মহাকাশে ফের নয়া ইতিহাস গড়ল নাসা। মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা-র ২ মহিলা নভশ্চর গত শুক্রবার হেঁটে বেড়ালেন অসীম শূন্যের মাঝে। মিশকালো মহাকাশে। আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনের একটি ব্যাটারি চার্জার খারাপ হয়েছিল। যা ঠিক করতে স্টেশন থেকে বার হয়ে মহাকাশে যেতেই হত। সেই গুরুদায়িত্ব কাঁধে তুলে নেন ২ মার্কিন মহিলা নভশ্চর জেসিকা মেয়ার ও ক্রিস্টা কচ। এই প্রথম শুধু মহিলারা মহাকাশে হেঁটে বেড়ালেন। ব্যাটারি চার্জার সারালেন সাফল্যের সঙ্গে।
এতদিন মহিলা নভশ্চররা মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র থেকে কোনও পুরুষের সঙ্গেই মহাকাশে হাঁটতে বেরিয়েছেন। কাজ করেছেন। কিন্তু কেবল ২ মহিলা একা মহাকাশে বার হয়ে কাজ করে ফের স্পেস স্টেশনে ফিরে এলেন, এটা ইতিহাস। জেসিকা ও ক্রিস্টা ২ জনে ৭ ঘণ্টা ১৭ মিনিট মহাকাশে কাটান। সেখানে টানা কাজ করেন। নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই সারিয়ে ফেলেন ব্যাটারির সমস্যা। মাঝে শুধু একবার থামতে হয়েছিল তাঁদের। তাঁরা যখন মহাকাশে ভেসে ব্যাটারি সারাচ্ছেন তখন ফোন আসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের। দুজনকেই অসীম সাহসী বলে ব্যাখ্যা করে তাঁদের কাজের জন্য অভিনন্দন জানান ট্রাম্প। অবশ্য জেসিকারা জানান, এটা তাঁদের কাজ। আর সেটাই করছেন। তবে তাঁরা যে ইতিহাস গড়েছেন সেকথাও তাঁরা জানেন বলে প্রেসিডেন্টকে জানান ২ মহিলা।
১৯৮৪ সালে প্রথম মহিলা হিসাবে মহাকাশে স্পেসওয়াক করেন রাশিয়ার স্বেতলানা সাভিস্তকায়া। তবে তাঁর সঙ্গে এক পুরুষ নভশ্চরও ছিলেন। রাশিয়ার ভ্লাদিমির জানিভেকভ। সেই বছরই স্বেতলানার পর এক মার্কিন মহিলা স্পেসওয়াক করেন। ক্যাথরিন সুলেভান ওই বছরের শেষের দিকে স্পেসওয়াক করেন।
আসলে তখন ছিল ঠান্ডা যুদ্ধের সময়। আর মহাকাশ বিজ্ঞানে শুরু থেকেই রাশিয়ার সঙ্গে এঁটে উঠতে পারছিল না আমেরিকা। ফলে রাশিয়া করলে তাদেরও সেটা করে দেখাতে হবে এমন একটা রোখ চেপে গিয়েছিলেন আমেরিকার। এদিন শুধু মহিলা নভশ্চরদের মহাকাশে ভেসে বেড়ানোর রেকর্ড গড়ার পাশাপাশি ক্রিস্টা কচ আরও একটি রেকর্ড গড়তে চলেছেন। তিনিই হতে চলেছেন প্রথম মহিলা নভশ্চর যিনি স্পেস স্টেশনে ৩২৮ দিন কাটাবেন। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা