এ গ্রামে খোলা আকাশের নিচে পচে মৃতদেহ, অথচ দুর্গন্ধ বার হয়না
এ এমন এক গ্রাম যেখানে প্রাচীন রীতি মেনে দেহ পোড়ানো বা কবর দেওয়া হয়না। বরং খোলা আকাশের নিচে ফেলে রাখা হয় পচানোর জন্য।
এমন নানা প্রথার কথা শোনা যায় যা শুনলে অবিশ্বাস্য মনে হয়। একটি গ্রামে কারও মৃত্যু হলে সৎকারের নিয়ম শুনে পর্যটকরাও তা দেখতে ছুটে যান। আর দেখতে যান সেই গাছটাকে যা নাকি সব দুর্গন্ধ শুষে নেয়! এ গ্রামের প্রাচীন রীতি হল এখানে কারও মৃত্যু হলে তাঁর দেহ পোড়ানো বা কবর দেওয়া হয়না। ফেলে রাখা হয় খোলা আকাশের নিচে। যদিও এটা ঠিক জরাথুস্ট্রীয়দের মত আবার পাখিদের খাওয়ার জন্য মৃতদেহ খোলা আকাশের নিচে ফেলে রাখাও নয়।
এ গ্রামে মৃতদেহ একটি বাঁশের খাঁচা তৈরি করে তার মধ্যে শুইয়ে রাখা হয়। সেখানেই পড়ে থাকে দেহ। রোদ, জল, বৃষ্টি সবই সেই দেহের ওপর পড়ে। ক্রমে দেহটিতে স্বাভাবিক নিয়মে পচন ধরে। পচে গলে দেহের মাংস সব নষ্ট হয়ে যায়। পড়ে থাকে কঙ্কাল।
কঙ্কাল অবস্থায় পৌঁছে গেলে তখন সেই খাঁচা থেকে কঙ্কালটি বার করে একটি পাথরের ধাপির ওপর সেই করোটি ও বাকি হাড়গোড় রেখে দেন গ্রামবাসী। এই পাথরের ধাপিটি অনেকটা সিঁড়ির পর ধাপে ধাপে নামে। যার প্রতি ধাপে সারি দিয়ে রাখা থাকে মৃতদের কঙ্কাল।
যেখানে দেহ বাঁশের খাঁচায় ঢাকা দিয়ে পচানো হয় সেখানে তো তাহলে অতি পচা দুর্গন্ধ বার হওয়ার কথা। কিন্তু গ্রামবাসীরা এই দেহ পচানোর কাজটা করেন একটি নির্দিষ্ট গাছের তলায়। তাঁদের বিশ্বাস এই গাছই পচা দেহ থেকে বার হওয়া সব দুর্গন্ধ শুষে নেয়।
গাছই সেই দুর্গন্ধ শুষে নেয় কিনা তা আজও নিশ্চিত করে বলা না গেলেও পর্যটকরা এটা দেখে হতবাক হয়ে যান যে পচা মানবদেহ থেকে কোনও পচা গন্ধ কিন্তু সেখানে বার হয়না। কেন দুর্গন্ধ পাওয়া যায়না তার সঠিক কারণ আজও অজানা।
ইন্দোনেশিয়ার বালির বাতুর লেকের ধারে পাহাড় জঙ্গলের মধ্যেই এই বালি আগা জনজাতির বাস। এঁরা ওই জঙ্গলের মধ্যের গ্রামে নিজেদের মত করে প্রাচীন রীতি প্রথা মেনেই আজও জীবন কাটান।