হলুদ কালো ১২০ কেজি চুলের অভিনব গাড়ি
হলুদ-সাদা-কমলা-কালো রঙের সত্যিকারের মানুষের চুল দিয়ে যন্ত্রসঙ্গীর ভিতর ও বাইরেটা কেশময়। নিয়মিত গাড়িতে লাগানো ১২০ কেজি চুলের ভালমতো করা হয় পরিচর্যা।
বিখ্যাত সাহিত্যিক সুবোধ ঘোষের ‘অযান্ত্রিক’ গল্পের কথা মনে পড়ে? আদ্যিকালের বদ্যি এক ‘মোটরগাড়ি’ চালক বিমলের আত্মার আত্মীয়।
যন্ত্রের সঙ্গে মানুষের মান-অভিমান, ভালোবাসা-ভরসা, মিলন-বিচ্ছেদের সম্পর্ক পাঠকের অন্তরকে নাড়া দিয়ে যায়। ইতালির বাসিন্দা মারিয়া লুসিয়া মুগনো আর তাঁর ‘চুলের গাড়ি’-র সম্পর্কটাও খানিকটা যেন ওইরকমেরই।
বেশ কিছু বছর আগে মারিয়া ফিয়াট ৫০০ মডেলের একটি মোটর গাড়ি কেনেন। মানুষ যদি সাজতে পারে, তবে গাড়ি কেন সাজবে না? তাই, নতুন গাড়িকে ‘গ্রুমিং’ করার পরিকল্পনা আসে মারিয়ার মাথায়।
পেশায় তো তিনি একজন ‘হেয়ার স্টাইলিস্ট’। তাঁর সংগ্রহে তো প্রচুর বাহারি চুল আছে। তাই দিয়ে গাড়ি সাজালে কেমন হয়? যেমন ভাবা তেমন কাজ।
হলুদ-সাদা-কমলা-কালো রঙের সত্যিকারের মানুষের চুল দিয়ে নতুন যন্ত্রসঙ্গীর ভিতর ও বাইরেটা কেশময় করে তুলতে উঠেপড়ে লাগেন মারিয়া।
অপরিসীম ধৈর্যের সেই কাজকে বাস্তবায়িত করতে পকেট থেকে খসে যায় ৮০ হাজার ইউরো! সময় লাগে প্রায় ৬ দিন। এত কষ্টের ফসল সেই গাড়ির চুলের সন্তানসম স্নেহে পরিচর্যা করেন ৪৭ বছরের মারিয়া।
রোজ তাকে বাইরে বার করেন না। সাজ নষ্ট হয়ে যাওয়ার ভয়ে। সপ্তাহে মাত্র ১ দিন গাড়ি নিয়ে ইতালির পাডুলার পথে বার হন তিনি। নিয়মিত গাড়িতে লাগানো ১২০ কেজি চুলের ভালমতো পরিচর্যা করেন মারিয়া। যদিও তাঁর গাড়িটি দেখে অনেকেই নাক সিটকান। তাতে কিছু যায়ও আসে না মারিয়ার।
এই গাড়িইতো তাঁকে এনে দিয়েছে বিশ্বখেতাব। ২০১৪ সালে সবথেকে বেশি পরিমাণ চুল দিয়ে সাজানো গাড়ি হিসেবে গিনেস বুকে নাম উঠেছে মারিয়া ও তাঁর ফিয়াটের। তাই প্রিয় চুলের গাড়ি নিয়ে গর্ব করতে বিন্দুমাত্র কুণ্ঠিত নন ইতালির ‘বিমল’ মারিয়া।