনবাগানের শক্ত ডিফেন্স ভাঙতে পারেনি লাল হলুদ।
প্রীতম কোটাল এদিন দুরন্ত স্টপারের কাজ করেছেন। মাঝমাঠে যেখানে মোহনবাগানের ম্যাকহিউজ দুরন্ত খেলছেন, সেখানে ইস্টবেঙ্গলের মাঝমাঠকেও ক্রমশ ছন্নছাড়া মনে হয়েছে।
তবে মরিয়া আক্রমণ বেশ কয়েকটা তৈরি করেছে তারা। যার মধ্যে ২-৩টিতে গোলের সম্ভাবনাও তৈরি হয়েছিল। কিন্তু সেই ফিনিশিংয়ের অভাবটা রয়েই গেল। বরং ৮৫ মিনিটের মাথায় প্রতি আক্রমণে গিয়ে প্রায় মাঝমাঠ থেকে বল নিয়ে ছুটতে শুরু করা মানবীর সিং যেভাবে উইং ধরে ছুটে সময় নিয়ে গোলের সঙ্গে একটা কোণাকুণি অবস্থান তৈরি করে বাঁ পায়ের জোরাল শটে ইস্টবেঙ্গলের গোলে বল জড়ালেন তা দেখে তারিফ করেছেন বহু ফুটবলার।
এই গোলের মধ্যে গিয়ে মোহনবাগান ২-০ গোলে এগিয়ে যায়। এরপর ইস্টবেঙ্গল চেষ্টা করলেও গোল তারা আর করতে পারেনি। খেলার শেষ বাঁশি বাজার পর বাংলার সবুজ মেরুন সমর্থকেরা আনন্দে ফেটে পড়েন।
এ আনন্দ যে সে আনন্দ নয়। ডার্বি জেতার আনন্দ। হোয়াটসঅ্যাপ, ফেসবুক সহ নানা সোশ্যাল মিডিয়ায় বার্তা আসতে থাকে। আসতে থাকে আনন্দের বহিঃপ্রকাশ।