প্রবেশিকা ও দ্বাদশ শ্রেণির বোর্ডের পরীক্ষার নম্বর। এই দুইয়ের সমানুপাতিক মূল্যায়ন করেই কলা বিভাগে ছাত্রছাত্রীদের ভর্তি করানো হবে। গত ২৭ জুন এমনই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে যাদবপুরের কর্মসমিতি। কিন্তু ফের গত ৪ জুলাই কর্মসমিতির বৈঠক ডেকে রাতারাতি বদল করা হয় সিদ্ধান্তের। সেখানে ঠিক হয় প্রবেশিকা নয়, নম্বরের ভিত্তিতেই ভর্তি নেওয়া হবে ছাত্রছাত্রীদের। এতেই বেঁকে বসেন ছাত্রছাত্রীরা। তাঁদের দাবি, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ রাজ্য সরকারের চাপের মুখে নতি স্বীকার করেছেন। যেহেতু তার আগের দিন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন যদি যাদবপুরে ইঞ্জিনিয়ারিং ও বিজ্ঞান বিভাগে নম্বরের ভিত্তিতে ভর্তির প্রথা থাকে, তবে তা সব বিভাগের জন্যই প্রযোজ্য হওয়া উচিত। তার পরদিনই কর্মসমিতি বৈঠক করে কলা বিভাগ থেকে প্রবেশিকা তুলে, সেখানে নম্বরের ভিত্তিতে ছাত্র ভর্তিতে সিলমোহর দেয়।
এতে ক্ষুব্ধ ছাত্রছাত্রীরা অবস্থান বিক্ষোভ শুরু করেন। উপাচার্যকে ঘেরাও করা হয়। শিক্ষাবিদরাও এর বিরুদ্ধে সুর চড়ান। এমনকি এতে পঠনপাঠনের মান পড়ে যাবে বলেও অভিমত ব্যক্ত করেন অনেকে। এই সিদ্ধান্তের জন্য খোদ যাদবপুরের অধ্যাপক-অধ্যাপিকারাও ক্ষোভ ব্যক্ত করে অনেকে জানিয়ে দেন তাঁরা এই ভর্তি প্রক্রিয়ায় অংশ নেবেননা। অন্যদিকে ছাত্রদের বিক্ষোভ ক্রমশ জমাট বাঁধতে থাকে। ২০ জন ছাত্রছাত্রী অনশন শুরু করেন। এই অবস্থায় চারদিক থেকে চাপের মুখে উপাচার্য সুরঞ্জন দাস একবার রাজ্যপাল, একবার শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
ছাত্রছাত্রীদের অনশন তোলার জন্য কখনও উপাচার্য নিজে, কখনও সহ-উপাচার্য, কখনও রেজিস্ট্রার দফায় দফায় এসে অনুরোধ করেন। কিন্তু ছাত্রছাত্রীরা নিজেদের অবস্থানে অনড় ছিলেন। এরমধ্যে টানা ৩ দিন অনশনের পর ৪ জন পড়ুয়া অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। অন্যদের পরিস্থিতিও খুব ভাল ছিলনা। এই অবস্থায় কার্যত কোণঠাসা যাদবপুর কর্মসমিতি ফের বৈঠকে বসে গত মঙ্গলবার। সেখানেই সিদ্ধান্ত হয় যে তারা ৪ জুলাইয়ের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসছে। গত ২৭ জুনের সিদ্ধান্তই বলবত থাকছে। অর্থাৎ প্রবেশিকাই ফিরছে। এই সিদ্ধান্ত প্রকাশ্যে আসার পরই খুশিতে মেতে ওঠেন আন্দোলনরত ছাত্রছাত্রীরা। এই সিদ্ধান্ত বদলে তাঁদের লড়াইয়ের জয় দেখছেন আন্দোলনকারীরা।