অকালে চলে গেলেন অভিনেতা ইরফান খান
গত সপ্তাহেই মাতৃবিয়োগ হয়েছে তাঁর। আর তার পরের সপ্তাহেই তিনিও চলে গেলেন। গত মঙ্গলবারই তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আর বুধবারই সব শেষ।
২০১৮ সালে এক বিরল ক্যানসারে আক্রান্ত হন ভারতীয় চলচ্চিত্রের অন্যতম নক্ষত্র ইরফান খান। যিনি শুধু ভারত নয়, গোটা বিশ্বেও নিজের প্রতিভার স্বাক্ষর রাখেন। অভিনয় করেন হলিউড ছবিতেও। নিউরোএন্ডোক্রাইন টিউমার ছিল তাঁর। বিদেশে দীর্ঘ চিকিৎসার পর তিনি মুম্বই ফেরেন। তারপর পরিবারের সঙ্গেই ছিলেন। ‘আংরেজি মিডিয়াম’ নামে একটি সিনেমায় অভিনয়ও করেন। ক্রমশ সুস্থও হয়ে উঠছিলেন। কিন্তু আচমকাই গত মঙ্গলবার তাঁর অবস্থার অবনতি হতে থাকে। ফলে লকডাউনের মধ্যেই তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়। তাঁর স্ত্রী ও ২ ছেলে তাঁকে নিয়ে যান হাসপাতালে। কোকিলাবেন ধীরুভাই আম্বানি হাসপাতালে। সেখানে তাঁকে আইসিইউ-তে রাখা হয়। কিন্তু অবস্থার অবনতি হতেই থাকে।
বুধবার ভোরেই রটে গিয়েছিল ইরফান খান প্রয়াত। কিন্তু তা নিশ্চিত ছিলনা। অবশেষে বুধবার বেলা বাড়তে খবর নিশ্চিত করেন তাঁর মুখপাত্র। মাত্র ৫৪ বছর বয়সে চলে গেলেন ইরফান খান। গত সপ্তাহেই তিনি তাঁর মাকে হারিয়েছেন। মায়ের শেষকৃত্যে যোগও দিতে পারেননি লকডাউন চলায়। জয়পুরে তাঁর মা সাইদা বিবির মৃত্যু হয়। তারপর তাঁর অন্তিমযাত্রা মুম্বইতে বসে অশ্রুসজল চোখে মোবাইলে লাইভ দেখেন ইরফান। লকডাউনে চাইলেও শেষবারের মত মায়ের কাছে যেতে পারেননি তিনি।
মঙ্গলবার তিনি নিজেই অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁর কোলোনে সমস্যা ছিল বলে হাসপাতাল জানিয়েছে। চিত্র পরিচালক সুজিত সরকারের সিনেমা পিকু-তে অভিনয় করেন ইরফান খান। ইরফানের মৃত্যুতে সুজিত জানান তিনি তাঁর খুব কাছের বন্ধুকে হারালেন। এত অসাধারণ অভিনেতাকে হারালেন। তিনি লেখেন, ইরফানের সঙ্গে ফের তাঁর দেখা হবে। ইরফানের আত্মার শান্তি কামনা করেন।
ইরফান খানের শেষ সিনেমা আংরেজি মিডিয়াম মুক্তি পাওয়ার পরদিনই করোনার জন্য সব হল বন্ধ করে দেওয়া হয়। ফলে ওই সিনেমার সাফল্য দেখে যাওয়ার সুযোগ পাননি ইরফান। তারপর এদিন অকালেই সব ফেলে চলে গেলেন ভারতীয় চলচ্চিত্রের বলিষ্ঠ অভিনেতা ইরফান খান। যিনি তাঁর নির্বাক অভিনয় ও ২টি গভীর চোখ দিয়ে অনেক কথা বলে যেতেন পর্দায়। মানুষকে মুগ্ধ করতেন। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা