এখানে বর্ষবরণে একদিন সুনসান চত্বরে ঘরের মধ্যে বিদ্যুৎহীন জীবন কাটান মানুষ
এ যেন স্বেচ্ছা নির্বাসন। গোটা এলাকার মানুষ প্রতিবছর বর্ষবরণ করেন লকডাউন আবহে, ঘরের মধ্যে, বিদ্যুৎবিহীন একটি দিন কাটিয়ে। এটাই তাঁদের বর্ষবরণ।
বর্ষবরণ বা নতুন বছরকে স্বাগত জানানো মানেই তো উৎসবের আবহ। মানুষ সেদিন ঘরে না থেকে বেরিয়ে আসেন, পার্টি করেন, বেড়াতে যান, উৎসব করেন, সকলে একত্র হয়ে আনন্দঘন দিন কাটান। এটাই পরিচিত দৃশ্য। কিন্তু বিশ্বের একটি প্রান্তে এক অতি পরিচিত দ্বীপ প্রদেশ রয়েছে যেখানে তাঁদের নিয়মে বর্ষবরণ হয় মার্চ মাসে। যেমন বঙ্গাব্দে নববর্ষ পালিত হয় এপ্রিলে।
ইন্দোনেশিয়ার বালি এমন এক দ্বীপ যেখানে বছরের প্রতিটা দিন পর্যটকের ভিড় লেগে থাকে। বালি সারাবছর সরগরম থাকে মানুষের ভিড়ে। কেবল বছরের একটি দিন বালিকে চেনা যায়না। একদম বদলে যায় বালি।
দিনটি তারা পালন করে নিয়েপি নামে। এই নিয়েপি হল বালির হিন্দুদের বর্ষবরণ। এই দিন বালি দ্বীপকে দেখে চেনার উপায় নেই। স্তব্ধ হয়ে যায় সারাবছর সরগরম থাকা এই গোটা চত্বর।
কোনও গাড়ি চলেনা, কোনও বিমান বিমানবন্দরে ওঠানামা করেনা, কেউ রাস্তায় বার হন না, কোনও দোকান খোলে না, জ্বালানি তেল বিক্রি হয়না, পুরো বালিতে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে রাখা হয়, ইন্টারনেট পরিষেবাও বন্ধ থাকে, বন্ধ থাকে যাবতীয় কলকারখানা।
বাড়ির মধ্যে অন্ধকারে বা খুব বেশি হলে প্রদীপের আলোয় একটা দিন কাটান মানুষজন। রান্নাও কার্যত প্রায় বন্ধ থাকে স্থানীয় বাসিন্দাদের পরিবারে।
এ যেন এক স্বেচ্ছা নির্বাসন। আর এই অসীম শান্তির মধ্যেই বালির হিন্দুরা বর্ষবরণ করে নতুন বছরকে স্বাগত জানান। ক্যালেন্ডার অনুযায়ী এই একটি দিন মার্চ মাসে আসে।
তবে তারিখ তিথি অনুযায়ী এদিক ওদিক একটু হয়। তাই প্রতিবছর নিয়েপি কবে তা আগে থেকেই জানিয়ে দেওয়া হয়। আর সেদিন বালি এক জনমানবশূন্য স্তব্ধ দ্বীপে পরিণত হয়।