জয়ললিতার মৃত্যুর পর তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নিলেন তাঁর বিশ্বস্ত বলে পরিচিত পনিরসেলভম। মঙ্গলবার তামিলনাড়ুর রাজ্যপাল বিদ্যাসাগর রাও তাঁকে শপথবাক্য পাঠ করান। এদিন শপথ নেওয়া শুরুর আগে জয়ললিতার ছবি পকেটে পুরে নেন পনিরসেলভম। শপথ নিতে নিতে ভেঙেও পড়েন। জয়ললিতার প্রতি তাঁর শ্রদ্ধা এদিন কার্যতই ফুটে ওঠে শপথগ্রহণের সময়ে।
নিজের ৩০ বছরের রাজনৈতিক জীবনে জয়ললিতা জয়রামকে নিজের জায়গা ধরে রাখতে কম লড়াই করতে হয়নি। কিন্তু জীবনে তিনি যে হারতে আসেননি তা তাঁর প্রথম জীবন থেকেই পরিস্কার।
পড়াশোনায় অসম্ভব মেধাবী জয়ললিতা দশম শ্রেণির পরীক্ষায় তামিলনাড়ুতে প্রথম স্থান অধিকার করেন। স্কলারশিপ নিয়ে পড়াশোনা চালিয়েছেন বর্ধিষ্ণু পরিবারের মেয়ে জয়ললিতার। মহীশূরে তাঁর পারিবারিক দুটি বাড়ি জয়া ও ললিতা নিবাস। সেই দুটি বাড়ির নামেই তাঁর নামকরণ হয়েছিল জয়ললিতা। সেই জয়ললিতা সিনেমা জগতে প্রবেশের পর নিজের প্রতিভার জোরে খুব দ্রুত সামনের সারিতে চলে আসেন। একসময়ে শুধু তামিল ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিই নয়, গোটা ভারতীয় ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির মধ্যে তিনি সর্বোচ্চ পারিশ্রমিক পাওয়া অভিনেত্রী হিসাবে সামনে উঠে আসেন।
১৯৮১-তে এমজিআরের হাত ধরেই রাজনীতির আঙিনায় পা দেওয়া। ১৯৮৭ সালে এমজিআরের মৃত্যুর পর তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী হতে চেয়েছিলেন তিনিই। কিন্তু সে সময়ে এমজিআরের স্ত্রী জানকী রামচন্দ্রণ সেই সুযোগ পান। কিন্তু পুরো ৫ বছর মুখ্যমন্ত্রী পদ ধরে রাখতে পারেননি তিনি। ১৯৯১-তে নির্বাচনে জিতে প্রথমবারের জন্য তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী হন ৪৩ বছরের আম্মা। যদিও পালিত ছেলের বিয়েতে বিপুল অর্থব্যয় করে সকলের চোখে পড়ে যান। হারতে হয় ১৯৯৬-এর বিধানসভা নির্বাচন।
হিসাব বহির্ভূত অর্থের কারণে তাঁকে জেল হাজতেও কাটাতে হয়। যদিও তারপরের নির্বাচনে ফের মুখ্যমন্ত্রী পদ ফেরত পান জয়ললিতা। তারপর থেকে আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি। ২০১৬ সালে মুখ্যমন্ত্রী পদে থাকাকালীনই শেষ হয়ে গেল গোটা ভারতীয় রাজনীতির এক উজ্জ্বল নক্ষত্রের উজ্জ্বলতম জীবন।