ভারতে সারমেয় ও শূকরের মিলনে তৈরি প্রাণি থেকেই এসেছে ঘোড়া ও জলহস্তী
ভারতীয় এক প্রাণির হাত ধরেই পৃথিবীর আলো দেখে ঘোড়া বা জলহস্তীর মত প্রাণি। সেক্ষেত্রে ঘোড়া বা জলহস্তীর জন্ম রহস্য লুকিয়ে আছে ভারতেই।
সাড়ে ৫ কোটি বছর আগে ভারতের গুজরাট অঞ্চলে ঘুরে বেড়াত এক ধরনের ভেড়ার আকৃতির জন্তু। গবেষকরা মনে করছেন সেই জন্তু তৈরি হয়েছিল সারমেয় ও শূকরের মিলনে। শঙ্কর প্রজাতির এই প্রাণিটিকে বিজ্ঞানীরা নাম দিয়েছেন ক্যাম্বেথেরিয়াম।
এই ক্যাম্বেথেরিয়ামের অস্তিত্বের খোঁজ গুজরাটে খনন চালিয়ে পেয়েছেন জনস হপকিনস বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা। সাড়ে ৫ কোটি বছর আগে ভারতের অধুনা গুজরাটের জমিতে ঘুরে বেড়াত ওই প্রাণিটি।
বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন ওই প্রাণিটি থেকেই পরবর্তীকালে জন্ম নেয় ঘোড়া। জন্ম নেয় জলহস্তী। সে অর্থে ঘোড়া হোক বা জলহস্তী, এদের পূর্বপুরুষের বাস ছিল এই ভারতেই।
ভারতের সেই প্রাণির থেকেই তৈরি হয় ঘোড়া বা জলহস্তী। জনস হপকিনস বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা জানাচ্ছেন ২০০১ সালে তাঁরা রাজস্থানে খনন শুরু করেন। কিন্তু তখন কিছু মাছের জীবাশ্ম ছাড়া কিছুই পাননি তাঁরা।
তাঁরা ফিরে গেলেও কাজ বন্ধ হয়নি। লিগনাইট খনিগুলিতে খনন কাজ চলতে থাকে। ভারতীয় গবেষকরা তা চালাতে থাকেন। এমন করেই ২০০৪ সালে গুজরাটের একটি খনিতে একটি ক্যাম্বেথেরিয়াম-এর জীবাশ্ম মেলে।
গবেষকরা জানান তখন ভারতের সঙ্গে এশিয়া মহাদেশের ভূখণ্ডের যোগ ছিলনা। পরে একটি দ্বীপ হিসাবে থাকা ভারত এশিয়ার মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে যুক্ত হয়। তখন গুজরাটের ওই অঞ্চল ছেড়ে এশিয়ার অন্য জায়গাতেও বিচরণ শুরু করে এই ক্যাম্বেথেরিয়াম।
সব মিলিয়ে পৃথিবীর বুকে যে ঘোড়া বা জলহস্তী দেখতে পাওয়া যায় তা কিন্তু তৈরি হয় ভারতেই। এই ক্যাম্বেথেরিয়ামের থেকেই ঘোড়া ও জলহস্তী পৃথিবীতে আসে।
গবেষকরা গত ১৫ বছরে ভারতে খনন চালিয়ে ৩৫০টির মত জীবাশ্ম উদ্ধার করেছেন। যার মধ্যে ক্যাম্বেথেরিয়ামও রয়েছে। এটা বড় খোঁজ বলেই মনে করা হচ্ছে।
ঘোড়া বা জলহস্তীর মত প্রাণির পৃথিবীতে আগমনে যে ভারতের নাম জড়িয়ে গেল এটাও বড় বিষয় বলে মনে করছেন অনেকে। ভারতেই এই ক্যাম্বেথেরিয়ামরা ১ কোটি বছর কাটিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা