উল্কাপাত বা তারা খসা। মহাকাশ বিজ্ঞানীদের চোখে নিছক একটা মহাজাগতিক ঘটনা। সাধারণ মানুষের কাছে ইচ্ছাপূরণের মহাজাগতিক সুযোগ। কালেভদ্রে সেই সুযোগ পান কিছু ভাগ্যবান মানুষ। কিন্তু বিজ্ঞান আজ রকেটের গতিতে ছুটে চলেছে। সেই বিজ্ঞানের অভাবনীয় উন্নতির বলে বলীয়ান হয়ে এবারে যত খুশি ইচ্ছাপূরণের সুযোগ পেতে চলেছেন জাপানিরা। জাপানের মহাকাশ গবেষণা সংস্থার উদ্যোগে বিশ্বের প্রথম কৃত্রিম উপায়ে তৈরি উল্কাপাত রাতের আকাশে দেখতে চলেছেন হিরোশিমার মানুষ। পরিস্কার আকাশ ও সুন্দর আবহাওয়ার জন্য বিজ্ঞানীরা কৃত্রিম উল্কাপাতের পরীক্ষামূলক স্থান হিসেবে বেছে নিয়েছেন হিরোশিমাকে। ২০১৫ সালে প্রথম ‘শ্যুটিং স্টার চ্যালেঞ্জ’ প্রকল্পটির কথা ঘোষণা করে অ্যাস্ট্রো লিভ এক্সপিরিয়েন্স নামে সংস্থা। যেকোনো মুহুর্তে যেকোনো সময়ে যেকোনো রঙে উপগ্রহের সাহায্যে অজস্র উল্কাপাতের সমাহার তৈরি করা যাবে বলে সংস্থার দাবি। কিভাবে এমনটা সম্ভব সেকথাও জানিয়েছেন সংস্থার বিজ্ঞানীরা।
পৃথিবীর কক্ষপথে ঘুরতে থাকা একটি উপগ্রহ থেকে গোল বলের আকারের ধাতব বস্তু ছুঁড়ে দেওয়া হবে পৃথিবীর দিকে। বায়ুমণ্ডলে বলগুলি ঢুকলেই সেগুলি পরিণত হবে আগুনের গোলকে। সাধারণভাবে ঠিক যে ঘটনাটি ঘটে থাকে উল্কাপাতের সময়। হিরোশিমার আকাশে যেকোনো দিক থেকে সেই ছুটন্ত আগুনের গোলাকে দেখতে পাবেন সাধারণ মানুষ। প্রতিটি অগ্নিস্ফুলিঙ্গের স্থায়িত্ব হবে কমপক্ষে ৫ থেকে ১০ সেকেন্ড। মহাকাশের বুক থেকে ১৫ মিনিটের মতো সময় নিয়ে পৃথিবীর বুকে ঝাঁপ দেবে রাশি রাশি অগ্নিমালা। যাকে দেখতে লাগবে হুবহু উল্কাপাতের মতো। প্রকল্পটিকে সার্থক রূপ দিতে অস্ট্রেলিয়ার ৩১০ মাইল উর্দ্ধে পৃথিবীর কক্ষপথে এরমধ্যেই একটি উপগ্রহকে প্রতিস্থাপন করে ফেলেছেন বিজ্ঞানীরা। ২০১৯ সালে পরীক্ষামূলকভাবে হিরোশিমার আকাশে কৃত্রিম উপায়ে উল্কাপাতের মহাযজ্ঞের প্রস্তুতিও নিয়ে ফেলেছেন তাঁরা। পরীক্ষা সফল হলে ২০২০ টোকিও অলিম্পিকের আসরে প্রায় ৩০ লক্ষ মানুষ কৃত্রিম এই মহাজাগতিক দৃশ্য চাক্ষুষ করতে পারবেন।