Lifestyle

কয়েকশো টন কমলালেবুই এই লড়াইয়ের একমাত্র অস্ত্র

এ এক লড়াই বটে। তবে তার অস্ত্রটি বেশ চমকে দেওয়ার মত। যা দিব্যি খাওয়াও যায়, আবার তা দিয়ে যুদ্ধও জেতা যায়।

ট্রে ভর্তি করে কমলালেবু। কত লেবু তা গুনে শেষ করা যাবেনা। টন টন কমলালেবু হাজির হয় একটি বিশাল চত্বরে। সেখানে বিশেষ ধরনের সাজে তৈরি থাকে এক পক্ষ। আর অন্য পক্ষ আসে ঘোড়ায় টানা গাড়িতে চেপে। তাদের সেই ঘোড়ার গাড়ির সামনে থাকেন এক নারী। আর ঘোড়ার গাড়িতে দাঁড়িয়ে থাকা যোদ্ধারা সব থাকেন বিশেষ পোশাকে।

মুখ থাকে ঢাকা। এক ধরনের মুখ ঢাকা হেলমেটে। এবার সেই ঘোড়ার গাড়ি চত্বরে প্রবেশ করার অপেক্ষা। তারপরই শুরু হয়ে যায় চত্বরে দাঁড়িয়ে থাকা সকলের সঙ্গে তাঁদের লড়াই।


ঘোড়ার গাড়ি থেকে শত শত কমলালেবু ছুটে আসে নিচে দাঁড়ানো প্রতিদ্বন্দ্বীদের দিকে। পাল্টা নিচে দাঁড়িয়ে থাকেন যাঁরা, তাঁরা ঘোড়ার গাড়ি তাক করে ছুঁড়তে থাকেন কমলালেবু।

আর এভাবেই লড়াই জমে ওঠে। গোটা চত্বর ঢেকে যায় কমলালেবুতে। পায়ের তলায় পড়ে, মানুষের গায়ে লেগে সেসব লেবু ততক্ষণে চটকে যায়। মানুষ মেখে যান কমলালেবুর রসে।


ইতালির ইভেয়া শহরে এই কমলালেবুর লড়াই চলে আসছে বহু বছর ধরে। ইভেয়া শহর বিখ্যাতই তার এই কমলালেবুর ৩ দিন ব্যাপী লড়াইয়ের জন্য। যা ফেব্রুয়ারি মাসেই অনুষ্ঠিত হয়।

রবিবার থেকে মঙ্গলবার, এই ৩ দিন বেছে হয় কমলালেবুর লড়াই। ৬০০ থেকে ৭০০ টন কমলালেবু লেগে যায় এই লড়াইয়ে। খাবার জন্য নয়, যুদ্ধের জন্য।

কথিত আছে ১১০০ খ্রিস্টাব্দে এই ইভেয়া শহরে গম বা ভুট্টা পেশাই করে তার আটা তৈরির কল চালানো ব্যক্তির তরুণী মেয়েকে তাঁর বিয়ের দিন চরম উত্যক্ত করা শুরু করে শহরের ডিউক। ডিউকের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর সাহস দেখান সেই তরুণী।

তরুণীর সঙ্গে এমন অন্যায় ও তরুণীর প্রতিবাদী কণ্ঠ গোটা শহরবাসীকে ডিউকের বিরুদ্ধে করে তোলে। তাঁরা ডিউকের প্রাসাদ আক্রমণ করে সেটা জ্বালিয়ে দেন। সেই ঘটনাকে সামনে রেখেই এই কমলালেবুর লড়াই চলে আসছে ১৯৪৭ সাল থেকে।

Show Full Article

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button