এ শহরে পৌঁছনোর একমাত্র পথ একটি ব্রিজ, শহরের নিচে খেলা করে মেঘ
এ শহরে পৌঁছনোর জন্য কোনও গাড়ি যাতায়াতের পথ নেই। গাড়ি এ শহরে পৌঁছয় না। একমাত্র পৌঁছনোর পথ একটি কংক্রিটের ব্রিজ। মেঘ খেলে বেড়ায় শহরের অনেক নিচে।
একটা শহরের চারধারে খাদ। একটা মালভূমির মত পাহাড়ের মাথার অংশ। সেখানেই গড়ে উঠেছে একটি শহর। যার চারধারে গভীর খাদ, উপত্যকা। আশপাশে শুধুই পাহাড় আর জঙ্গল। তার মধ্যেও চিন্তা হল ধস।
এই মালভূমির গা ধরে ক্রমশ ক্ষয় হচ্ছে। ধস নামছে। এভাবে ভূমিক্ষয় হতে থাকলে একটা সময় পরে এ শহর কেবল ছবিতেই জীবিত থাকবে। তাই একে মৃত শহরও বলা হচ্ছে।
তবে এ শহরের আকর্ষণ কিন্তু পর্যটকদের টেনে আনে এখানে। শুধু পর্যটকরাই বা কেন, একের পর এক সিনেমার শ্যুটিং হয়ে চলে এখানে। এমন দুর্দান্ত শ্যুটিং স্পট ছাড়তে চান না কোনও পরিচালকই।
তবে শহরে পৌঁছনোর জন্য পায়ে হাঁটা ছাড়া গতি নেই। একটি কংক্রিটের ব্রিজ উপত্যকা পার করে মানুষকে পৌঁছে দেয় এ শহরে। তবে সে ব্রিজ কেবল পায়ে হাঁটার জন্য। গাড়ি চলাচলের জন্য নয়। সাইকেল জাতীয় যান অবশ্য যেতে পারে এ ব্রিজ ধরে।
প্রকৃতি এখানে অপার সৌন্দর্য ঢেলে দিয়েছে। এ শহরে পৌঁছলে মেঘ দেখার জন্য উপরে তাকাতে হয়না। বরং নিচে তাকাতে হয়। সুউচ্চ এ শহরের অনেক নিচে পাহাড়ের ঢালে খেলে বেড়ায় সাদা মেঘ।
অপরূপ এ শহর তৈরি হয়েছিল আড়াই হাজার বছর আগে। ইতালির একটি জনজাতি এত্রাস্ক্যানরা এই চারধার ফাঁকা মালভূমির ওপর সিভিটা ডি বাগনোরেজিও শহরটি প্রতিষ্ঠা করেছিল। এখানকার বাড়িগুলি প্রাচীন ইতালীয় স্থাপত্যের কথা মনে করিয়ে দেয়।
ফুলে ফুলে ভরা এ শহর একসময় জমজমাট ছিল। কিন্তু এখন জনা ১১ থেকে ১৪টি পরিবার এখানে থাকে। বাকিরা সকলেই পরিযায়ী।
এখানে অধিকাংশ বাড়ি কিনে রেখেছেন ইতালির ধনী মানুষরা। তাঁরা এখানে ছুটি কাটাতে হাজির হন। এখানে কিছু দোকানপাট আছে। পর্যটকদের আনাগোনা লেগে থাকে বলে দোকানপাটও প্রয়োজন হয়।
ইতালি প্রশাসন আপাতত এই প্রাচীন শহরকে বাঁচাতে এর ঢাল ইস্পাতের পাত দিয়ে মুড়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে। যাতে শহরটিকে ক্ষয়ের হাত থেকে দীর্ঘদিনের জন্য বাঁচানো সম্ভব হয়। রোম থেকে ১২০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই ছবির মত সুন্দর শহরটি।