জগদ্ধাত্রী পুজোর বৃহস্পতিবার দশমী। সকাল থেকেই তাই কৃষ্ণনগর রাজবাড়ি থেকে চন্দননগরের বিভিন্ন বারোয়ারিতে শুরু হয়েছিল প্রথা মেনে মাতৃবরণ। পাড়ার মহিলারা মিলে মাকে একদিকে যেমন সকাল থেকেই বরণে মেতেছিলেন, অন্যদিকে বারোয়ারি উদ্যোক্তারা ব্যস্ত ছিলেন জগদ্ধাত্রী ঠাকুর ভাসান নিয়ে। ভাসানের তোড়জোড় শুরু হয়ে গিয়েছিল সকালেই। এদিন চন্দননগরে সন্ধেয় কার্নিভাল ঘিরে ছিল বাড়তি উন্মাদনা। এমনিতেই চন্দননগরের জগদ্ধাত্রী বিসর্জন দেখতে বহু মানুষের ভিড় জমে। কলকাতার রেড রোডে দুর্গাপুজো কার্নিভালের আদলে জগদ্ধাত্রী কার্নিভাল চন্দননগরেও বাড়তি উন্মাদনার জন্ম দিয়েছিল সকাল থেকেই। বেলা যত গড়িয়েছে প্রস্তুতি তত দ্রুত সেরেছেন সকলে।
জগদ্ধাত্রী পুজোর জন্য বিখ্যাত কৃষ্ণনগর রাজবাড়ি। সেখানে এদিন সিঁদুর খেলায় মাতেন পরিবারের মহিলারা। সঙ্গে ছিলেন আগত মহিলারা। সকলে একসঙ্গে সিঁদুর খেলেন। মাকে বরণ করে নেন। তারপর বিসর্জনের যে আয়োজন হয় তাতে উন্মাদনার পারদ চড়ে। বহু মানুষ বিসর্জনে অংশ নেন। হাসি, আনন্দ, আবির খেলা, নাচ-এর মধ্যে দিয়ে গঙ্গা পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া হয় ঘটও। কৃষ্ণনগর যখন বিসর্জন ঘিরে দুপুরে মাতোয়ারা, তখন চন্দননগর কোমর কষছে বিকেল নামার অপেক্ষায়।
এবার ৭৬টি বারোয়ারি কার্নিভালে অংশ নিয়েছে। সকলেরই দুর্গাপুজো কার্নিভালের মত সময় ছিল বাঁধা। সন্ধে নামতে চন্দননগরে জগদ্ধাত্রী পুজোর অন্যতম আকর্ষণ আলোর খেলা বিসর্জনেও সমানভাবে নজর কাড়ে। বড় বড় গেট নিয়ে শোভাযাত্রা বার হয়। চন্দননগর অতিকায় জগদ্ধাত্রী প্রতিমার জন্য বিখ্যাত। অধিকাংশ প্রতিমাই লরিতে তোলা যায়না। ট্রলিতে নিয়ে আসা হয়। তারপর যে ঘাটে বিসর্জন হয় সেখানে বিশেষভাবে উৎরাই তৈরি করা আছে। যা সোজা নেমে গেছে গঙ্গার জলে। সেখান বিসর্জন অনুষ্ঠিত হয়। সন্ধে নামতে কার্নিভাল শুরু হলেও বিসর্জন হয়েছে ধীরে। কারণ প্রবল ভিড় আর শোভাযাত্রার কারণে খুবই ধীরে গঙ্গার দিকে এগিয়েছে প্রতিমা।